করোনা হতে পারে এই আশঙ্কায় অন্ধ্রপ্রদেশের একটি পরিবার নিজেদের ঘরবন্দি করে রেখেছিল। এক বা দু'মাস নয়, টানা ১৫ মাস। কিন্তু এভাবে নিজেদের ঘরবন্দি করে রাখার ফলে অপুষ্টির অভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন ওই পরিবারের সদস্যরা। তাঁদের সকলকেই হাসপাতালে ভরতি করা হয়েছে। সেখানেই তাঁদের চিকিৎসা চলছে।
অন্ধ্রপ্রদেশের পূর্ব গোদাবরী জেলার কাণ্ডালি গ্রাম। এই গ্রামেই বসবাস করেন পেশায় সাইকেল মিস্ত্রি জন বেনি ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা। এলাকার স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, গত বছর মার্চ মাসে গ্রামে এক মহিলার মৃত্যু হয়। ওই মহিলার মৃত্যুর পর সকলের মনে সন্দেহ দানা বাঁধে যে ওই মহিলার মৃত্যু করোনাতেই হয়েছে। এরপর থেকে জন বেনি ও তাঁর পরিবারের লোকেরা বাইরে বেরোনো সম্পূর্ণ বন্ধ করে দেন। তাঁদের মনে বদ্ধমূল ধারণা, তৈরি হয়ে যায় যে বেরোলেই করোনা আক্রান্ত হয়ে পড়বেন তাঁরা। আত্মীয় সজন থেকে শুরু করে প্রতিবেশী অনেকেই তাঁদের বোঝানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু তাঁদের বোঝানো যায়নি। শেষপর্যন্ত জন বেনির পরিবারের আত্মীয়রাই পরিস্থিতি খারাপ হতে পারে এই আশঙ্কায় পুলিশে খবর দেন। গত সোমবার পুলিশ এসে তাঁদের বাড়ি থেকে উদ্ধার করে। বাড়িতে ঘরবন্দি থাকা তিনজন মহিলাকে বাইরে নিয়ে আসতেই তাঁরা অজ্ঞান হয়ে যায়। চিকিৎসকদের মতে, দীর্ঘদিন অপুষ্টির অভাবেই এই ধরনের ঘটনা ঘটেছে।
এই প্রসঙ্গে কাণ্ডালি গ্রামের পঞ্চায়েত প্রধান জানান, সরকারের উদ্যোগে স্যানিটাইজেশনের কাজ গ্রামে করা হয়েছিল। কিন্তু সেই পরিষেবা নিতে অস্বীকার করেছিল জনের পরিবার। কারণ, তাঁদের ধারণা হয়েছিল, সরকারি কর্মীদের সংস্পর্শে এলেও তাঁদের করোনা হয়ে যেতে পারে। তবে গ্রামের একাংশের অবশ্য, গত ১৫ মাসে পরিবারের মহিলাদের বাইরে যেতে না দেখা গেলেও জন বেনি ও তাঁর ছেলে চিনাকে মুদিখানার দোকানে আসতে দেখা গিয়েছে। সেখান থেকে একটা প্রশ্ন মাথাচাড়া দিচ্ছে, সত্যিই কী করোনার ভয়ে নিজেদের অন্যদের থেকে সরিয়ে নিয়েছিলেন জন নাকি এর পিছনে অন্য কারণও আছে। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। পুলিশ সব দিকই খতিয়ে দেখছে। তবে এখন অসুস্থদের সুস্থ করে তোলাই প্রশাসনের প্রধান লক্ষ্য।