হিজাব না পরায় বাংলাদেশে তরুণীদের মারধর করার অভিযোগ উঠল। এক তরুণীকে কান ধরে ওঠবোস করানোর ভিডিয়োও ভাইরাল হয়ে গিয়েছে। ওই ভিডিয়োয় দেখা গিয়েছে যে একদল লোক জড়ো হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। আর তাদের সামনে ওই তরুণী কান ধরে ওঠবোস করছেন। সমস্বরে তারা গুনছে যে কতবার ওঠবোস করেছেন তরুণী। থেমে গেলেই বাঁশের লাঠি দিয়ে তাঁকে মারা হচ্ছে। আর অপর একটি ভিডিয়োয় আরও এক তরুণীকে হাউ-হাউ করতে কাঁদতে দেখা গিয়েছে। ছেড়ে দেওয়ার আর্জি জানাচ্ছেন। আর সেই ঘটনায় এক যুবককে আটক করেছে পুলিশ। মাদ্রাসার ছাত্র মহম্মদ ফারুকুল ইসলামকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বলে একাধিক রিপোর্টে জানানো হয়েছে। তারইমধ্যে কক্সবাজার টুরিস্ট পুলিশের দাবি, যাঁদের হেনস্থা করা হয়েছে, তাঁরা তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ। আর তার জেরে পালটা প্রশ্ন উঠেছে যে তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ হলে নিরাপত্তার ক্ষেত্রে হাত তুলে নেবে পুলিশ?
মধ্যযুগীয় বর্বরতা কক্সবাজারে
সেই প্রশ্নের অবশ্য সদুত্তর দিতে পারেনি পুলিশ। আর সেই পরিস্থিতিতে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পরে মহম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আমলে বাংলাদেশের সংখ্যালঘু, মহিলা, তৃতীয় লিঙ্গের মানুষের নিরাপত্তা দিয়ে নতুন করে প্রশ্নচিহ্ন উঠে গিয়েছে। বিশেষত সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে যাওয়া ভিডিয়োগুলি দেখে গা শিউরে উঠছে নেটিজেনদের। পুরোপুরি মধ্যযুগীয় বর্বরতা চলেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
‘বেহায়াপনার বিরুদ্ধে….’
যে ব্যক্তিরা সেরকম কাজ করেছে বা যারা সামনে দাঁড়িয়ে সেই 'দৃশ্য উপভোগ' করছিল, তাদের মানসিকতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে সংশ্লিষ্ট মহল। ফারুকুল নামে যে যুবককে আটক করা হয়েছে, তার সোশ্যাল মিডিয়া পেজে 'বেহায়ানার' বিরোধিতা করে পোস্ট দেখা গিয়েছে। বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম প্রথম আলোর প্রতিবেদন অনুযায়ী, নিজের সোশ্যাল মিডিয়া পেজে ফারুকুল লিখেছিল, 'আজ অফিস টাইম শেষ করে...আবার শুরু করব...বেহায়াপনার বিরুদ্ধে।'
আর 'বেহায়াপনার বিরুদ্ধে' ঠিক কী করেছিল, সেটা সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে যাওয়া ভিডিয়োয় দেখা গিয়েছে। বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, স্থানীয় ব্যবসায়ীরা দাবি করেছেন, কয়েকদিন ধরেই নিজেদের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা হিসেবে দাবি করা ফারুকুল-সহ একাধিক যুবকের দাপাদাপি শুরু হয়েছে।
'কক্সবাজার এখন আফগানিস্তানে পরিণত হয়েছে'
ওই প্রতিবেদন অনুযায়ী, এক ব্যক্তি অভিযোগ করেন যে কক্সবাজারে দাদাগিরি চালানো হচ্ছে। কোনও মহিলা একা থাকেন বা কোনও মহিলার যদি পোশাক পছন্দ না হয়, তাহলে তাঁদের মারধর করা হচ্ছে। কক্সবাজার এখন আফগানিস্তানে পরিণত হয়েছে।
‘দায় নেব না’
যদিও কক্সবাজারের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক শাহেদুল ইসলাম দাবি করেছেন, ফারুকুল নেতা বা সমন্বয়ক নন। কেউ ব্যক্তিগতভাবে এরকম কাজ করলে তাঁরা দায়ভার নেবেন না বলে জানিয়েছেন শাহেদুল।