মহিলাদের রাতে কাজ করতে বারণ না করে সুরক্ষা নিশ্চিত করুন। রাজ্য সরকারের ‘রাত্তিরের সাথী’ প্রকল্প নিয়ে উষ্মাপ্রকাশ করে এমনই বলল সুপ্রিম কোর্ট। মঙ্গলবার আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালের ধর্ষণ এবং খুনের মামলার শুনানির সময় ভারতের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন তিন বিচারপতির বেঞ্চের বক্তব্য, মহিলারা বাড়তি কোনও ছাড় চাইছেন না। তাঁরা পুরুষদের তুলনায় বাড়তি কোনও সুবিধা চাইছেন না বলে মন্তব্য করেছে সুপ্রিম কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। সেই পরিস্থিতিতে রাজ্য সরকারকে ‘রাত্তিরের সাথী’ প্রকল্প সংশোধন করার নির্দেশ দিয়েছে শীর্ষ আদালত। যা মেনে নিয়েছে রাজ্য সরকার। রাজ্য জানিয়েছে, মহিলাদের একটানা ১২ ঘণ্টার বেশি শিফট না দেওয়ার যে পরামর্শ দেওযা হয়েছিল এবং মহিলাদের যতটা সম্ভব ‘নাইট ডিউটি’ না দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল, সেটা বাতিল করে দেওয়া হবে।
সুপ্রিম কোর্টে সওয়াল-জবাবে কী কী হল?
আইনজীবী (ডক্টরস ফর পেশেন্টস সংগঠনের তরফে): রাজ্য সরকারের রাত্তিরের সাথী প্রকল্পে বলা হয়েছে যে চিকিৎসক-সহ কর্মরত মহিলাদের যাতে একটানা ১২ ঘণ্টার বেশি কাজ করতে না হয়, সেই পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। সেইসঙ্গে মহিলাদের ক্ষেত্রে যতটা নাইট ডিউটি এড়ানো যায়, সেই পরামর্শ দেওয়া হয়েছে রাত্তিরের সাথী প্রকল্পে।
প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড়: কীভাবে আপনারা বলতে পারেন যে রাতে মহিলারা কাজ করতে পারবেন? কেন মহিলা চিকিৎসকদের গণ্ডির মধ্যে আটকে রাখা হবে? ওঁরা তো কোনওরকম ছাড় চাইছেন না। মহিলারাও (পুরুষদের) মতোই একই সময়ের শিফট করতে প্রস্তুত আছে। মিস্টার সিব্বল, আপনাদের এটা দেখতে হবে। আপনাদের (পশ্চিমবঙ্গ সরকার) কাজ হচ্ছে রাতের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। সেটা করতে হবে।
প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড়: পশ্চিমবঙ্গ সরকার যে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে, সেটা সংশোধন করা উচিত। সুরক্ষা প্রদান করা আপনাদের দায়িত্ব। আপনারা বলতে পারেন না যে রাতে মহিলা ডাক্তাররা কাজ করতে পারবেন না। পাইলট, সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা থেকে শুরু করে সকলেই রাতে কাজ করেন।
সিব্বল: ওই বিজ্ঞপ্তির পঞ্চম এবং ষষ্ঠ অংশ মুছে দেওয়া হবে।
পুরুষ ও মহিলা - সকলের জন্য কাজের উপযুক্ত পরিবেশ
তারইমধ্যে শীর্ষ আদালতে জানানো হয় যে জুনিয়র ডাক্তাররা একটানা ৩৬ ঘণ্টাও ডিউটি করেন। সেই প্রেক্ষিতে প্রধান বিচারপতি জানিয়েছেন যে মহিলাদের একটানা ১২ ঘণ্টার বেশি শিফট দেওয়া যাবে না বলে তাঁদের মেডিক্যাল কেরিয়ারকে ক্ষতিগ্রস্ত করা যাবে না। মহিলা, পুরুষ নির্বিশেষে জুনিয়র ডাক্তারদের যাতে উপযুক্ত পরিবেশে কাজ করতে পারেন, সেটার উপরে জোর দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।