অত্যন্ত উদ্বেগের ঘটনা। গত ২৩ ডিসেম্বর থেকে রাজস্থানে কুয়োতে আটকে রয়েছে তিন বছরের এক কন্যা। তার মা ঢোলি দেবী কর্তৃপক্ষের কাছে তাঁর মেয়েকে উদ্ধারের আবেদন জানিয়েছেন।
বাবার জমিতে খেলতে গিয়ে পড়ে গিয়ে পড়ে গত ২৩ ডিসেম্বর থেকে রাজস্থানের কোটপুতলি জেলার সারুন্দ এলাকায় ১৫০ ফুট গভীর একটি বোরওয়েলে আটকে পড়ে তিন বছরের শিশু চেতনা।
এবার শিশুর মা সংবাদসংস্থা পিটিআইকে বলেন, 'ছ'দিন হয়ে গেল... আমার মেয়ে ক্ষুধার্ত এবং তৃষ্ণার্ত। মেয়েটা যদি কালেক্টর ম্যাডামের বাচ্চা হতো ? তিনি কি তাকে এতদিন এভাবে থাকতে দিতেন? দয়া করে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আমার মেয়েকে বের করে আনুন। শুক্রবার এক দফা বৃষ্টির কারণে কুয়োয় উদ্ধারকারীদের প্রবেশে সহায়তার জন্য খনন করা সুড়ঙ্গটিতে বিঘ্ন ঘটায় উদ্ধারকাজ বন্ধ রাখতে হয়েছিল। শিশুটিকে সরানোর প্রচেষ্টা প্রাথমিকভাবে একটি দড়ি সংযুক্ত লোহার রিং ব্যবহার করে ব্যর্থ হয়।
এনডিআরএফ এবং এসডিআরএফ দলও উদ্ধার অভিযানের জন্য ঘটনাস্থলে রয়েছে, চিকিৎসকদের একটি দল এবং একটি অ্যাম্বুলেন্স ও রয়েছে। যেহেতু শিশুটি ছয় দিন ধরে খাবার বা জল ছাড়াই রয়েছে।
বুধবার একটি পাইলিং মেশিন এনে সমান্তরাল গর্ত খোঁড়া হয়। উদ্ধারকাজে সহায়তার জন্য সুড়ঙ্গ খনন করতে গর্তে প্রবেশ করেছে দুই সদস্যের একটি দল।
জেলাশাসক কল্পনা আগরওয়াল জানিয়েছেন, বোরওয়েলের কাছে সমান্তরাল গর্ত খুঁড়ে এল আকৃতির সুড়ঙ্গ দিয়ে চেতনায় পৌঁছনোর চেষ্টা করা হচ্ছে। গর্তে নেমে আসা এনডিআরএফের দুই জওয়ান ম্যানুয়াল ড্রিলিং করছেন। আমরা তাদের ক্যামেরার সামনে দেখছি। নিচ থেকে তারা যে যন্ত্রপাতি দাবি করছে তা তাদের কাছে পাঠানো হচ্ছে।
তবে এবারই প্রথম নয়। এর আগে ২০২২ সালের মে মাসে প্রায় ১০০ ফুট গভীর কুয়োয় পড়ে গিয়েছিল ৬ বছর বয়সি এক শিশু। পঞ্জাবের হোসিয়ারপুর এলাকার ঘটনা ছিল সেবার। এনডিআরএফ ও ভারতীয় সেনা এলাকায় গিয়েছিল।
স্থানীয় সূত্রে খবর, ওই কুয়োর সমান্তরালে অপর একটি সুরঙ্গ খুঁড়ে শিশুটিকে বের করার চেষ্টা হয়েছিল।শিশুটিকে অক্সিজেন সরবরাহের কাজও হয়েছিল।
কিন্তু কীভাবে এই ঘটনা হয়েছিল? স্থানীয় সূত্রে খবর, ওই শিশু মাঠে খেলছিল। তখনই কয়েকটি কুকুর ওই শিশুটিকে তাড়া করে। শিশুটি আতঙ্কে ছোটাছুটি করা শুরু করে দেয়। এদিকে ওই কুয়োটির উপর কয়েকটি বস্তা চাপা দেওয়া ছিল। শিশুটি ওই কুয়োর ওপর যেতেই বস্তাগুলি নীচে পড়ে যায়। আর তার সঙ্গে শিশুটিও পড়ে যায় গভীর কূপের মধ্যে।
ডেপুটি কমিশনার সন্দীপ হাঁস হিন্দুস্তান টাইমসকে জানিয়েছিলেন, আর্মি ইঞ্জিনিয়ারদেরও ডাকা হয়েছে। ক্যামেরাতে দেখা যাচ্ছে ওই শিশুটি অচৈতন্য় অবস্থায় পড়ে রয়েছে। মেডিকেল টিম আপৎকালীন পরিস্থিতির জন্য তৈরি রয়েছে।
পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত মানও এব্যাপারে খোঁজখবর রেখেছিলেন। তিনি জানিয়েছিলেন, জেলা প্রশাসনের সঙ্গে সবসময় যোগাযোগ রাখছি। তিনি টুইট করে লিখেছিলেন, হোসিয়ারপুরে হৃত্বিক বলে ৬ বছরের ওই শিশুটি বোরওয়েলের মধ্যে পড়ে গিয়েছে। আমি প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি।