বাংলা নিউজ > ঘরে বাইরে > বাংলাদেশে নারীর প্রধান ঘাতক স্বামী, ধর্ষণের মামলার থেকেও কম মেলে বিচার

বাংলাদেশে নারীর প্রধান ঘাতক স্বামী, ধর্ষণের মামলার থেকেও কম মেলে বিচার

বাংলাদেশে নারীর প্রধান ঘাতক স্বামী, ধর্ষণের মামলার থেকেও কম মেলে বিচার। (ছবিটি প্রতীকী, সৌজন্য পিকচার অ্যালায়েন্স/প্যাসিফির প্রেস/ই ম্যাকগ্রেগর/ডয়চে ভেলে)

বাংলাদেশে নারীদের যাঁরা হত্যাকাণ্ডের শিকার হন, তাঁদের অধিকাংশেরই খুনি হন তাঁদের স্বামী৷

বাংলাদেশে নারীদের যাঁরা হত্যাকাণ্ডের শিকার হন, তাঁদের অধিকাংশেরই খুনি হন তাঁদের স্বামী৷ এমনকী নিজেদের বাবা-মার বাড়িতেও খুন হন তাঁরা৷ আর শ্বশুরবাড়ি তো আছেই৷

স্বামীর হাতে স্ত্রী খুনের ঘটনা প্রায়ই ঘটছে৷ এর মধ্যে কোনওটি বেশ আলোচনায় আসে৷ সংবাদমাধ্যমে প্রতিবেদন হয়৷ কিন্তু অনেক ঘটনাই থাকে আড়ালে৷ আর যেগুলি নিয়ে আলোচনা হয় তার শেষ খবর আমরা রাখি না বা জানি না৷ পরিসংখ্যান বলছে, এইসব হত্যাকাণ্ডের শতকরা ৫০ ভাগ ঘটনায় মামলাই হয় না৷ আর মামলা যেগুলি হয়, তার মধ্যে বিচার হয় শতকরা পাঁচ ভাগেরও কম মামলায়৷

আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) হিসাবে চলতি বছরের প্রথম নয় মাসে ১৮০ জন নারী তাঁদের স্বামীর হাতে খুন হয়েছেন৷ এইসব হত্যা ঘটেছে স্বামীর বাড়িতেই৷ আর এইসব হত্যাকাণ্ডে মামলা হয়েছে মাত্র ৯১টি৷ ৮৯ টি হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মামলার কোনও তথ্য নাই আসকের কাছে৷

এই সময়ে ৬০ জন নারী তার শ্বশুরবাড়ির লোকজনের হাতে নিহত হয়েছেন৷ আর নিজ বাড়ির লোকজনের হাতে নিহত হয়েছেন ৬৩ জন৷ এইসব হত্যাকাণ্ডের ঘটনায়ও মামলার সংখ্যা অর্ধেকেরও কম৷

গত বছর স্বামীর হাতে স্ত্রী হত্যার ঘটনা ঘটেছে ২৪০টি৷ এর মধ্যে ১৪১টি ঘটনায় মামলা হয়েছে৷ ৯৯টি ঘটনায় মামলা হয়নি৷ শ্বশুরবাড়ির লোকজনের হাতে নিহত হয়েছেন ৭১ জন নারী৷ মামলা হয়েছে ৪১টি৷ তার আগের বছর স্বামীর হাতে স্ত্রী খুনের ঘটনা ঘটেছে ২১৮টি৷ এইসব হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মামলা হয়েছে মাত্র ১০৩টি৷ শ্বশুরবাড়ির লোকজনের হাতে নিহত হয়েছেন ৫২ জন নারী৷

