লাদাখের প্রত্যন্ত গালওয়ান উপত্যকায় ভারতীয় ও চিনা সৈন্যদের সংঘর্ষের দুই বছর পর আজও দুটি দেশ প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা (এলএসি) বরাবর বিপুল সংখ্যক জওয়ান মোতায়েন রেখেছে। সীমান্ত বরাবর উত্তেজনা কমানোর জন্য এখনও আলোচনা করছে দুই দেশ। তবে দীর্ঘ ২৫ মাসের অচলাবস্থা স্বাভাবিক হওয়ার কোনও ইঙ্গিতের দেখা মিলছে না। যদিও বেজিং এবং নয়াদিল্লি উভয়ই একমত যে সংলাপের মাধ্যমেই এই সংঘাতপূর্ণ পরিস্থিতি স্বাভাবিক করা সম্ভব।
এখনও পর্যন্ত ভারত ও চিনা সেনা ১৫ দফায় বৈঠকে বসেছে। এই বৈঠকগুলির ১৪টি হয়েছে গালওয়ান সংঘর্ষের পর। এই বৈঠকগুলির ফলে কোথাও কোথাও শান্তি ফিরেছে, তবে সার্বিক ভাবে সেনা প্রত্যাহার নিয়ে এখনও কোনও সমাধান সূত্র বেরিয়ে আসেনি। এরই মাঝে খবর প্রকাশ্যে আসে যে চিন প্যাংগং হ্রদ সংলগ্ন ফিঙ্গার ৮-এর থেকে মাত্র ১৬ কিলোমিটা দূরে একটি বড় সেতু বানাচ্ছে। এই আবহে ভারতীয় সেনা নিজেদের অবস্থান আরও পোক্ত করতে চিনের সমান সেনা মোতায়েন রেখেছে সীমান্তে।
এই পরিস্থিতিতে গত ৩১ মে সীমান্ত বিষয়ক পরামর্শ ও সমন্বয়ের জন্য ওয়ার্কিং মেকানিজমের ২৪ তম বৈঠক করে ভারত ও চিন। বৈঠকে ভারতীয় পক্ষের নেতৃত্বে ছিলেন অতিরিক্ত সচিব (পূর্ব এশিয়া) নবীন শ্রীবাস্তব এবং চিনা পক্ষের নেতৃত্বে ছিলেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সীমানা ও মহাসাগর বিষয়ক বিভাগের মহাপরিচালক হং লিয়াং। তবে সেই বৈঠকেও কোনও বরফ গলার ইঙ্গিত মেলেনি।
লাদাখ প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখার দুই দিকেই এখন দুই দেশের সমসংখ্যক সেনা মোতায়েন রয়েছে। চিনের আর্মরড এবং রকেট রেজিমেন্টগুলি মোতায়েন রয়েছে রুডগ ঘাঁটিতে, প্যাংগং সোর দক্ষিণে এবং অশান্ত জিনজিয়াং সামরিক অঞ্চলের জিয়াদুল্লাহতে। পিএলএ এয়ার ফোর্স ডেমচোক এবং জিনজিয়াংয়ের হোতান এয়ারবেসে তাদের যুদ্ধবিমান এবং বোমারু বিমান মোতায়েন করে রেখেছে। এই আবহে আলোচনার মাধ্যমে চিন কোনও সমাধান সূত্র বের করতে আদৌ ইচ্ছুক কি না, তা নিয়েই সংশয় দেখা দিয়েছে বিশ্লেষকদের মধ্যে।