শর্ট পজিশন এমন একটি কৌশল, যেখন একজন বিনিয়োগকারী আগে থেকেই অনুমান করে ফেলেন যে কোনও নির্দিষ্ট স্টকের দাম কমবে। আর সেটা কাজে লাগিয়েই মুনাফা করেন। বিশ্লেষণ কাজে লাগিয়ে এই ধরনের বিনিয়োগকারীরা আন্দাজ করেন। বুঝে যান যে, সম্ভবত আগামী কয়েক দিন বা সপ্তাহের মধ্যেই সেই শেয়ারের দামে পতন হতে পারে। আরও পড়ুন: 'জাতীয়তাবাদের আড়ালে কারচুপি….', তোপ আদানিদের, ‘আপার সার্কিট’ ছুঁল এই ২ শেয়ার
এরপর বিনিয়োগকারী কোনও ইনভেস্টমেন্ট ফার্মের থেকে সেই শেয়ারগুলি ধার করেন- অন্য কাউকে তা বিক্রি করার জন্য। অর্থাত্ শেয়ার না কিনেই বিক্রি!
এই ধরনের ইনভেস্টমেন্ট ফার্ম বা বিনিয়োগ সংস্থার হাতে সাধারণত অনেক পরিমাণে স্টকের ভাণ্ডার থাকে। অথবা অনেক সময়ে তারা ঋণ দেওয়ার জন্য অন্য ফার্ম থেকেও স্টক ধার করে।
অর্থাত্ বিনিয়োগকারী স্টক ফেরত দেবেন। কিন্তু তার জন্য কিছুটা সময় পাবেন তাঁরা।
এবার ধরুন কোনও শেয়ার ধার নিলেন যখন, তার দাম ছিল ১০০ টাকা করে। আপনি জানেন সেই কোম্পানির অবস্থা ভাল নয়। আগামী ২ সপ্তাহে শেয়ার দর অনেক কমতে পারে। সেই আন্দাজ/হিসাবের ভিত্তিতে আপনি শর্ট পজিশনে শেয়ার নিলেন।
২ সপ্তাহ পর সত্যিই সেই শেয়ারের দাম কমে ৬০ টাকা হয়ে গেল। এবার সেই শেয়ার যখন বেচা হবে, আপনি ৪০ টাকা লাভ করবেন। একটা উদাহরণ দিয়ে বোঝানো যাক।
ধরুন আপনাদের পাড়ায় কারও একটি জমি রয়েছে। ১৫ লক্ষ টাকা দাম। আপনি আন্দাজ করলেন, ‘এই জমির দাম মোটেও এত বেশি নয়। ভ্যালুয়েশন করালেই কমবে।’ সেই বুঝে আপনি জমি মালিককে বললেন ১ সপ্তাহ সময় দিতে।
এরপর কোনও ক্রেতা খুঁজে তাঁকে জমি দেখালেন। বললেন আপনি ১৫ লক্ষ টাকায় একটি জমি বেচবেন। কিন্তু এক সপ্তাহ পরে সেই জমি হস্তান্তর করবেন। আপাতত ১৫ লক্ষ টাকার সেই জমির দাম হিসাবে ১০ লক্ষ টাকা দিলেই হবে। ডেলিভারির দিন, তখন ৫ লক্ষ দিলেই হবে। তিনি চুক্তিতে রাজি হয়ে গেলেন।
এক সপ্তাহ পর দেখা গেল জমির আসল ভ্যালুয়েশন সত্যিই কম, ১০ লক্ষ টাকা। এদিকে আপনার কাছে তো ওই ক্রেতার দেওয়া ১০ লক্ষ টাকা আছেই। আপনি সেটা দিয়েই জমি মালিকের থেকে জমিটা কিনে নিলেন। এদিকে সেই অতিরিক্ত ৫ লক্ষ টাকাও ক্রেতার থেকে পেয়ে গেলেন। সেটি পেতে তাঁর হাতে জমিটি তুলে দিলেন। অর্থাত্ আপনার মুনাফা হল ৫ লক্ষ টাকা। আপনার পকেট থেকে টাকা বিনিয়োগ না করেই মুনাফা করলেন।
আদানি নিয়ে রিপোর্ট
চলতি জানুয়ারি মাসে হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ একটি রিপোর্ট প্রকাশ করে। তাতে তারা জানায়, আদানি গ্রুপে শর্ট পজিশনে বাজি ধরেছে তারা। তাদের দাবি, আদানি গোষ্ঠীর ঘাড়ে বিপুল পরিমাণে ঋণের বোঝা রয়েছে। এদিকে অ্যাকাউন্টিং ঠিক নেই বলেও উল্লেখ করেছে তারা। এর পাশাপাশি তারা দাবি করেছে, আদানি গ্রুপ 'কয়েক দশক ধরেই নির্লজ্জের মতো স্টক ম্যানিপুলেশন এবং অ্যাকাউন্টিং জালিয়াতিতে জড়িত।'
রিপোর্ট প্রকাশের প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই আদানি গ্রুপের কোম্পানিগুলির শেয়ারের দামে বিশাল পতন হয়। আদানি গোষ্ঠী যদিও এই রিপোর্ট 'ভিত্তিহীন এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত' বলে উল্লেখ করেছে। এদিকে হিন্ডেনবার্গ তার প্রেক্ষিতে পাল্টা চ্যালেঞ্জ করেছে। তারা এক বিবৃতিতে বলেছে, 'রিপোর্ট যদি সত্যিই ভুল হয়, আদানি গ্রুপ আমাদের বিরুদ্ধে মামলা করে আদালতে তা প্রমাণ করুক।' আরও পড়ুন: '৩৬ ঘণ্টা তো হয়ে গেল', আদানি গ্রুপকে খোঁচা মার্কিন সংস্থার, চ্যালেঞ্জ মামলা করার
এই খবরটি আপনি পড়তে পারেন HT App থেকেও। এবার HT App বাংলায়। HT App ডাউনলোড করার লিঙ্ক https://htipad.onelink.me/277p/p7me4aup