মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে ডেমোক্র্যাট এবং রিপাবলিকানদের মধ্যে কর কাঠামো, গর্ভপাতের অধিকার এবং এমনকী 'অভিবাসীদের পোষা প্রাণী খাওয়া' সংক্রান্ত দাবির মতো একাধিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে দ্বন্দ্ব দেখা দিয়েছে।
কিন্তু, বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ আমেরিকার সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচন শুরু হওয়ার ঠিক কয়েক দিন আগে, ইন্টারনেট সেনসেশন 'পিনাট' নামে একটি কাঠবেড়ালির মৃত্যু দুই দলের মধ্যে রাজনৈতিক লড়াইয়ের সর্বশেষ বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে!
প্রসঙ্গত, ইনস্টাগ্রামে আজও পিনাটের ফলোয়ার সংখ্যা ৫ লক্ষ ৪০ হাজারের বেশি! অভিযোগ, গত সপ্তাহেই পিনাটকে তার পালক পিতামাতার বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। এবং তারপর তাকে ওষুধ প্রয়োগ করে মেরে ফেলা হয়!
এই ঘটনা ট্রাম্প সমর্থকদের কাছে নির্বাচনী প্রচারের এক গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে পরিণত হয়। প্রসঙ্গত, ডোনাল্ড ট্রাম্প নিজেই দিন কয়েক আগে দাবি করেছিলেন, ওহিয়োর অভিবাসীরা বিড়ালের মাংস খান!
ইলন মাস্ক থেকে শুরু করে এবারের নির্বাচনে রিপাবলিকানদের ভাইস প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী জে ডি ভ্যান্সও এই ঘটনার প্রতিবাদে সোশাল মিডিয়ায় সরব হন। তাঁদের সকলেরই বক্তব্য, এক্ষেত্রে সরকারি ও প্রশাসনিক ক্ষমতার অপব্যবহার করা হয়েছে।
এমনকী, বিশ্বের সবথেকে ধনী ব্যক্তি ইলন মাস্ক এই ঘটনার জন্য আমেরিকার বর্তমান সরকারকে 'মস্তিষ্কহীন ও হৃদয়হীন প্রাণঘাতী যন্ত্র' বলে তোপ দাগেন। ইলনের একটি পোস্টে পিনাটকে স্টার ওয়ার্সের চরিত্র ওবি-ওয়ান কেনোবির সাজ-সজ্জায় দেখা গিয়েছে!
ইলনের দাবি, 'প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কাঠবিড়ালিদের রক্ষা করবেন!' যদিও ট্রাম্প নিজে এখনও পর্যন্ত এই ঘটনা নিয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া দেননি।
কিন্তু, ডোনাল্ড ট্রাম্প জুনিয়র তাঁর এক্স হ্যান্ডেলে এই ইস্যুতে বাইডেন প্রশাসনের মুণ্ডপাত করেছেন। তিনি লিখেছেন, ‘আমার বিশ্বাস হচ্ছে না, ডেমোক্র্যাটরা নিউ ইয়র্কে কাঠবেড়ালি সাম্রাজ্যের ইলন মাস্ককে খুন করেছে!!!’
তিনি আরও লেখেন, 'যে সরকার একটি পোষা কাঠবেড়ালিকে খুন করে, কিন্তু আনন্দের সঙ্গে ৬ লক্ষ অপরাধীকে তাদের ১৩ হাজার খুনি এবং ১৬ হাজার ধর্ষককে সঙ্গে নিয়ে অনায়াসে দেশে ঢুকতে দেয়, সেই সরকারকে উৎখাত করার সময় এসে গিয়েছে।'
পিনাটকে কেন মারা হল?
পিনাট আসলে ছিল একটি অনাথ কাঠবেড়ালি। কিন্তু, ৭ বছর আগে নিউ ইয়র্কের বাসিন্দা মার্ক লঙ্গো তাকে উদ্ধার করেন। এবং তাকে নিজের বাড়িতেই রেখে দেন।
এই সময় থেকেই মার্ক তাঁর আদরের পিনাটের নানা মুহূর্তের ভিডিয়ো সোশাল নেটওয়ার্কে শেয়ার করতে শুরু করেন।
কখনও পিনাটের সঙ্গে মার্কের খুনসুটি, আবার কখনও রকমারি পোশাকে সজ্জিত পিনাটের ভিডিয়ো সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল হতে শুরু করে। এমনকী, খুব অল্প সময়ের মধ্যেই ইনস্টাগ্রাম ও টিকটকে পিনাটের ফলোয়ার সংখ্যা ১০ হাজার ছাড়িয়ে যায়।
কিন্তু, গত ৩০ অক্টোবর কাঠবেড়ালি পিনাট এবং ফ্রেড নামে একটি রেকুনকে তুলে নিয়ে যান স্থানীয় প্রশাসনের প্রতিনিধিরা। এবং ব়্যাবিস ছড়াতে পারে এই আশঙ্কায় প্রাণী দু'টিকে মেরে দেন তাঁরা!
এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই সোশাল মিডিয়ায় ক্ষোভের আগুন দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়ে। এমনকী, বিভিন্ন ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মে '#Justiceforpeanut' ট্রেন্ডিং হতে শুরু করে!