স্ত্রী কোনও সম্পত্তি বা দাসী নন। তাই বলপূর্বক তাঁকে যেখানে খুশি থাকতে বাধ্য করা যাবে না। মঙ্গলবার এক মামলার শুনানিতে এক ব্যক্তিকে এমনই জানিয়েছে শীর্ষ আদালত।
মামলার শুনানিতে সুপ্রিম কোর্টের তিন বিচারপতির বেঞ্চ জানায়, জোর করে কোনও মহিলাকে বৈবাহিক সম্পর্কে আবদ্ধ রাখা যায় না। তাই তিনি অন্যত্র থাকতে চাইলে সেক্ষেত্রে স্বামী জোর করে তাঁকে থাকতে বাধ্য করতে পারেন না।
প্রায় ৩ বছর আগে ২০১৯ সালের এপ্রিলে উত্তরপ্রদেশের গোরক্ষপুরের পারিবারিক আদালতে হিন্দু বিবাহ আইন (এইচএমএ)-এর ৯ নং ধারায় ওই ব্যক্তির পক্ষে পাশ হওয়া বিবাহবন্ধনের অধিকার পুনরুদ্ধারের রায়ের বিরুদ্ধে এই মামলা দায়ের হয়েছিল শীর্ষ আদালতে।
অন্যদিকে আদালতে মহিলার অভিযোগ, ২০১৩ সালে বিয়ের পর থেকেই তিনি নির্যাতনের শিকার। বাপেরবাড়ি থেকে পণ নিয়ে আসার জন্য তাঁর উপর চরম অত্যাচার করতেন স্বামী। আর সেই কারণেই তিনি শেষমেশ সংসার ছাড়তে বাধ্য হন।
এরপর ২০১৫ সালে খোরপোশের জন্য মামলা করেন মহিলা। গোরক্ষপুরের আদালত অভিযুক্ত ব্যক্তিকে প্রতি মাসে ২০ হাজার টাকা খোরপোশ দেওয়ার নির্দেশ দেয়।
গোরক্ষপুর আদালতের নির্দেশের পরেই পারিবারিক আদালতে বিবাহবন্ধনের অধিকার পুনরুদ্ধারের আবেদন করেন ওই ব্যক্তি। সেখানে তাঁর আর্জিতে জানান যে তিনি স্ত্রীর সঙ্গে সংসার করতে রাজি। স্ত্রী তাঁর নিজের ইচ্ছায় আলাদা থাকলে তাঁর কিছু করণীয় নেই। তাই তাঁকে খরপোশের ভার থেকে মুক্তি দেওয়া হোক।
এলাহাবাদ হাইকোর্টে খরপোশের নির্দেশ মুকুবের আর্জি নিয়ে পিটিশন দাখিল করেন ওই ব্যক্তি। সেখানেও একই যুক্তি দেন। এলাহাবাদ হাইকোর্ট তাঁর আর্জি খারিজ করে। এরপরেই সুপ্রিম কোর্টের দারস্থ হন তিনি।
মহিলার আইনজীবী অনুপম মিশ্রর অভিযোগ, মহিলার স্বামীর মূল উদ্দেশ্য খরপোশের টাকা বাঁচানো। তাই তিনি এ ধরণের 'ফন্দি' আঁটছেন।
ওই ব্যক্তি স্ত্রীকে তাঁর কাছে ফিরে আসতে নির্দেশ দেওয়ার জন্য সুপ্রিম কোর্টে আর্জি জানায়। এরপরেই মামলার শুনানি দেয় সর্বোচ্চ আদালত।
বিচারপতি সঞ্জয় কিশন কাউল এবং বিচারপতি হেমন্ত গুপ্তের এসসি বেঞ্চ আর্জি খারিজ করেন। প্রত্যুত্তরে বলেন, ‘আপনি কী ভাবেন বলুন তো? একজন মহিলা কোনও সম্পত্তি বা দাসী নাকি যে আমরা তাঁকে বলব যে যান স্বামীর সঙ্গে গিয়ে বাস করুন।’