মহারাষ্ট্র বিধানসভা নির্বাচনে ভরাডুবি হয়েছে মহা বিকাশ আঘাড়ী (এমভিএ)-এর। কিন্তু, তথ্যাভিজ্ঞ মহল বলছে, ভোটে পরাজয় তো তবু ঠিক আছে, কিন্তু এরপর যদি পরবর্তী বিধানসভায় বিরোধী শিবিরের কোনও দল একজন বিরোধী দলনেতাকেও দাঁড় করাতে না পারে, তখন কী হবে?
এই প্রশ্ন উঠছেই। কারণ, এখনও পর্যন্ত যেটুকু ভোট গণনা হয়েছে, তাতে স্পষ্ট, সেই ধারা যদি একটুও না বদলে শেষ রাউন্ডের গণনা পর্যন্ত অব্যাহত থাকে, তাহলে এমভিএ শিবিরের কোনও নির্দিষ্ট একটি দলই, যেমন - শিব সেনা (উদ্ধব ঠাকরে গোষ্ঠী), কংগ্রেস কিংবা এনসিপি (শরদ পাওয়ার গোষ্ঠী) - প্রধান বিরোধী দলের আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি পাবে না। সেক্ষেত্রে তারা কোনও বিরোধী দলনেতাও দিতে পারবে না।
নিয়ম অনুসারে, শাসক শিবিরকে বাদ দিলে, বিরোধী পক্ষে যে দল সাধারণ তাদের মধ্যে সর্বাধিক আসন পায়, তাদেরই প্রধান বিরোধী দল হিসাবে ধরে নেওয়া হয়। কিন্তু, আনুষ্ঠানিকভাবে এই স্বীকৃতি পেতে হলে, সংশ্লিষ্ট দলকে অন্তত বিধানসভার মোট আসনের ন্যূনতম ১০ শতাংশ আসন পেতেই হবে।
মহারাষ্ট্র বিধানসভায় মোট আসন রয়েছে ২৮৮টি। অর্থাৎ - অঙ্কের হিসাবে এর ১০ শতাংশ আসন হল - ২৯। কিন্তু, এখনও পর্যন্ত অন্তত এমভিএ-র কোনও দলই এককভাবে সেই পরিমাণ আসন জিততে পারবে বলে মনে হচ্ছে না, যদি না শেষ মুহূর্তে কোনও দল হঠাৎ করে ভালো ফল করতে পারে।
নির্বাচন কমিশন সূত্রে সন্ধে ৬টা পর্যন্ত যে হিসাব এসে পৌঁছেছে, সেই অনুসারে - উদ্ধব সেনা পেয়েছে ১৩টি আসন এবং এগিয়ে রয়েছে আরও ৭টি আসনে। কংগ্রেস জয়ী হয়েছে ৬টি বিধানসভা কেন্দ্রে। পাশাপাশি, তারা আরও ৯টি আসনে এগিয়ে রয়েছে। এছাড়া, শরদ পাওয়ারের এনসিপি-ও ৬টি কেন্দ্রেই জয়লাভ করতে সমর্থ হয়েছে। তারা আরও ৪টি আসনে বাকিদের থেকে এগিয়ে রয়েছে।
অর্থাৎ - এই ধারা অব্যাহত থাকলে এমভিএ শরিকদের মধ্যে এককভাবে সর্বাধিক ২০টি আসন পেতে পারে উদ্ধব ঠাকরের নেতৃত্বাধীন শিব সেনা। কিন্তু, তাতে তারা আগামী বিধানসভায় কোনও বিরোধী দলনেতা দিতে পারবে না। সেক্ষেত্রে তাদের দলের যিনি নেতা নির্বাচিত হবেন, তাঁকে প্রধান বিরোধী দলের নেতা বলা হবে।
এই প্রেক্ষাপটে আগামী মহারাষ্ট্র বিধানসভায় কোনও বিরোধী দলনেতা থাকবেন না। ঠিক যেমনটা হয়েছিল এর আগের লোকসভায়। ২০১৯ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত লোকসভায় কোনও বিরোধী দলনেতা ছিলেন না। কারণ, কোনও রাজনৈতিক দলের কাছে এককভাবে লোকসভার ১০ শতাংশ আসনই ছিল না।