করোনা পরিস্থিতি ঘিরে বিশ্বের দিকে দিকে একাধিক ভয়াবহ ছবি উঠে আসছে। ওমিক্রন যখন ক্রমেই থাবা বসাতে শুরু করে দিয়েছে বিভিন্ন দেশে, তখন কোভিড বিধি নিয়েও একাধিক দেশে জারি হয়েছে নানান ধরনের বিধি। এদিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ঘটে গিয়েছে এক ভয়াবহ ঘটনা। সেখানে শিকাগো থেকে আইসল্যান্ডগামী এক বিমানে মাঝ আকাশে কোভিড টেস্টিং-এ এক মহিলার দেহে করোনার চিহ্ন পাওয়া যায়। কোভিড পজিটিভ সেই রোগীকে এরপরই আইসোলেশনে রাখা নিয়ে শুরু হয়ে যায় চাঞ্চল্য।
মিশিগানের স্কুল শিক্ষিকা মরিসা জানিয়েছেন, গত ১৯ ডিসেম্বর নাগাদ বিমানসফর করা কালীন মাঝ আকাশে তাঁর শরীরে অস্বস্তি বোধ হয়। গলায় অস্বস্তি বোধ হতেই তিনি বিমানের টয়লেটে গিয়ে নিজের ব়্যাপিড কোভিড টেস্ট করেন। সেই টেস্টেই ধরা পড়ে যে তিনি কোভিড পজিটিভ। আমেরিকার স্থানীয় চ্যানেল ডাব্লিউএবিসিতে এমনই সংবাদ উঠে এসেছে। আরও এক সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মরিসা জানান, এর আগে তিনি দুটি পিসিআর টেস্ট করিয়েছেন। বিমানে ওঠার আগে পর পর পাঁচটি ব়্যাপিড টেস্ট করিয়েছেন। তবে কোভিড পজিটিভ হিসাবে তিনি ধরা পড়েন বিমান ওঠার পর।
এদিকে, বিমান কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানিয়ে দেন মরিসা। মাঝ আকাশে এমন কোভিড পজিটিভ হওয়ার খবরে চাঞ্চল্য ছড়ায় বিমানে। এরপর বিমান পরিষেবা কর্তৃপক্ষ তাঁকে আলাদা কোনও দূরের জায়গায় বসানোর জন্য চেষ্টা করেন। তবি বিমান ছিল যাত্রীবোঝাই। আর ততক্ষণই সিদ্ধান্ত হয় যে, সফরের বাকি সময় কোভিড পজিটিভ মরিসাকে বিমানের টয়লেটে নিজেকে কোয়ারেন্টাইন করে রাখতে হবে। মরিসা নিজেই টয়লেটে থেকে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। এদিকে বিমানের বাথরুমের বাইরে তখন লিখে দেওয়া হয়, 'আউট উফ সার্ভিস'।
এদিকে, সকলের থেকে আলাদা হয়ে, টয়লেটে কার্যত ত্রস্ত হয়ে পড়েন মরিসা। তিনি এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, কোভিড পজিটিভ হওয়ার তথ্য সামনে আসতেই তাঁর আগে নিজের পরিবারের কথা মনে পড়ে। যাঁদের সঙ্গে তিনি বিমানে ওঠার আগে নৈশভোজ সেরে এসেছিলেন। ব্যাপক চিন্তায় পড়েন মরিসা। আবেগে কেঁদেও ফেলেছিলেন বলে তিনি জানান। এরপর আইসল্যান্ডে বিমান পৌঁছলে মরিসার টেস্ট হয়। তাতে তাঁকে ফের পজিটিভ পাওয়া যায়। আর তাঁর বাবা ও ভাই যেহেতু উপসর্গহীন ছিলেন , তাই তাঁদের পরবর্তী কানেক্টিং ফ্লাইটে সুইৎজারল্যান্ডে যেতে দেওয়া হয়। জানা গিয়েছে, আইসল্যান্ডের একটি হোটেলে এরপর ১০ দিন কোয়ারেন্টাইনে থাকেন মরিসা।