বাংলাদেশিদের আশ্রয় দেওয়া নিয়ে রাজ্য সরকার কোনও সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারে না। সেই বিষয় নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার কোনও এক্তিয়ারই নেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের। পুরো বিষয়টির উপরে ভারত সরকারের নজর আছে। কেন্দ্রীয় সরকারের সূত্র উদ্ধৃত করে সংবাদসংস্থা পিটিআইয়ের প্রতিবেদনে এমনই জানানো হল। ওই প্রতিবেদন অনুযায়ী, ওই সূত্র জানিয়েছেন যে ‘এগুলি এমন বিষয়, যেগুলি সামলায় কেন্দ্রীয় সরকার। এই বিষয়ে রাজ্য সরকারের তো কোনও এক্তিয়ারই নেই। এসব মন্তব্য (মমতা যে কথা বলেছেন) সম্পূর্ণভাবে ভুল।’
মমতার কোন কথায় চটেছে কেন্দ্রীয় সরকার?
মমতার যে মন্তব্যের প্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় সরকারের সূত্রের তরফে এরকম কড়া প্রতিক্রিয়া দেওয়া হয়েছে, সেই কথাটা রবিবার দুপুরে বলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী। কলকাতায় একুশে জুলাইয়ের সমাবেশের ফাঁকে তিনি জানান, বাংলাদেশে পড়ুয়াদের আন্দোলন নিয়ে যে যে ঘটনা ঘটছে, তা নিয়ে তিনি কোনও কথা বলবেন না। সেই বিষয়ে যা বলার, সেটা বলবেন নরেন্দ্র মোদী, এস জয়শংকররা।
আরও পড়ুন: Mamata gets a bit angry: 'এগুলো আমায় শেখাবে না, এসব গান আমার মুখস্থ', মঞ্চেই কাকে বকা দিলেন মমতা?
সেই রেশ ধরেই অবশ্য মমতা দাবি করেন যে যদি অসহায় মানুষরা পশ্চিমবঙ্গের দরজায় কড়া নাড়েন, তাহলে হাত গুটিয়ে বসে থাকবে না রাজ্য সরকার। তাঁদের সহায়তা প্রদান করা হবে। আর কেন তিনি সেই কাজটা করবেন, সেটার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে মমতা জানান যে শরণার্থীদের নিয়ে রাষ্ট্রসংঘের সনদ আছে।
কিন্তু মমতার সেই মন্তব্যে বিরক্তি প্রকাশ করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। সরাসরি কেন্দ্রের তরফে কোনও বিবৃতি জারি না করা হলেও মমতার কথায় যে মোদী, জয়শংকররা যে প্রসন্ন হননি, তা বুঝিয়ে দিয়েছেন কেন্দ্রীয় সরকারি ওই সূত্র। আর মমতার কথায় যে কোনও পাত্তা দেওয়া হচ্ছে না, সেটাও বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় ওটা, আগেই বলেছে দিল্লি
সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, বাংলাদেশ নিয়ে অহেতুক কোনও মন্তব্য করতে চাইছে না কেন্দ্রীয় সরকার। আপাতত নিজেদের নাগরিকদের সুরক্ষার উপরে জোর দিতে চাইছে দিল্লি। ইতিমধ্যে ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের তরফে স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, বাংলাদেশে পড়ুয়াদের যে বিক্ষোভ চলছে, তা নেহাতই সেই দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়। আর ভারত অন্য কোনও দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলায় না বলে বরাবরই জানিয়ে এসেছে দিল্লি।
বাংলাদেশ থেকে দেশে ফিরেছেন ৪,৫০০-র বেশি ভারতীয়
ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, বাংলাদেশে পড়ুয়াদের বিক্ষোভ শুরু হওয়ার পর থেকে দেশে ফিরে এসেছেন ৪,৫০০ জনের বেশি ভারতীয়। এসেছেন নেপালের ৫০০ জন পড়ুয়া। তাছাড়া ভুটানের ৩৮ জন এবং মলদ্বীপের একজনও ভারতে এসেছেন। স্থলসীমান্ত দিয়ে যাতে ভারতীয়রা দেশে ফিরতে পারেন, সেজন্য পর্যাপ্ত সুরক্ষারও বন্দোবস্ত করেছে ঢাকা।