ভারতের উত্তর প্রদেশের হাথরাস জেলায় একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানে পদদলিত হয়ে অন্তত ১০৭ জন মারা গিয়েছেন। ঘটনাটি ঘটেছে রতি ভানপুর গ্রামে, যেখানে ভোলে বাবা নামে এক ধর্মগুরু একটি সৎসঙ্গের আয়োজন করেছিলেন। অত্যন্ত মর্মান্তিক ঘটনা।
যারা মৃত বা অচেতন তাদের ট্রাক এবং অন্যান্য যানবাহনে চাপিয়ে সিকান্দারা রাও ট্রমা সেন্টারে নিয়ে আসা হয়েছিল।
এক প্রত্যক্ষদর্শী সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে জানিয়েছেন, সৎসঙ্গের পর ভক্তরা যখন অনুষ্ঠানস্থল ছাড়তে শুরু করেন, তখনই পদপিষ্ট হয়ে যান তিনি।
সিকান্দ্রা রাও থানার এসএইচও আশিস কুমার জানিয়েছেন, অতিরিক্ত ভিড়ের কারণে পদপিষ্ট হওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
উত্তরপ্রদেশ সরকার জানিয়েছে, অনুষ্ঠানের আয়োজকদের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হবে।
এক বার্তায় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, 'হাথরাস জেলায় এই দুর্ভাগ্যজনক দুর্ঘটনায় প্রাণহানির ঘটনা অত্যন্ত দুঃখজনক ও হৃদয়বিদারক। উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন।
আলিগড় রেঞ্জের ইন্সপেক্টর জেনারেল শলভ মাথুর জানিয়েছেন, ভোলে বাবা নামে এক ধর্মপ্রচারক এই সৎসঙ্গের আয়োজন করেছিলেন।
ওই আধিকারিক জানান, একটি বন্ধ তাঁবুর ভিতরে এই বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছিল। তিনি বলেছিলেন যে ভক্তদের দমবন্ধ হওয়ার অবস্থা। শেষ হতেই তাঁবু থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করেছিলেন তাঁরা। তখনই পদপিষ্ট হওয়ার ঘটনা ।
'এটা ছিল ধর্ম প্রচারক ভোলে বাবার সৎসঙ্গ সভা। মঙ্গলবার বিকেলে এটাহ ও হাথরস জেলার সীমান্তবর্তী ওই স্থানে জমায়েত হওয়ার জন্য সাময়িক অনুমতি দেওয়া হয়। এটি তাঁবুর একটি বদ্ধ ঘেরা জায়গা ছিল এবং প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে দমবন্ধ হয়ে অস্বস্তি হয়েছিল এবং যারা জড়ো হয়েছিল তারা এখানে সেখানে দৌড়াদৌড়ি করেছিল, যার ফলে পদপিষ্ট হয়।
এটাহ জেলা হাসপাতালে ভর্তি কিশোরী জ্যোতি জানান, ভক্তরা তড়িঘড়ি করে চত্বর ছেড়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে পদপিষ্ট হয়ে পড়েন।
সে জানিয়েছে, 'ঘটনাস্থলে প্রচুর লোক জড়ো হয়েছিল। সৎসঙ্গ শেষ হতেই সকলে তাড়াহুড়ো করে এনক্লোজার ছেড়ে চলে গেল। বেরোনোর কোনও উপায় ছিল না এবং প্রত্যেকে একে অপরের উপর পড়ে গিয়েছিল এবং পদপিষ্ট হয়েছিল। আমি যখন বের হওয়ার চেষ্টা করি, তখন বাইরে মোটরসাইকেল দাঁড়িয়ে থাকায় বের হওয়ার পথ বন্ধ হয়ে যায়।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু এই ঘটনায় শোক প্রকাশ করেছেন।
এদিকে, সমাজবাদী পার্টির প্রধান অখিলেশ যাদব বিজেপি নেতৃত্বাধীন উত্তরপ্রদেশ সরকারের সমালোচনা করেছেন।
তিনি বলেন, 'ঘটনার খবর পাওয়ার সময় আমরা লোকসভার ভিতরে ছিলাম। প্রশ্ন উঠছে, এত মানুষ মারা গেছে... সরকার কী করছিল? এত বড় আকারে জমায়েত হওয়া মানুষের সুরক্ষা ও নিরাপত্তার দায়িত্ব সরকারের। সরকারের উচিত নিহতদের পরিবারকে সহায়তা করা। আমরা আশাবাদী, সরকার আহতদের সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করবে।
পিটিআই, এএনআই সূত্রে খবর