সংক্রমিত স্যালাইন ব্যবহারের জেরে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে প্রসূতির মৃত্যুর ঘটনায় তোলপাড় গোটা রাজ্য। স্বাস্থ্য ভবনের তরফে জানানো হয়েছে আগে থেকেই ওই সংস্থার একাধিক পণ্য ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা ছিল। এদিকে রিপোর্টে দাবি করা হয়, মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে প্রসূতির মৃত্যুর পরও একাধিক হাসপাতালে নিষিদ্ধ সংস্থার স্যালাইন ব্যবহারের ছবি প্রকাশ্যে এসেছে। প্রসঙ্গত, পশ্চিমবঙ্গ ফার্মাস্যুটিক্যাল নামে ওই সংস্থার স্যালাইন ব্যবহার করে নভেম্বর মাসে কর্নাটকে কয়েকজন প্রসূতির মৃত্যু হয়েছিল। এর পর ওই সংস্থার কারখানা পরিদর্শন করেন রাজ্যের স্বাস্থ্য আধিকারিকরা। এর পর ওই সংস্থার ১৪টি পণ্য তৈরিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করে তারা। সঙ্গে রাজ্যের হাসপাতালগুলি যাতে ওই সংস্থাকে কোনও পণ্যের বরাত দিতে না পারে সেজন্য সরকারি পোর্টালে পণ্যগুলিকে কালো তালিকাভুক্ত হয়েছিল। তাও সেই সংস্থার স্যালাইনেই এবার প্রসূতি মৃত্যু হল রাজ্যে। (আরও পড়ুন: এবার বাংলার আরও এক নয়া রুটে বসতে পারে রেললাইন, শুরু হল সমীক্ষা)
আরও পড়ুন: 'আমার স্ত্রী তো...', এবার '৯০ ঘণ্টা কাজ' বিতর্কে 'আদর মাখা' উক্তি পুনাওয়ালার
আরও পড়ুন: প্রসূতির প্রাণ কেরে নেওয়া স্যালাইনের জল গড়াল হাই কোর্টে, দেওয়া হল মামলার অনুমতি
জানা গিয়েছে, এই পশ্চিমবঙ্গ ফার্মাস্যুটিক্যালের ওষুধ বা স্যালাইন তৈরির গুণগত মান বজায় রাখার প্রক্রিয়ায় বিস্তর ত্রুটি পাওয়া গিয়েছিল কর্ণাটকের কাণ্ডের পরই। এই আবহে পশ্চিমবঙ্গ ফার্মাস্যুটিক্যালের সব কর্মকাণ্ডের বন্ধ রাখার জন্যে সেন্ট্রাল ড্রাগস স্ট্যান্ডার্ড কন্ট্রোল অর্গানাইজেশনের কাছে সুপারিশ করে কর্ণাটক। এদিকে আনন্দবাজার পত্রিকার রিপোর্ট অনুযায়ী, স্যালাইনের নমুনা পরীক্ষায় পাঠানো হলেও তার রিপোর্ট তৈরিতে খামতি রয়েছে। দাবি করা হয়েছে, স্টেট ড্রাগ কন্ট্রোল রিসার্চ ল্যাবরেটরিতে এখনও ওই স্যালাইনের কয়েকটি নমুনা পড়ে রয়েছে। যার রিপোর্ট আসেনি। এদিকে যে ‘রিঙ্গার্স ল্যাকটেট’ ব্যবহারের পর প্রসূতির মৃত্যু হয়েছে, তার ২৩৬ ব্যাচ নম্বরের নমুনা জুনে পাঠানো হলেও তার রিপোর্ট এখনও আসেনি। এদিকে রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০২৩ সালের মে মাস নাগাদ কর্নাটকের চারটি জেলায় প্রায় সাড়ে ৩২ হাজার ‘রিঙ্গার্স ল্যাকটেট’ সরবরাহ করছিল ‘পশ্চিমবঙ্গ ফার্মাসিউটিক্যাল’। সেই স্যালাইনের মান নিয়ে প্রায় ২৭টি অভিযোগ পেয়েছিল কর্নাটকের স্বাস্থ্য দফতর। (আরও পড়ুন: সীমান্তে কাঁটাতারে এবার বাধা এপারের গ্রামবাসীরাই, BSF-এর সঙ্গে কথা MLA-র)
আরও পড়ুন: কেরলে ৬ বছর ধরে ৬০ জন ধর্ষণ করেছিল নাবালিকা ক্রীড়াবিদকে! পুলিশের জালে ২৮
আরও পড়ুন: চুপি চুপি থাকত… কারও সাথে তেমন কথা বলত না! সোনারপুর থেকে গ্রেফতার ৫ বাংলাদেশি
উল্লেখ্য, গত বুধবার সন্তানের জন্ম দেওয়ার পর মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে স্যালাইন দেওয়া হয়েছিল চার প্রসূতিকে। তাঁদের মধ্যে একজনের মৃত্যু হয়। এবং তিনজন গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁদের গতকাল গ্রিন করিডর করে কলকাতার এসএসকেএম হাসরাতালে নিয়ে আসা হয়। রিপোর্ট অনুযায়ী, মেদিনীপুর থেকে এসএসকেএমে আসা দু’জন প্রসূতি রয়েছেন ক্রিটিক্যাল কেয়ার, একজন আইটিইউয়ে চিকিৎসাধীন। সিসিইউ-তে চিকিৎসাধীন দুই প্রসূতির মধ্যে একজন অতি সঙ্কটজনক। রোগীদের দেহে সংক্রমণের মাত্রা বুঝতে নানান পরীক্ষা চালানো হচ্ছে। এছাড়া হিমোগ্লোবিন, আরবিসি-সহ রক্তের একাধিক পরীক্ষা করা হয়েছে। এদিকে রোগীদের চিকিৎসা নিয়ে আলোচনা করতে আজ পাঁচ সদস্যের মেডিক্যাল বোর্ড বৈঠকে বসবে। এই বোর্ডে আছেন সিসিইউ, অ্যানাস্থেসিস্ট, নেফ্রোলজি, স্ত্রীরোগ, মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসকেরা।