একাধিক দেশে করোনাভাইরাসের বেশি সংক্রামক প্রজাতির হদিশ মিলেছে। সেই পরিস্থিতিতে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় করোনার নয়া স্রোত রুখতে নয়া নির্দেশিকা জারি করল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)। কঠোরভাবে সামাজিক দূরত্ব-সহ অন্যান্য করোনা বিধি পালনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক অধিকর্তা পুনম ক্ষেত্রপাল সিং বলেন, ‘নমুনা পরীক্ষা, চিহ্নিতকরণ এবং নিভৃতবাসের প্রক্রিয়া ক্রমশ শক্তিশালী করতে হবে। কড়াভাবে পালন করতে হবে সামাজিক দূরত্ব, হাতের স্যানিটাইজেশন এবং সঠিকভাবে মাস্ক পরার মতো বিধি। যে এলাকায় উদ্বেগজনক করোনা প্রজাতির বেশি হদিশ মিলছে, সেখানে কঠোরভাবে এবং দীর্ঘকালীন সময় ধরে সেই বিধি মেনে চলতে হবে।’
প্রাথমিকভাবে করোনার ধাক্কা সামলানোর পর একাধিক দেশে করোনার কঠোর বিধিনিষেধ শিথিল হয়েছিল। তার জেরে নতুন করে একাধিক দেশে করোনা মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে থাকে। সঙ্গে আরও বেশি সংক্রমণ নয়া প্রজাতিরও করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি করেছে। বিশেষত সম্প্রতি করোনার উদ্বেগজনক প্রজাতি ধরা পড়েছে মালদ্বীপ এবং মায়ানমারে। আগেই প্রজাতির সন্ধান পাওয়া গিয়েছে বাংলাদেশ, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, নেপাল, শ্রীলঙ্কা, তাইল্যান্ডের মতো দেশে।
সেই পরিস্থিতিতে আরও সতর্ক হওয়ার পরামর্শ দিয়েছে হু। বাজারের মতো জনবহুল জায়গায় ভিড় কমানো, অভ্যন্তরীণ যাতায়াত এবং বিদেশে যাতায়াতের কঠোর নিয়ম পালনের উপর জোর দেওয়া হয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক অধিকর্তা বলেন, ‘সংক্রমণ রুখতে, সংক্রমণ কম করতে এবং প্রাণ বাঁচানোর এই বিধিগুলি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’ সঙ্গে তিনি জানান, বিভিন্ন দেশ করোনার টিকাকরণ জোরকদমে চালালেও পরিকল্পনামাফিক সুরক্ষাবিধি পালন করতে হবে।
শনিবার রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিকে একই পরামর্শ দিয়েছিল কেন্দ্র। একটি চিঠিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব অজয় ভাল্লা জানান, কয়েকটি রাজ্যে দেখা গিয়েছে যে বিধিনিষেধ শিথিল করলেই বিভিন্ন জায়গায় ভিড় হচ্ছে। বাজারে জমায়েত হচ্ছে অনেক মানুষের। মানা হচ্ছে না করোনা বিধি। সেই আত্মতুষ্টি আবারও বিপদ ডেকে আনতে পারে বলে সতর্ক করেছেন তিনি। চিঠিতে জানিয়েছেন, সংক্রমণ কমলেও করোনা বিধি পালন করতেই হবে। পরতে হবে মাস্ক। ব্যবহার করতে স্যানিটাইজার। পালন করতে সামাজিক দূরত্বের বিধি। দীর্ঘকালীন ভিত্তিতে সংক্রমণের গ্রাফ নিম্নমুখী রাখার জন্য নমুনা পরীক্ষা, চিহ্নিতকরণ, চিকিৎসার (টেস্ট, ট্র্যাক, ট্রিট) উপর জোর দিতে হবে। কোনওভাবে যাতে নমুনা পরীক্ষার হার কমে না যায়, তা নিশ্চিত করার নির্দেশ দিয়েছেন। স্থানীয়ভাবে কোথাও করোনার সংক্রমণ বাড়ছে কিনা, তার উপর কড়া নজর রাখতে বলেছেন। প্রয়োজনে স্থানীয় স্তরে ‘কনটেনমেন্ট জোনের’ কার্যকরের পরামর্শও দেন ভাল্লা।