সংসদে দাঁড়িয়ে কেরলের মুখ্যমন্ত্রীকে বিঁধেছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। আর বিকেলেই খানিকটা পাল্টা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে জবাব দিলেন কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন। আর এই একে অপরকে জবাব দেওয়া চলছে যখন ভয়াবহ ভূমিধসে ওয়েনাড়ে শোনা যাচ্ছে শুধুই হাহাকার। এখানে মৃতের সংখ্যা ২০০ ছাড়িয়ে গিয়েছে। নিখোঁজ ২৫০ জন। জোরকদমে চলছে উদ্ধারকাজ। সেনাবাহিনীর সঙ্গে দেহ উদ্ধারের কাজে হাত লাগিয়েছে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী। খোলা হয়েছে ৪৫টি ত্রাণ শিবির। এক হাজার জনকে নিরাপদ আশ্রয়ে রাখা হয়েছে।
আর এই ঘটনা নিয়ে কেরল সরকারকে কাঠগড়ায় তোলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তাঁর দাবি, আগে বারবার সতর্ক করা হলেও কেরল সরকার দুর্ঘটনা কবলিত এলাকা থেকে নাগরিকদের সরায়নি। অমিত শাহ বলেন, ‘গত ২৩ জুলাই কেরল সরকারকে সতর্ক করেছিল কেন্দ্র। আর ২৪ এবং ২৫ জুলাই আরও দুটি সতর্কবার্তা দেওয়া হয়। এমনকী ২৬ জুলাই আরও একবার প্রবল বৃষ্টিপাত ও ভূমিধসের সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তারপরও কেরল সরকার কোনও মানুষকেই নিরাপদে সরিয়ে নিয়ে যায়নি। যদি সেটা করা হতো তাহলে এত মানুষের প্রাণ যেত না।’ পাল্টা বিজয়ন বলেছেন, ‘এটা একে অপরকে দোষারোপ করার সময় নয়। কেন্দ্রের এভাবে দায় ঠেলার চেষ্টা করা উচিত নয়।’
আরও পড়ুন: ‘আমরা সমর্থন করব কেন?’ সপ্তাহব্যাপী পদযাত্রা নিয়ে বিজেপির উপর খাপ্পা কুমারস্বামী
ওয়েনাড়ে পৌঁছে মঙ্গলবার রাতেই পরিদর্শনে যান কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জর্জ কুরিয়ান। তাঁর বক্তব্য, ‘এই চরম বিপদের সময় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সবরকমভাবে কেরলের মানুষের পাশে আছেন। তিনি পরিস্থিতির দিকে সবসময় নজর রাখছেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের দু’টি কন্ট্রোলরুম থেকে ২৪ ঘণ্টা পরিস্থিতির পর্যালোচনা করা হচ্ছে। আর রাজ্যকে সম্ভাব্য সবরকমের সাহায্য দেওয়া হচ্ছে।’ সত্যিই কি সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছিল? এই প্রশ্ন এখন কেরল জুড়ে উঠতে শুরু করেছে। আর তখনই কেরলের মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট বললেন, ‘ওয়ানড়ে ধসের সম্ভাবনা নিয়ে কেন্দ্র আগাম কোনও সতর্কবার্তা পাঠায়নি। এখানে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা সংক্রান্ত কমলা সতর্কতা জারি করা হয়েছিল। মঙ্গলবার ভোরে ভূমিধসের পরে লাল সতর্কতা জারি করা হয়েছিল।’
তাহলে কি অমিত শাহ মিথ্যে বলছেন? এই প্রশ্ন এখন জোরালভাবে উঠছে। কারণ মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন অমিত শাহের আগাম সতর্কবার্তার দাবি অস্বীকার করেছেন। পিনারাই বিজয়নের কথায়, ‘এখন দোষারোপের সময় নয়। কেন্দ্রীয় সরকার দায় ঠেলার চেষ্টা করছে। আমাদের নজর রাখতে হবে আবহাওয়ার পরিবর্তনের দিকেও। আবহাওয়া যে বদলাচ্ছে সেটা কেন্দ্রীয় সরকারেরও বোঝা উচিত। আগে যে পরিমাণ বৃষ্টিপাত হতো এখন তার চেয়ে অনেক বেশি পরিমাণ বৃষ্টি হচ্ছে। দোষারোপ করে আসলে দায় ঠেলার চেষ্টা করছে কেন্দ্র।’