ওঝার হাতে বেধড়ক মার। আর তার জেরে প্রাণ গেল এক কিশোরের। অভিযোগ এমনটাই। হাড়হিম ঘটনা মহারাষ্ট্রের সাংলি জেলায়। এদিকে ওই ওঝা দাবি করেছিলেন ১৪ বছরের ওই কিশোরকে ভূতে ধরেছে। এরপর তিনি ভূত তাড়াতে নানা কারিকুরি শুরু করেন।
মৃতের নাম আরিয়ান দীপক ল্যাংড়ে। গত ২০ শে মে তাকে বেধড়ক মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। এদিকে সম্প্রতি এই ঘটনার কথা জানাজানি হতেই যুক্তিবাদী সংগঠনের লোকজন পুলিশের দ্বারস্থ হয়। কীভাবে শুধু মাত্র কুসংস্কারের উপর ভিত্তি করে একজন কিশোরকে এভাবে খুন করা হল তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তারা।
অন্ধশ্রদ্ধা নির্মূলন সমিতির অ্যাক্টিভিস্ট জানিয়েছেন, গত কয়েকদিন ধরেই ওই ছেলেটি জ্বরে ভুগছিল। কিন্তু চিকিৎসা করার পরেও তার শারীরিক অবস্থার উন্নতি হচ্ছিল না।
এরপর কর্ণাটকের এক ওঝার কাছে তাকে নিয়ে যান পরিবারের লোকজন। নাম আপ্পাসাহেব কাম্বলে। তিনি দাবি করে, ছেলেটিকে ভূতে ধরেছে। এরপর তাকে বেধড়ক মারতে শুরু করেন। এদিকে এত মার খেয়ে আরও অসুস্থ হয়ে পড়ে ছেলে। এরপর তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই মৃত্যু হয় তার। এরপর ওই ওঝার বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে অভিযোগ জানানো হয়েছে।
এদিকে কর্ণাটকে কুসংস্কার বিরোধী আইন সেভাবে নেই। সেকারণে আপাতত ওই ওঝার বিরুদ্ধে ৩০৪ ধারা প্রয়োগ করা হয়েছে। একটি জিরো এফআইআর করা হয়েছে। এরপর এটি নির্দিষ্ট থানায় ফরোয়ার্ড করে দেওয়া হবে। তবে সূত্রের খবর, কর্ণাটক পুলিশও এনিয়ে তদন্ত করবে।
তবে যুক্তিবাদীদের দাবি, এই ধরনের অন্ধ কুসংস্কারের বলি হতে হল এক তরতাজা কিশোরকে। ওই ওঝার কঠোর শাস্তির দাবি তুলেছেন তারা। তাদের মতে, এই ধরনের কুসংস্কার কোনওভাবেই মেনে চলা ঠিক নয়। এতে জীবনে বড় বিপর্যয় নেমে আসতে পারে। সেক্ষেত্রে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া দরকার। সেই সঙ্গেই সাধারণ মানুষের মধ্যে এনিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি করা দরকার। জ্বর হলে সবার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া দরকার। বিজ্ঞান ভিত্তিক চিকিৎসা করতে হবে। কখনওই কুসংস্কার, ঝাড়ফুক, তুকতাক নয়। এতে বেশি বিপদ হতে পারে।