'চারদিনের মধ্যে আমরা কলকাতা দখল করে নেব', 'ভারত তো দূরের কথা, আমেরিকাও আমাদের সঙ্গে টিকবে না'- এমনই উদ্ভট মন্তব্য শোনা গেল বাংলাদেশ থেকে। যাঁরা সেই মন্তব্য করেছেন, তাঁরা নিজেদের বাংলাদেশের সামরিক বাহিনীর প্রাক্তন সদস্য হিসেবে দাবি করেছেন। আর তাঁদের সেই মন্তব্যের ভিডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে গিয়েছে। রীতিমতো হাসাহাসি শুরু করেছেন নেটিজেনদের একাংশ। তেমনই এক নেটিজেন বলেছেন, ‘কী খেয়ে এসব বলছেন? অপর এক নেটিজন বলেছেন, ‘ওঁরা ভাবছেন, ভারতের যে যে দূরপাল্লা ও মাঝারি-পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র আছে, সেগুলো স্রেফ সাজিয়ে রাখা আছে এবং সেগুলো শুধুমাত্র প্রজাতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজে ব্যবহার করা হয়।’
ঢাকায় ভারতের বিরুদ্ধে মিছিল করা হয়
‘তাঁরা’ ঠিক কী ভাবছেন, সেটা বলা মুশকিল। তবে সেই মন্তব্য করা হয়েছে বাংলাদেশের সামরিক বাহিনীর প্রাক্তন সদস্যের মিছিলের সময়। ভারতের বিরুদ্ধে আগ্রাসনের অভিযোগ তুলে শনিবার বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার রাওয়া কমপ্লেক্সের নীচে সমাবেশ করেন সামরিক বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত সদস্যরা। করা হয় মিছিল। সেই মিছিল থেকেই ওরকম উদ্ভট মন্তব্য করা উড়ে আসে।
বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম বাংলাদেশ টাইমসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, মাথায় সেই দেশের পতাকার রঙের টুপি পরা এক ব্যক্তি বলেন, ‘সামরিক বাহিনী, ছাত্র-জনতা - আমরা একত্রিত আছি। রাওয়ায় (আমাদের) ৫,০০০ সদস্য আছি। তাঁদের মধ্যে অর্ধেকই নবীন। আমরা ২,৫০০ জন যুদ্ধে মাঠে যেতে পারি। এর সঙ্গে যদি ৩০ লাখ ছাত্র-জনতা যোগ হয়,তাহলে ভারত তো দূরের কথা, আমেরিকাও আমাদের সঙ্গে টিকবে না, ইনশাল্লাহ।’
'আমাদের ট্রেনিং, দক্ষতা ভারতের থেকে অনেক বেশি', উত্তেজিত বৃদ্ধ
তাঁর সেই কথা শেষ হওয়ার আগেই পাশ থেকে নিজেকে বাংলাদেশ সেনার প্রাক্তন সদস্য দাবি করা এক ব্যক্তি আবার কলকাতা দখলের হুমকি দিয়ে বসেন। ওই সংবাদমাধ্যমের রিপোর্ট অনুযায়ী, রীতিমতো উত্তেজিত হয়ে ওই বৃদ্ধ বলেন যে 'আমি মেজর শরিফ। আমি বলে দিচ্ছি ভারতকে যে ট্রেনিং আমরা নিয়েছি, যে যুদ্ধ আমরা করেছি....আমরা দু'লাখ সৈনিক (আছি)। আমাদের সঙ্গে ১৮ কোটি জনগণ আছে। আমাদের ট্রেনিং, আমাদের দক্ষতা ভারতের থেকে অনেক বেশি। আমরা একবার সাহস করে....আমাদের দেশকে যুদ্ধ....আমরা চারদিনের মধ্যে কলকাতা দখল করে নেব।'
বাস্তবে ভারতের সামরিক শক্তির ধারেকাছেও নেই বাংলাদেশ
তাঁরা মুখে সেই কথা বললেও বাস্তবে বাংলাদেশের থেকে ভারতের সামরিক শক্তি কয়েকগুণ বেশি। ২০২৪ সালের গ্লোবাল ফায়ার পাওয়ারের রিপোর্টের নিরিখে সামরিক দিক থেকে বিশ্বের চতুর্থ শক্তিশালী দেশ হল ভারত (ভারতীয় সেনা, ভারতীয় বায়ুসেনা ও ভারতীয় নৌবাহিনীর শক্তি মিলিয়ে)। সেখানে বাংলাদেশ আছে ৩৭ নম্বরে। আর অবস্থানের পার্থক্যের থেকে ‘পাওয়ার ইনডেক্স’-র ব্যবধান আরও চওড়া। যে ইনডেক্সের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট দেশের সামরিক শক্তি কতটা, তা বোঝানো হয়েছে।
গ্লোবাল ফায়ার পাওয়ারের রিপোর্ট অনুযায়ী, ভারতের পাওয়ার ইনডেক্স হল ০.১০২৩। আর বাংলাদেশের পাওয়ার ইনডেক্স ০.৫৪১৯-তে আছে। এখানে ০.০০০-র অর্থ হল নিখুঁত। আর সেটার ভিত্তিতে বিশ্বের সবথেকে শক্তিধর সামরিক দেশের তকমা দেওয়া হয়েছে আমেরিকাকে। মার্কিনদের পাওয়ার ইনডেক্স হল ০.০৬৯৯। চিনের পাওয়ার ইনডেক্স হল ০.০৭০২। আর তৃতীয় স্থানে থাকা রাশিয়ার পাওয়ার ইনডেক্স হল ০.০৭০৬।