প্রয়াত হলেন পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠী। রবিবার ভোর পাঁচটা নাগাদ উত্তরপ্রদেশের প্রয়াগরাজের বাসভবনে শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। যিনি উত্তরপ্রদেশ বিধানসভার স্পিকারও ছিলেন। তাঁর প্রয়াণে শোকপ্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
‘হিন্দুস্তান টাইমস’ গ্রুপের ‘লাইভ হিন্দুস্তান’-র প্রতিবেদন অনুযায়ী, মাসখানেক ধরে অসুস্থ ছিলেন পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন রাজ্যপাল। গত বছরের ৮ ডিসেম্বর পা পিছলে বাথরুমে পড়ে গিয়েছিলেন। তার জেরে হাত ভেঙে গিয়েছিল। তারপর থেকেই শরীর ভালো ছিল বিজেপি নেতার। অত্যন্ত দুর্বল হয়ে পড়েছিলেন। সেইসঙ্গে শরীরে অক্সিজেনের মাত্রাও কমে যাচ্ছিল। সেই পরিস্থিতিতে ৩০ ডিসেম্বর তাঁকে প্রয়াগরাজের সিভিল লাইনসের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভরতি করা হয়েছিল।
‘লাইভ হিন্দুস্তান’-র প্রতিবেদন অনুযায়ী, কয়েকদিন পর হাসপাতাল ছাড়া পেয়েছিলেন পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন রাজ্যপাল। কিন্তু ঠিকমতো খাওয়া-দাওয়া করছিলেন না। ক্রমশ অসুস্থ হয়ে পড়ছিলেন। রবিবার ভোর পাঁচটা নাগাদ প্রয়াগরাজের বাসভবনে শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন রাজ্যপাল। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৯। সূত্রের খবর, আজ সন্ধ্যায় প্রয়াগরাজে তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে।
আরও পড়ুন: Uttar Pradesh: যৌতুক হিসেবে ফরচুনার গাড়ি চেয়েছিলেন লেকচারার পাত্র, না পেয়ে বিয়ে বাতিল করলেন
পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন রাজ্যপালের প্রয়াণে শোকপ্রকাশ করেছেন মোদী। 'নিজের কাজ ও বিজ্ঞতার জন্য শ্রী কেশরীনাথ ত্রিপাঠীকে অত্যন্ত সম্মান করা হত। সাংবিধানিক বিষয়ে উনি অত্যন্ত দক্ষ ছিলেন। উত্তরপ্রদেশে বিজেপিকে শক্তিশালী করে তোলার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন এবং রাজ্যের উন্নয়নে কাজ করেছিলেন। তাঁর প্রয়াণে শোকস্তব্ধ। তাঁর পরিবার এবং অনুগামীদের সমবেদনা জানাচ্ছি। ওম শান্তি।'
কেশরীনাথ ত্রিপাঠী - একনজরে
১৯৩৪ সালের ১০ নভেম্বর জন্মগ্রহণ করেছিলেন কেশরীনাথ ত্রিপাঠী। সাত ভাইবোনের মধ্যে সবথেকে ছোটো ছিলেন। প্রাথমিকভাবে সেন্ট্রাল হিন্দু স্কুলে পড়াশোনা শুরু করেছিলেন। তারপর ১৯৪৯ সালে আগরওয়াল ইন্টার কলেজ থেকে হাইস্কুল এবং ১৯৫৩ সালে এলাহাবাদ (বর্তমানে প্রয়াগরাজ) বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক স্তরের পড়াশোনা সম্পূর্ণ করেছিলেন। এলাহাবাদ বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই এলএলবি করেছিলেন। এলাহাবাদ হাইকোর্টে প্র্যাকটিসও করতেন। যিনি মীরাট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডি.লিট পেয়েছিলেন। লিখেছিলেন বইও।
ছ'বার উত্তরপ্রদেশের বিধায়ক নির্বাচিত হয়েছিলেন কেশরীনাথ ত্রিপাঠী। ১৯৭৭ সাল থেকে ১৯৭৯ সাল পর্যন্ত জনতা দলের শাসনকালে উত্তরপ্রদেশের ক্যাবিনেট মন্ত্রী ছিলেন। উত্তরপ্রদেশ বিধানসভার স্পিকারও ছিলেন কেশরীনাথ। তারপর ২০১৪ সালে পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেছিলেন। পশ্চিমবঙ্গের ২০ তম রাজ্যপাল ছিলেন। ২০১৯ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেছিলেন। সেইসময় বিহার, মেঘালয় ও মিজোরামের রাজ্যপালেরও দায়িত্ব সামলেছিলেন।