জীবনের শেষ পর্বে পৌঁছে ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রাম এবং মহাত্মা গান্ধী সম্পর্কে দৃষ্টিভঙ্গী পালটেছিলেন ব্রিটেনের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী উইনস্টন চার্চিল। সম্প্রতি এই দাবি করেছেন সে দেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন।
সম্প্রতি আমেরিকায় বর্ণবৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের নিশানায় ইতিহাস খুঁড়ে হাজির করা হয়েছে চার্চিলকে, প্রধানমন্ত্রী হিসেবে যাঁর অন্যতম অবদান ১৯৪৩ সালে ভারতে মন্বন্তরের জন্ম দেওয়া। লন্ডনের পার্লামেন্ট স্কোয়্যারে প্রয়াত প্রধানমন্ত্রীর মূর্তির নীচে আন্দোলনকারীরা লিখে দিয়েছে ‘জাতি বিদ্বেষী’।
পার্লামেন্ট চত্বর থেকে ঐতিহাসিক ব্যক্তিত্ববর্গের মূর্তি সরানোর যে দাবি তুলেছেন বিক্ষুব্ধরা, তার বিরোধিতা করে চলেছেন জনসন। দ্য ডেইলি টেলিগ্রাফ পত্রিকায় দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়েছেন, ব্রিটেনে জাতিগত বৈষম্য অনেকটাই প্রশমিত হয়েছে। তবে এই বিষয়ে আরও অনেক কিছু করার বাকি রয়েছে বলেও তিনি স্বীকার করেছেন।
চার্চিল সম্পর্কে নিজের বইয়ে জনসন তাঁর পূর্বজকে একজন ‘বীর’ বলে সম্বোধন করেছেন এবং রাজনীতিবিদ হিসেবে তিনি বিভিন্ন মত পোষণ করতেন বলেও দাবি করেছেন জনসন।
তিনি জানিয়েছেন, ‘যেমন হয়ে থাকে, সময়ের সঙ্গে বদলে গিয়েছিলেন চার্চিল। ভারত সম্পর্কে নিজের ধারণা পালটে গিয়েছিল এবং ভারতের স্বাধীনতা অর্জন সম্পর্কেও। ১৮৯০-এর দশকে ইসলাম সম্পর্কে যা যা বলেছিলেন, তা-ও পালটে গিয়েছিল এবং ১৯৪০-এর দশকে তিনিই নির্মাণ করেছিলেন রিজেন্টস পার্ক মসজিদ।’
এর পর জনসন লিখেছেন, ‘তবে সবচেয়ে বড় কথা হল, অনেকেই যেটা হলেছেন যে, তাঁর বিরুদ্ধে জাতিগত বৈষম্যের অভিযোগ তোলা নিছক পাগলামি। মনে রাখতে হবে, বৈষম্যের নামে অত্যাচারের বিরুদ্ধে তিনি একা রুখে দাঁড়িয়েছিলেন। তাঁর অনমনীয় মনোবল ছাড়া আমাদের দেশও ইউরোপের বাকি অংশের মতো সেই নির্যাতনের কবলে পড়ত।’
চার্চিল-অন্ত-প্রাণ জনসন আবার দাবি করেছেন, তাঁর শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত ব্রিটিশ পার্লামেন্ট চত্বর থেকে চার্চিলের মূর্তি সরানোর বিরোধিতা করে যাবেন।