খালিস্তানি নেতা অমৃতপাল সিংকে গ্রেফতার করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে অসমের দিব্রুগড় সেন্ট্রাল জেলে। বিজেপি শাসিত এক রাজ্যের জেলে কেন এই ধৃতকে রাখার সিদ্ধান্ত নিলে আম আদমি পার্টি শাসিত রাজ্যের প্রশাসন? উল্লেখ্য, গত ১৮ মার্চের পর থেকে পঞ্জাব পুলিশ অমৃতপালের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করে এই দিব্রুগড় জেলে স্থানান্তরিত করেছে। জাতীয় নিরাপত্তার ক্ষেত্রে রাজনীতির ঊর্ধ্বে গিয়েই এই কাজ করেছে পঞ্জাব সরকার। উল্লেখ্য, এর আগে ফেব্রুয়ারি মাসে অমৃতপাল তার সংগঠন 'ওয়ারিস পঞ্জাব দে'-র সদস্যদের নিয়ে অজনালা পুলিশ স্টেশনে সশস্ত্র আক্রমণ করেছিল। এরপর থেকেই অমৃতপালকে ধরার ছক কষছিল পঞ্জাব পুলিশ। গোয়েন্দা সূত্রে জানা গিয়েছে, অমৃতপাল নিজের সেনা গড়ে তুলেছিল। এই আবহে খালিস্তানি কয়েদিদের নিরাপত্তার জন্য ভিনরাজ্যেই তাদের রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল পঞ্জাব পুলিশ। (আরও পড়ুন: কেন সুপ্রিম কোর্টে পিছিয়ে গেল ডিএ মামলা? জানা গেল আসল কারণ, পরবর্তী শুনানি কবে?)
জানা গিয়েছে, পঞ্জাব সরকার প্রথমে অমৃতপাল ও তার সহযোগীদের দিল্লির তিহাড় জেলে রাখার পরিকল্পনা করেছিল। তবে তিহাড় জেলে পঞ্জাবের বহু গ্যাংস্টার বন্দি রয়েছে। এদের খালিস্তানপন্থী সংগঠনের সঙ্গে যোগ রয়েছে। এই আবহে তিহাড় জেলে অমৃতপালকে না রেখে অসমের দিব্রুগড়ে রাখার সিদ্ধান্ত নেয় পঞ্জাব সরকার। উল্লেখ্য, আলফা গোষ্ঠীর গতিবিধি যখন তুঙ্গে, তখন থেকেই দিব্রুগড় জেলকে দুর্গে পরিণত করা হয়েছিল। এই জেল থেকে পালানো বা এই জেলে হামলা করা প্রায় অসম্ভব। পাশাপাশি পঞ্জাবের থেকে অসমের এই জেল বহু দূর হওয়ায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখা সহজ হবে বলে মত প্রশাসনের।
আরও পড়ুন: তাপপ্রবাহের বিদায়, নেমেছে বৃষ্টি, সোমবার থেকে খুলছে স্কুল-কলেজগুলি?
এর আগে দিব্রুগড় জেলে রাখা হয়েছিল অমৃতপাল ঘনিষ্ঠ দলজিৎ সিং কালসি, পাপালপ্রীত সিং, কুলবন্ত সিং ধালিওয়াল, বরিন্দর সিং জোহাল, গুরমিত সিং বুকানওয়ালা, হারজিৎ সিং, ভগবন্ত সিং, বসন্ত সিং এবং গুরিন্দরপাল সিং আউজলা। আর আজ অমৃতপালকেও নিয়ে যাওয়া হয় সেই জেলে। বর্তমানে দিব্রুগড় জেলের বাইরের নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছেন সিআরপিএফ জওয়ানরা। পাশাপাশি অসম পুলিশের কমান্ডোরাও জেলের নিরাপত্তার দায়িত্বে নিযোজিত আছেন। এদিকে জেলের ভেতরে ৫৭টি সিসিটিভি ক্যামেরার সাহায্যে কয়েদিদের ওপর নজর রাখা হচ্ছে।
গোয়েন্দা সূত্রে দাবি, 'ওয়ারিস পাঞ্জাব দে' গোষ্ঠীর নেতা অমৃতপাল সিং একজন 'আইএসআই এজেন্ট'। পাকিস্তানি গুপ্তচর সংস্থা তাকে ভারতে নিয়ে এসেছে খালিস্তানি বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলন গড়ে তুলতে। দেশে সহিংসতা ছড়িয়ে দেওয়াই তার মূল উদ্দেশ্য। অমৃতপাল সিং নিজের সেনা তৈরি করছিল বলে জানা গিয়েছে। নিষিদ্ধ খালিস্তান টাইগার ফোর্সের মতো 'আনন্দপুর খালসা ফোর্স' তৈরি করছিল সে। 'ওয়ারিস পঞ্জাব দে' সংগঠনের প্রধান মানব বোমা স্কোয়াডও তৈরি করছিল বলে জানা গিয়েছে। জানা গিয়েছে, নিজের 'নেশামুক্তি কেন্দ্র' এবং এক গুরুদ্বারে অস্ত্র মজুত করছিল অমৃতপাল। সেখানে যুব সমাজকে খালিস্তানি বিচ্ছিনতাবাদের পাঠ পড়ানো হত। মজুত অস্ত্র সহকারে সেই যুবকদের 'আত্মঘাতী' হামলার জন্য তৈরি করছিল অমৃতপাল সিং। আর এই সবই অমৃতপাল করছিল পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই-এর মদতে।