কয়েকদিন আগে বিহারের মন্ত্রী নারায়ণ প্রসাদ দাবি করেছিলেন, পেট্রোলের দাম বৃদ্ধির প্রভাব সাধারণ মধ্যবিত্ত মানুষের উপর কোনও প্রভাবই ফেলবে না। কারণ তাঁরা তো গাড়িতে চড়েন না। কিন্তু বাস্তবটা হয়তো কিছুটা ভিন্ন। কারণ এবার কেন্দ্রীয় পেট্রোলিয়ামমন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান পেট্রোলিয়াম রফতানিকারক দেশগুলির কাছে আর্জি জানিয়েছেন, পেট্রোপণ্যের উৎপাদন হ্রাস না করতে। কারণ তার প্রভাব পড়ছে ভারতে। আর দাম বেড়ে যাচ্ছে পেট্রোল–ডিজেলের।
এই পেট্রোলিয়াম রফতানিকারক দেশগুলিকে বলা হয় (ওপেক)। অর্থাৎ অর্গানাইজেশন অফ দ্য পেট্রোলিয়াম এক্সপোর্টিং কান্ট্রিজ। মন্ত্রী পেট্রোপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে জানিয়েছেন, ‘দুটি কারণে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ছে। এক, আন্তর্জাতিক বাজার তেল উৎপাদন কমিয়ে দিচ্ছে। দুই, আর যেসব দেশ উৎপাদন করছে তারা কম উৎপাদন করছে বেশি মুনাফা করার জন্য। যার জেরে যে দেশগুলি ক্রেতা তারা সমস্যায় পড়ছে।’
মন্ত্রী এই কথা বললেও তাঁরা নিজেদের চালেই মাত হয়ে গিয়েছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। কারণ করোনা আবহে গত বছর এপ্রিল মাসে ভারত সমর্থন করেছিল, তেল উৎপাদনকারী দেশগুলির কম উৎপাদনের সিদ্ধান্তকে। আর এখন তাঁরাই আর্জি জানাচ্ছে উৎপাদন বাড়ানোর জন্য। কারণ ভারতের প্রতিটি রাজ্যে পেট্রোল–ডিজেলের দাম রোজ লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। আর তাতে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বেড়ে যাচ্ছে। যা সাধারণ মধ্যবিত্ত মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে যাচ্ছে। এমনকী কেন্দ্রীয় সরকারের নীতি সমালোচিত হচ্ছে দেশে।
সামনেই অসম–পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা নির্বাচন রয়েছে। আর প্রতিনিয়ত এই দামবৃদ্ধিকে কেন্দ্র করে বিরোধীরা চেপে ধরেছে কেন্দ্রীয় সরকারকে। সেটাই কাজে লাগিয়ে মানুষের রায় নিজেদের দিকে নিয়ে নিতে পারে বলে মনে করছে বিজেপি। ইতিমধ্যেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার ১ টাকা সেস কমিয়ে দিয়ে মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় পেট্রোলিয়াম মন্ত্রী ওপেক সদস্যবিশিষ্ট দেশগুলির কাছে আর্জি জানিয়ে মানুষের ক্ষোভ প্রশমনের চেষ্টা করলেন বলে মনে করা হচ্ছে।