কয়েকদিন আগেই এর নির্দেশের মাধ্যমে ২০১০ সালের পরে জারি হওয়া সমস্ত ওবিসি সার্টিফিকেট বাতিল করেছিল কলকাতা হাই কোর্ট। উচ্চ আদলতের সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল রাজ্য সরকার। সেই মামলার শুনানি হল আজ। আর সেখানে জোর ধাক্কা খেল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। এদিকে আজ ওবিসি শংসাপত্র মামলায় রাজ্য সরকারকে নোটিস জারি করেছে সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালত জানিয়েছে, এক সপ্তাহের মধ্যে গোটা বিষয়টির ব্যাখ্যা করে হলফনামা জমা দিতে বলা হয়েছে রাজ্য সরকারকে। এরপর আগামী সপ্তাহের শুক্রবার এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে সুপ্রিম কোর্টে। (আরও পড়ুন: চাপের মুখে বাংলাদেশ ত্যাগ করে আগরতলায় হাসিনার, ঢাকার রাস্তায় কয়েক লাখ মানুষ)
রিপোর্ট অনুযায়ী, কী ধরনের সমীক্ষা করে ওই ৭৭টি সম্প্রদায়কে ওবিসি তালিকাভুক্ত করা হয়েছিল, তা হলফনামা আকারে আদালতকে জানাতে বলা হয়েছে রাজ্য সরকারকে। প্রসঙ্গত, এর আগে হাই কোর্ট নিজের রায়তে জানিয়েছিল, ২০১০ সালের পরে যে সমস্ত ওবিসি সার্টিফিকেট ইস্যু করা হয়েছে, তা যথাযথ ভাবে আইন মেনে বানানো হয়নি। এরই সঙ্গে ২০১০ থেকে সব শ্রেণির ওবিসি সংরক্ষণও বাতিল করার নির্দেশ দেওয়া হয় হাই কোর্টের তরফ থেকে। কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী এবং বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা নিজেদের পর্যবেক্ষণে বলেন, রাজনৈতিক কারণে নির্দিষ্ট কিছু মুসলিম শ্রেণিকে 'ভোট ব্যাঙ্ক' বানিয়ে এই সংরক্ষণ দেওয়া হয়েছিল। ভোট প্রচারের সময় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দেওয়া প্রতিশ্রুতি পূরণের জন্য ব্যাকওয়ার্ড ক্লাস ওয়েলফেয়ার কমিশন তাড়াহুড়ো করে এই সংরক্ষণের সুপারিশ করেছিল।
এর আগে উচ্চ আদালত পর্যবেক্ষণে জানিয়েছিল, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে মুসলিমদের ৭৭টি শ্রেণিকে ওবিসি সংরক্ষণ দেওয়া গোটা মুসলিম সমাজ এবং গণতন্ত্রের জন্য অপমানের। আদালত জানিয়েছে, ব্যাকওয়ার্ড ক্লাস কমিশন আইন ১৯৯৩ অনুসারে ওবিসিদের তালিকা তৈরি করতে হবে। ২০১০ সালের আগে পর্যন্ত যারা ওবিসি সম্প্রদায়ভুক্ত ছিলেন শুধুমাত্র তাদেরই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা যাবে। এদিকে চাকরিতে বা অন্য কোনও জায়গায় ২০১০ সালের পর ইস্যু হওয়া ওবিসি শংসাপত্র আর গ্রাহ্য হবে না জানিয়েছিল কলকাতা হাই কোর্ট। তবে এই সময়ের মধ্যে জারি শংসাপত্রের মাধ্যমে যারা চাকরি পেয়েছেন তাদের চাকরি বহাল থাকবে বলে জানিয়েছে আদালত। উল্লেখ্য, হাই কোর্টের নির্দেশের ফলে প্রায় পাঁচ লাখ ওবিসি সার্টিফিকেট বাতিল হয়েছে রাজ্যে।