গোয়ায় রমরমিয়ে চলছে দেহ ব্যবসা। আর তার জন্য ভারতের বিভিন্ন রাজ্য়ের পাশাপাশি বিশ্বের নানা দেশ থেকেও মেয়েদের ধরে এনে জোর করে এই ব্যবসায় ঠেলে দেওয়া হয়েছে। একটি সমীক্ষা থেকে এই তথ্য সামনে এসেছে বলে দাবি করা হচ্ছে।
এই সমীক্ষা নিয়ে সংবাদমাধ্যমে যে রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়েছে, তা রীতিমতো চাঞ্চল্যকর। তথ্য বলছে, ভারতের মধ্যে মহারাষ্ট্র, পশ্চিমবঙ্গ, দিল্লি এবং উত্তরপ্রদেশ থেকে সবচেয়ে বেশি পরিমাণে মেয়েদের গোয়ায় পাচার করা হচ্ছে।
অন্যদিকে, ভারতের পাশাপাশি অন্য়ান্য দেশ থেকেও গোয়ায় নারী পাচারের তথ্য সামনে এসেছে। সেই অনুসারে, মূলত - ভারতের দুই পড়শি রাষ্ট্র বাংলাদেশ এবং নেপাল থেকে মেয়েদের তুলে আনা হয় গোয়ায় দেহ ব্যবসা করানোর জন্য। দূরবর্তী দেশগুলির মধ্যে কেনিয়া থেকে সবথেকে বেশি সংখ্য়ায় গোয়ায় নারী পাচার করা হয়।
সংশ্লিষ্ট সমীক্ষাটি করেছে আর্জ্ (অন্যায় রহিত জিন্দেগি) নামে একটি এনজিও। তারা যে সমীক্ষা রিপোর্ট পেশ করেছে, সেটির নাম দেওয়া হয়েছে, 'সেক্স ট্যাফিকিং ইন গোয়া: সিচুয়েশন অ্য়ান্ড ইন্টারভেনশন (২০১৯-২০২৪)'।
এই সমীক্ষায় দাবি করা হয়েছে, গোয়ায় উদ্ধার হওয়া ৫০ জন মহিলা আদতে ছিলেন মহারাষ্ট্রের বাসিন্দা। এছাড়াও, উদ্ধার হওয়া মেয়েদের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দা ছিলেন ২০ জন। এবং দিল্লি ও উত্তরপ্রদেশ থেকে গোয়ায় পাচার করা হয়েছিল, এমন ১৫ জন করে মোট ৩০ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে।
ওই রিপোর্টেই পেশ করা তথ্য অনুসারে, গত সাড়ে তিন বছরে গোয়া পুলিশ মোট এমন ৯১ জনকে উদ্ধার করেছে, যাঁরা নানা বয়সের নারী। এঁরা সকলেই মানব পাচার চক্রের ফাঁদে পড়ে গোয়ার দেহ ব্যবসায় যুক্ত হতে বাধ্য হয়েছিলেন।
উদ্ধার হওয়া এই মেয়েদের অধিকাংশেরই বয়স ১৭ বছর থেকে ৩৪ বছরের মধ্যে এবং এঁরা বেশিরভাগই মহারাষ্ট্র ও পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দা। এছাড়াও, বেশ কয়েক জন অন্য়ান্য দেশের নাগরিক।
সবথেকে বেশি সংখ্যায় মেয়েদের উদ্ধার করা হয়েছিল ২০২১ সালে। সে বছর মোট ৩৬ জন কিশোরী, যুবতী ও মহিলাকে গোয়া থেকে উদ্ধার করা হয়।
এছাড়া, চলতি বছরের (২০২৪) প্রথম ছয় মাসের মধ্যে গোয়া পুলিশ আরও আটজন মহিলাকে পাচারকারীদের খপ্পড় থেকে উদ্ধার করেছে। সব মিলিয়ে মোট ৪০টি মানব পাচার সংক্রান্ত মামলা রুজু করা হয়েছে। যার মধ্য়ে অধিকাংশেরই তদন্ত চলছে। কয়েকটি ক্ষেত্রে অবশ্য চার্জশিট পেশ করা হয়ে গিয়েছে।