মাত্র ৮দিনের জন্য মহাকাশে গিয়েছিলেন সুনীতা উইলিয়ামস। কিন্তু তারপর বহুদিন কেটে যাওয়ার পরেও তিনি এখনও মহাকাশেই। তাঁর সহযাত্রী ব্যারি বুচও রয়েছে তার সঙ্গে। তবে ঠিক কবে তিনি ফিরবেন তা নিয়ে এখনও সংশয়টা থেকেই গিয়েছে।
কিন্তু কেন তারা ফিরতে পারছেন না? মূলত যে মহাকাশযানে তাঁরা গিয়েছিলেন সেই বোয়িং স্টারলাইনারে বড়সর ত্রুটি ধরা পড়ে। তারপরই তারা আর ফিরতে পারছেন না পৃথিবীতে। হিলিয়াম লিকেজের সমস্যাটাও ভাবাচ্ছে।
তবে সর্বশেষ আপডেটে নাসা জানিয়েছে আর কয়েকটি দিন অনিশ্চয়তার মধ্য়ে কাটাতে হবে। নাসা তাদের বিবৃতিতে জানিয়েছে, নাসার সিদ্ধান্ত স্টারলাইনারেই তারা ফেরত আসবেন নাকি স্পেস এক্স ড্রাগনে তারা আসবেন। সেটা ২৪ অগস্টের আগে বলা সম্ভব নয়। খবর এনডিটিভি ওয়ার্ল্ড সূত্রে।
তবে সম্প্রতি একাধিক রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছিল সব থেকে উদ্বেগের বিষয় হল মহাকাশযানের সব কিছু যদি ঠিকঠাকভাবে কাজ না করে সেক্ষেত্রে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের প্রবেশের সময়ই জোর ধাক্কা খেতে পারে। আর সেই ধাক্কার তীব্রতা এতটাই হতে পারে যে মহাকাশযানটি জ্বলন্ত অবস্থাতেই ফের ফিরে যাবে মহাকাশে। কার্যত বিলীন হবে সেখানেই। আর সেই সময় মহাকাশযানে যে অক্সিজেন থাকবে তাতে মাত্র ৯৬ ঘণ্টা চালানো সম্ভব।
নাসার মহাকাশচারী সুনীতা উইলিয়ামস ও বুচ ইউলমোর। ২০২৪ সালের ৫ জুন তাঁরা মহাকাশে যাত্রা শুরু করেছিলেন। কথা ছিল ৮দিনের মধ্য়েই তাঁরা ফিরে আসবেন। এদিকে নাসা তাদের ফিরিয়ে আনার জন্য সবরকম প্রচেষ্টা জারি রেখেছে। কিন্তু ফেরার মহাকাশযানে নানা ত্রুটি ধরা পড়ার জেরেই সমস্যা ক্রমশ বাড়তে থাকে।
তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, যদি ফেরার মহাকাশযানটি ঠিকঠাকভাবে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করতে না পারে তাহলে সেটা ফের ফিরে যাবে মহাকাশে। আর তখন সেই মহাকাশযানে থাকবে মাত্র ৯৬ ঘণ্টার অক্সিজেন।মার্কিন মিলিটারি স্পেস সিস্টেমের প্রাক্তন কমান্ডার রুডি রিডোলফি এনিয়ে মতামত দিয়েছেন।
এমনকী পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের সঙ্গে সংঘর্ষে প্রচন্ড তাপ উৎপন্ন হতে পারে। জ্বলে যেতে পারে গোটা মহাকাশযান। মহাশূন্যে বিলীন হয়ে যেতে পারেন মহাকাশচারীরা।
প্রসঙ্গত পরীক্ষক পাইলট বুচ উইলমোর এবং সুনিতা উইলিয়ামসের স্পেস ল্যাবে প্রায় এক সপ্তাহ থাকার কথা ছিল। সব কাজ সেরে জুনের মাঝামাঝি সময়ে ফিরে আসার কথা ছিল। কিন্তু বোয়িং-এর নতুন স্টারলাইনার ক্যাপসুলে থ্রাস্টার ত্রুটি এবং হিলিয়াম লিকের কারণে, নাসা তাঁদের থাকার মেয়াদ বাড়াতে বাধ্য হয়েছে।
এনিয়ে জুলাই মাসের শেষের দিকে নাসার বাণিজ্যিক ক্রু প্রোগ্রাম ম্যানেজার স্টিভ স্টিচ বলেছিলেন, মিশন ম্যানেজাররা ফেরার তারিখ ঘোষণা করতে এখনই প্রস্তুত নন। ইঞ্জিনিয়াররা গত সপ্তাহে নিউ মেক্সিকো মরুভূমিতে একটি অতিরিক্ত থ্রাস্টারে পরীক্ষা সম্পন্ন করেছেন। 'ডকিং' এর সময় কী ভুল হয়েছে তা বের করার জন্য এবং পৃথিবীতে ফেরার জন্য প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য অনবরত চেষ্টা করা হচ্ছে।