তাঁর গ্রেফতারিতে উত্তাল হয়েছে বাংলাদেশ। ক্ষোভে ফেটে পড়েছে ভারতও। আর সেই হিন্দু সন্ন্যাসী তথা বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণদাস কি জামিন পাবেন? উত্তরটা মিলবে মঙ্গলবার। কারণ আজ চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ মহম্মদ সাইফুল ইসলামের আদালতে সেই মামলার শুনানি হওয়ার কথা আছে। আর তাঁর হয়ে আদালতে কে সওয়াল করেন, সেদিকে নজর আছে সকলের। এমনিতে ইসকন কলকাতার সহ-সভাপতি এবং মুখপাত্র রাধারমণ দাস দাবি করেছেন, চিন্ময় প্রভুর আইনজীবী রমেন রায়ের উপর হামলা চালিয়েছে মৌলবাদীরা। এখন আইসিইউতে ভরতি আছেন চিন্ময় প্রভুর আইনজীবী রমেন। যদিও রমেন আদৌও চিন্ময় প্রভুর আইনজীবী কিনা, তা নিশ্চিত নয়। বিষয়টি নিয়ে চট্টগ্রামের আইনজীবী সমিতির তরফে নিশ্চিতভাবে কিছু জানানো হয়নি।
‘জীবনের সঙ্গে লড়াই করছেন চিন্ময় প্রভুর আইনজীবী’
সোমবার সোশ্যাল মিডিয়ায় ছবি পোস্ট করে ইসকন কলকাতার সহ-সভাপতি এবং মুখপাত্র লেখেন, ‘দয়া করে আইনজীবী রমেন রায়ের জন্য প্রার্থনা করুন। তাঁর একমাত্র দোষ ছিল যে তিনি আদালতে চিন্ময় কৃষ্ণ প্রভুর হয়ে লড়াই করেছিলেন। ইসলামপন্থীরা তাঁর বাড়িতে ভাঙচুর চালায় এবং তাঁর উপর নৃশংস হামলা চালায়। তার জেরে তাঁকে আইসিইউতে ভরতি হয়েছে। সেখানে জীবনের সঙ্গে লড়াই করছেন (রমেন)।’
সেই পোস্টের সঙ্গে ‘বাংলাদেশি হিন্দুদের বাঁচান’ এবং ‘চিন্ময় কৃষ্ণ প্রভুকে মুক্ত করুন’ হ্যাশট্যাগও ব্যবহার করেন ইসকন কলকাতার সহ-সভাপতি এবং মুখপাত্র। তবে তিনি যে দাবি করেছেন, সে বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের আপাতত কিছু জানানো হয়নি। শুধু চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে যে আজ আদালতে চিন্ময় প্রভুর মামলার শুনানি হবে।
কেন গ্রেফতার করা হয় চিন্ময় প্রভুকে?
গত ২৬ নভেম্বর রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় চট্টগ্রাম আদালতে পেশ করা হয়েছিল চিন্ময় প্রভুকে। তার আগেরদিন তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। গত ২৫ অক্টোবর একটি জনসভা হয়েছিল চট্টগ্রামে। সেটার প্রেক্ষিতে ৩০ অক্টোবরে চিন্ময় প্রভু-সহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা রুজু করা হয়েছিল। আর তারপর ২৫ নভেম্বর ঢাকা বিমানবন্দর থেকে বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্রকে গ্রেফতার করা হয়। যে ঘটনা নিয়ে বাংলাদেশ উত্তাল হয়ে উঠেছে। হিন্দু-সহ সংখ্যালঘুদের উপরে অত্যাচারের অভিযোগ সরব হয়েছে বিশ্ব। ভারতের সঙ্গে সম্পর্কেও উত্তেজনা বেড়েছে।
‘কৃত্রিমভাবে ভারতের সঙ্গে উত্তেজনা তৈরি করা হচ্ছে’
যদিও বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বিভিন্ন উপদেষ্টারা দাবি করেছেন যে হিন্দু-সহ সংখ্যালঘুদের উপরে অত্যাচারের ঘটনা নিয়ে ভুয়ো প্রচার করা হচ্ছে। কয়েকটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু সেটা সার্বিক চিত্র নয়। সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজারে একটি সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মুখ্য প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনুসের প্রেস সচিব শফিকুল আলম দাবি করেছেন, অনলাইনের দুনিয়ায় কৃত্রিমভাবে ভারতের সঙ্গে উত্তেজনা তৈরি করা হচ্ছে।