৪৫ মিনিটের সময় দিয়েছিল সেনা। এর মধ্যেই দেশ ছেড়ে কোনও ভাবে ভারতে আসেন শেখ হাসিনা। তাঁকে প্রথমে সেনার একটি হেলিকপ্টার করে গণভবন থেকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে বাংলাদেশি বায়ুসেনার একটু বিমানে করে হিন্ডন বিমান ঘাঁটিতে নিয়ে আসা হয়। গতকাল পদত্যাগ করার কিছুক্ষণ পরই বাংলাদেশ থেকে উড়ে দিল্লির কাছে হিন্ডন বিমান ঘাঁটিতে এসে পৌঁছেছিলেন সেদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাঁকে এই দেশে নিয়ে এসেছিল বাংলাদেশি বায়ুসেনার একটি সি-১৩০জে বিমান। সেই বিমানটি আজ সকালে ফের আকাশে উড়ে যায় বলে জানা গিয়েছে। রিপোর্ট অনুযায়ী, আজ সকাল ৯টার সময় বিমানটি আকাশে উড়ে যায়। তবে সেই বিমানে হাসিনা ছিলেন না বলেই জানা গিয়েছে। সেই বিমানে ছিলেন ৭ জন বাংলাদেশি সেনাকর্মী। (আরও পড়ুন: গণভবন থেকে চুরি 'হাসিনার অন্তর্বাস', সংসদ থেকে নগদ টাকা চুরি 'আন্দোলনকারীদের')
আরও পড়ুন: 'অস্থিতিশীল বাংলাদেশ আগ্নেয়গিরি… প্রভাব পড়বে পশ্চিমবঙ্গে', বললেন 'সম্ভাব্য' PM
আরও পড়ুন: হাসিনার বিদায়ে 'খুশি' USA, নীরব সোমের অরাজকতা নিয়ে, UN তদন্তের দাবি ব্রিটেনের
এদিকে শেখ হাসিনা কি ভারতেই রাজনৈতিক আশ্রয় নেবেন নাকি ব্রিটেনে যাবেন? এই নিয়ে চরম জল্পনা চলছে। রিপোর্ট অনুযায়ী, হিন্ডন থেকে বাংলাদেশি বায়ুসেনার বিমানটি আকাশে ওড়ার পর থেকেই পরিস্থিতির দিকে নজর রেখে চলেছে ভারতের নিরাপত্তা সংস্থা এবং গোয়েন্দারা। এই পরিস্থিতিতে হাসিনার পরবর্তী গন্তব্য ঘিরে জল্পনা তুঙ্গে। এদিকে হাসিনার ছেলে ওয়াজেদ সজীব ইতিমধ্যেই জানিয়ে দিয়েছেন, তাঁর মা আর বাংলাদেশে ফিরবেন না। রাজনীতিতে যোগ দেবেন না। এদিকে ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল হাসিনার সঙ্গে দেখা করে যান গতকাল। এই অবস্থায় ফিরে গিয়ে অজিত ডোভাল নিজের রিপোর্ট জমা দেন প্রধানমন্ত্রী মোদীকে। গতকাল রাতেই কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা ক্যাবিনেটের গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকের ডাক দেন মোদী। সেখানে বাংলাদেশ নিয়ে আলোচনা হয়। আর আজ সকালে বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর সর্বদল বৈঠকের ডাক দেন বাংলাদেশ নিয়ে। (আরও পড়ুন: বাংলাদেশে রামকৃষ্ণ মিশন, ইসকন সহ ৯ মন্দিরে হামলা, ২৯ জেলায় আক্রান্ত সংখ্যালঘুরা)
আরও পড়ুন: বাংলাদেশি সেনাপ্রধানকে নিয়ে হাসিনাকে আগেই সতর্ক করেছিল ভারত, কে এই ওয়াকার?
আরও পড়ুন: মাশরাফির বাড়ি দেখিয়ে দাবি, 'পুড়ছে লিটনের বাড়ি', ভুয়ো খবর নিয়ে সতর্ক WB পুলিশ
এদিকে গতকাল শেখ হাসিনা বাংলাদেশ ত্যাগ করার পরও হিংসা জারি আছে সেই দেশে। বাংলাদেশের সংবাদপত্র প্রথম আলোর রিপোর্ট অনুযায়ী, সোমবারের সংঘর্ষে বাংলাদেশে মৃত্যু হয়েছে ১০৯ জনের। পরে অন্যান্য রিপোর্টে দাবি করা হয়, মৃতের সংখ্যা ১৩৫। রাজধানী ঢাকাতে অন্তত ১৩টি পুলিশ স্টেশনে হামলা হয়েছে গতকাল। বাংলাদেশের দু'টি কারাগারে ভাঙচুর এবং অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। এদিকে এই অশান্ত পরিবেশের ফাঁকে বাংলাদেশে বিভিন্ন সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এলাকায় হামলার অভিযোগ ওঠে। পরে রাতের বেলা সেনার তরফ থেকে কমান্ডারদের ফোন নম্বর প্রকাশ করা হয়। হিন্দুদের ওপর হামলা হলে সেই সব নম্বরে ফোন করতে বলা হয়। বাংলাদেশের বিভিন্ন মন্দিরের নিরাপত্তার দায়িত্ব নিজেদের কাঁধে তুলে নেয় আন্দোলকারী পড়ুয়াদের একাংশ। জানা গিয়েছে, গতকালও হিংসা জারি থাকায়, ২১ জুলাই থেকে বাংলাদেশে মোট মৃতের সংখ্যা ৪৪০-এর গণ্ডি ছাড়িয়েছে। এই মৃতদের মধ্যে প্রাথমিক ভাবে আন্দোলনকারীদের সংখ্যা ছিল বেশি। তবে গতকাল থেকে 'প্রতিশোধ' নেওয়ার নাম করে আওয়ামি লিগ নেতা-কর্মী এবং পুলিশের ওপর হামলা চালানো হয়েছে নির্বিচারে।