ভারতে বিষাক্ত কাশির সিরাপ খেয়ে অন্তত ২২ শিশুর মৃত্যু হয়েছে এখনও পর্যন্ত। এই আবহে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডাব্লুএইচও) ভারতীয় কর্তৃপক্ষের কাছে জানতে চাইল যে সেই ভেজাল কাশির সিরাপ অন্য দেশেও রফতানি করা হয়েছিল কিনা। বার্তাসংস্থা পিটিআইয়ের রিপোর্ট অনুযায়ী, কাশির সিরাপ কোল্ডরিফের গুণমান নিয়ে ক্রমেই উদ্বেগ বৃদ্ধির আবহে ভারত সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। ভারতীয় কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে আনুষ্ঠানিক জবাব পাওয়ার পরে গ্লোবাল মেডিক্যাল প্রোডাক্টস অ্যালার্ট জারি করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
এদিকে এই ভেজাল কোল্ডরিফ কাশির সিরাপ তৈরি করা সংস্থার মালিক রঙ্গনাথনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এই কোম্পানির নাম শ্রীসান ফার্মা। পুলিশ জানিয়েছে, ওষুধ কোম্পানির মালিককে গতকাল রাতে চেন্নাই থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং ট্রানজিট রিমান্ডে নেওয়ার পরে তাকে মধ্যপ্রদেশের ছিন্দওয়ারা জেলায় নিয়ে যাওয়া হবে। সংবাদ সংস্থা এএনআই জানিয়েছে, মধ্যপ্রদেশ পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাঁকে আটক করার পরপরই এই গ্রেফতার করা হয়। ইতোমধ্যে কোম্পানির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। মধ্যপ্রদেশ পুলিশ রাজ্যে বিষাক্ত সিরাপ খাওয়ার পরে কমপক্ষে ২২ শিশুর মৃত্যুর খবর জানা গিয়েছে। এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে প্রবীণ সোনি নামের এক চিকিৎসককেও গ্রেফতার করা হয়েছে। তিনি বেশিরভাগ শিশুকে এই সিরাপ খাওয়ার জন্য প্রেস্ক্রিপশনে লিখেছিলেন। এদিকে কেন্দ্রীয় সরকার আরও দুটি ব্র্যান্ড - রিলিফ (শেপ ফার্মা) এবং রেসপিফ্রেশ (রেডনেক্স ফার্মাসিউটিক্যালস) নিষিদ্ধ করেছে।
মধ্যপ্রদেশ ছাড়াও রাজস্থানেও এই সিরাপে বেশ কয়েকজনের মৃত্যু হয়েছে। মৃতদের বেশিরভাগই পাঁচ বছরের কম বয়সি। মৃত শিশুরা ছিন্দওয়াড়া, পান্ধুরনা ও বেতুল জেলার বাসিন্দা। মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান, পুদুচেরি ও ওড়িশায় এই সিরাপ সরবরাহ করত সংস্থাটি। তামিলনাড়ু সরকার এই রাজ্যগুলিকে সিরাপ বিক্রি বন্ধ করার জন্য একটি পরামর্শ জারি করেছে। কোল্ডরিফ সিরাপ পান করার পর শিশুদের কিডনিতে সংক্রমণ হয়। এর আগে চলতি মাসের শুরুতে তামিলনাড়ু কর্তৃপক্ষ এই কোল্ডরিফ সিরাপের নমুনায় বিষাক্ত ও ক্ষতিকারক পদার্থ ডাইথিলিন গ্লাইকোল পায়। এরপরই সিরাপটিকে ভেজাল বলে ঘোষণা করেছিল।