আবারও কি পরীক্ষা নেওয়া যায়? স্কুল সার্ভিস কমিশনের (এসএসসি) নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় এমনই প্রশ্ন করল সুপ্রিম কোর্ট। আর তাতে সায় দেন মামলাকারীদের আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য। সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্না এবং বিচারপতি সঞ্জয় কুমারের ডিভিশন বেঞ্চের প্রশ্নের প্রেক্ষিতে বিকাশ জানান, নতুন করে পরীক্ষার ক্ষেত্রে আপত্তি নেই। নতুন করে নিয়োগ পরীক্ষা নেওয়া যেতে পারে বলে জানিয়েছেন বিকাশ। সেইসঙ্গে তিনি দাবি করেছেন, ২০১৬ সালে এসএসসি নিয়োগ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এমন অনেকে চাকরি পেয়েছিলেন, যাঁরা আবেদনই করেননি। তাই নতুন করে পরীক্ষা নেওয়া হলে সেইসব প্রার্থীদেরই নেওয়া হোক, যাঁরা নিয়োগ প্রক্রিয়ার জন্য আবেদন করেছিলেন।
এতদিন পরে নতুন করে পরীক্ষা? প্রশ্ন শিক্ষক মহলের
তবে নতুন করে পরীক্ষা নেওয়ার বিষয়ে সংশয় প্রকাশ করেছে সংশ্লিষ্ট মহল। বিষয়টি নিয়ে শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক কিংকর অধিকারী বলেন, ‘২০১৬ সালের এসএসসি নিয়োগ প্রক্রিয়ার পুরো প্যানেল বাতিল করে পুনরায় পরীক্ষার দাবিতে জোর সওয়াল করা হয়েছে। নয় বছর পরে আবার পরীক্ষা? যথাযথ তদন্তের মাধ্যমে পৃথকীকরণ না হলে যোগ্যদের প্রতি অবিচার হবে। কোনওভাবে তা মানা যায় না। দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত এবং তদন্তের ক্ষেত্রে যাঁরা অসহযোগিতা করছেন, তাঁদের কঠোর শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।’
পুরো প্যানেল কেন বাতিল করা উচিত? যুক্তি বিকাশের
আবার কেন পুরো প্যানেল বাতিল করা প্রয়োজন, সেটার ব্যাখ্যা শীর্ষ আদালতে দিয়েছেন বিকাশরা। সোমবার শীর্ষ আদালতে এসএসসি মামলার শুনানির সময় মামলাকারীদের আইনজীবী বিকাশ দাবি করেন, ২০১৬ সালের এসএসসির সম্পূর্ণ নিয়োগ প্রক্রিয়াকে ঘিরে অসংখ্য প্রশ্ন আছে। উঠেছে অনেক প্রশ্ন। পুরো নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়েই বিতর্ক আছে। সেই পরিস্থিতিতে পুরো প্যানেল বাতিল করে দেওয়ার পক্ষে সওয়াল করেন বিকাশ।
তারইমধ্যে শীর্ষ আদালত জানতে চায় যে বৈধ থেকে অবৈধ প্রার্থীদের বাছাই করা কি সম্ভব হবে? তাতে মামলাকারীদের আইনজীবী জানান, পুরো নিয়োগ প্রক্রিয়ায় এতটাই গোলমেলে যে সেটা সম্ভব নয়। একটি বিষয় বাছাই করে দেখতে গেলে অপরটি নিয়ে প্রশ্ন উঠে যাচ্ছে। যদিও রাজ্য সরকার এবং কমিশন আগেই সুপ্রিম কোর্টে জানিয়েছে যে বৈধ এবং অবৈধ প্রার্থীদের বাছাই করা সম্ভব।
এসএসসি মামলার ইতিবৃত্ত
১) ২০২৪ সালের ২২ এপ্রিল কলকাতা হাইকোর্ট পুরো নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল করে দেয়। যে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ২৫,৭৫৩ জনের প্রার্থীর চাকরি বাতিল হয়ে গিয়েছিল।
২) হাইকোর্টের বিচারপতি দেবাংশু বসাক এবং বিচারপতি মহম্মদ শাব্বর রশিদির ডিভিশন বেঞ্চের সেই নির্দেশের পরে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেছে রাজ্য সরকার। তা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে একাধিকবার শুনানি হয়েছে।
৩) সুপ্রিম কোর্টে পরবর্তী শুনানি হবে আগামী ১০ ফেব্রুয়ারি।