শুক্রবার কানাডার ২৪তম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেবেন মার্ক কার্নি। গত জানুয়ারিতেই জাস্টিন ট্রুডো জানিয়েছিলেন তিনি প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে পদত্যাগ করছেন। এরপরই কানাডায় খোঁজ শুরু হয়েছিল নতুন প্রধানমন্ত্রীর। আর সেই দৌড়ে জয়ী হন মার্ক কার্নি। ৫৯ বছর বয়সী লিবেরাল পার্টির এই নেতা ৮৬ শতাংশ ভোট পেয়ে হারিয়ে দিয়েছেন প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী ক্রিস্টিয়া ফ্রিল্যান্ডকে। রাজনীতিতে কার্যত নবাগত হলেও একাধিক চ্যালেঞ্চকে মাথায় নিয়েই কানাডার মসনদে বসবেন মার্ক কার্নি। একদিকে দেশের সার্বভৌমত্বকে রক্ষা করা, অন্যদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের হুমকিকে সামাল দিতে হবে হবে তাঁকে।রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের কথায়, এক কঠিন সময়ে কানাডার প্রধানমন্ত্রী পদে বসবেন ব্যাঙ্ক অফ কানাডার প্রাক্তন গভর্নর। আর এই পরিস্থিতি কতটা সামাল দিতে পারেন সে দিকে নজর এখন বিশ্বের।
আরও পড়ুন -Crypto fraud: ৮৩০০০০ কোটির ক্রিপ্টো প্রতারণা! কেরলে গ্রেফতার US-র ‘ওয়ান্টেড’
কে এই মার্ক কার্নি ?
কানাডার রাজনীতিতে ধূমকেতুর মতো উত্থান ঘটেছে মার্ক কার্নির। ৫৯ বছর বয়সের মার্ক সে দেশের একজন প্রখ্যাত অর্থনীতিবিদ হিসাবে পরিচিত। জাস্টিন ট্রুডোর পদত্যাগের ঘোষণার পর তিনি প্রধানমন্ত্রী হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে ছিলেন। মার্ক কার্নির জন্ম কানাডার উত্তর পশ্চিমী এলাকার একটি ছোট শহরে। তিনি ১৯৮৮ সালে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। পরে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে স্নাতকোত্তর এবং ডক্টরেট উভয়ই ডিগ্রি অর্জন করেন। অর্থনীতি নিয়ে বিশাল পান্ডিত্য রয়েছে মার্কের। কার্নি হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের আইস হকি দলে গোলরক্ষক হিসেবে খেলেছিলেন। মার্ক কার্নি ২০০৮ সালে আর্থিক সঙ্কটের সময় ব্যাঙ্ক অফ কানাডার গভর্নর ছিলেন। সে সময় দায়িত্ব নিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেন। সঙ্কট থেকে কানডাকে রক্ষা করেন। দীর্ঘ সময়ে ব্যাঙ্ক অফ ইংল্যান্ডের গভর্নর ছিলেন মার্ক কার্নির। সেই সময় তাঁর খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে বিশ্বজুড়ে। মার্ক প্রথম নন-ব্রিটিশ নাগরিক যিনি ব্যাঙ্ক অফ ইংল্যান্ডের গভর্নরের দায়িত্ব সামলেছেন। সরকারি চাকরিতে যোগদানের আগে গোল্ডম্যান শ্যাক্সে বিনিয়োগ ব্যাংকিংয়ে কাজ করেছিলেন মার্ক।
আরও পড়ুন -Crypto fraud: ৮৩০০০০ কোটির ক্রিপ্টো প্রতারণা! কেরলে গ্রেফতার US-র ‘ওয়ান্টেড’
ব্যাঙ্ক অফ ইংল্যান্ডের গভর্নর হিসাবে মার্কের কাজ সবার নজর কেড়েছিল। রাজনৈতিক দলের নেতারাও নজর তাঁর প্রশংসা করেন। মার্ক কার্নি ২০২০ সালে ব্যাঙ্ক অফ ইংল্যান্ড ছাড়ার পরে রাষ্ট্রসংঘেও কাজ করেছিলেন। এত অভিজ্ঞতা থাকা সত্ত্বেও মার্ক কার্নি কখনও রাজনীতিতে যোগ দেননি কিংবা কোনও নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেননি। এমনকী কোনও দিন কানাডার পার্লামেন্টেও ছিলেন না।তবে এক সময় বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর অর্থনৈতিক উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করেছেন কার্নি। আবাসন সঙ্কট ও জীবনযাত্রার ক্রমবর্ধমান ব্যয় মোকাবিলায় ট্রুডো সরকারের ব্যর্থতার জেরে ব্যাপক ক্ষোভ নিয়েই পদ ছাড়েন তিনি। ফলে রাজনীতিতে একেবারে নতুন মার্ক কার্নির প্রত্যাবর্তন। এবার তাঁর হাতেই কানাডার ক্ষমতা।