আসকের পর্যবেক্ষণ বলছে, প্রধানত দুটি কারণে নারীরা তাদের স্বামীর হাতে হত্যার শিকার হচ্ছেন - যৌতুক এবং বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক৷ আসকের উপ-পরিচালক নীনা গোস্বামী বলেন, 'স্বামী অন্য নারীর সঙ্গে সম্পর্কের কারণে স্ত্রী'কে হত্যা করছেন৷ আর অন্য পুরুষের সঙ্গে সম্পর্ক আছে সন্দেহেও হত্যার শিকার হচ্ছেন স্ত্রী৷ আর বাংলাদেশে যৌতুকের বিষয়টি তো রয়েই গিয়েছে৷' যদিও বাংলাদেশে আইন করে যৌতুক নিষিদ্ধ করা আছে৷ শ্বশুর বাড়ির অন্য লোকজন প্রধান যৌতুকের কারণেই নারীকে হত্যা করেন৷ এছাড়া দাম্পত্য কলহের আরও কিছু কারণ আছে৷ তার মধ্যে প্রাধান্য বিস্তার এবং মতের মিল না হওয়াও কারণ৷ অন্যদিকে নারীরা তার বাবা-মায়ের বাড়িতে হত্যাকাণ্ডের শিকার হন পারিবারিক দ্বন্দ্ব এবং জমি-জমা বা সম্পত্তি নিয়ে বিরোধের জেরে৷

একদিকে মামলা যেমন কম হয়, অন্যদিকে মামলা হলেও বিচার পাওয়া কঠিন হয়ে পড়ে৷ এর প্রধান কারণ সাক্ষী প্রমাণের অভাব এবং বিচারে দীর্ঘসূত্রতা৷ নারী নিজের বাড়ি, শ্বশুরবাড়ি বা স্বামীর বাড়ি যেখানেই হত্যাকাণ্ডের শিকার হন না কেন, সেখানে সাক্ষী পাওয়া কঠিন৷ পাওয়া গেলেও শেষপর্যন্ত সেই সাক্ষীদের অনেকেই আদালতে যান না৷ আর হত্যাকাণ্ডকে অনেক সময়ই আত্মহত্যা বলে চালানো হয়৷ ফলে মামলা করাই কঠিন৷ থানা মামলা নেয় না৷ এরপর আদালতে যেতে হয়৷ তারপর থাকে ময়নাতদন্ত , ভিসেরা প্রতিবেদন, তদন্ত৷ আর এগুলো অনেক জটিল ও ঝামেলার বিষয়৷ স্ত্রী যখন খুন হন, তখন মামলায় প্রধানত বাদী হন স্ত্রীর পরিবারের সদস্যরা৷ তাদেরও অনেকে শেষ পর্যন্ত মামলাটি চালিয়ে নেওয়ার আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন৷ আর সন্তান থাকলে সেখানে 'সন্তানের ভবিষ্যত' চিন্তা করে সমঝোতা করা হয়৷

নীনা গোস্বামী জানান, ‘ধর্ষণের ঘটনায় আমরা শতকরা পাঁচ ভাগ মামলায় বিচার পেতে দেখি৷ আর স্ত্রী হত্যা মামলায় বিচারের হার তার চেয়েও কম৷' সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট ইশরাত হাসান বলেন, ‘অভিজ্ঞতায় দেখেছি এই ধরনের হত্যা মামলায় শেষ পর্যন্ত সাক্ষী পাওয়া কঠিন৷ আবার দারিদ্র্য বা সামাজিক চাপ ও প্রভাবের কারণে মেয়ের পরিবার শেষ পর্যন্ত সমঝোতা করে ফেলেন৷'

তাঁর মতে, এখন যৌতুকের বাইরেও আরও অনেক সামাজিক এবং পারিবারিক কারণে স্বামী বা স্বামীর পরিবারের লোকজনের হাতে নারীরা হত্যার শিকার হন৷ কিন্তু নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করতে হলে যৌতুকের কারণে হত্যাকাণ্ড ঘটতে হবে৷ অন্য কারণে হলে পেনাল কোডে মামলা হবে৷ তাই দ্রুত বিচার পাওয়ার আশায় যৌতুক দাবির ঘটনা না থাকলেও সেটা কারণ হিসেবে যুক্ত করা হয়৷ ফলে মামলা দুর্বল হয়ে যায়৷ আর পেনাল কোডে মামলা নিষ্পত্তি হতে বছরের পর বছর লেগে যায়৷ তাই তিনি মনে করেন, 'নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে হত্যার অন্যান্য কারণও যুক্ত করে আইনটি সংশোধন করা উচিত৷' আসক বলছে, বাংলাদেশে নারীরা প্রচলিত হত্যা, ডাকাতি বা ছিনতাইয়ের মত অপরাধের মুখে পড়ে প্রাণ হারান খুবই কম হন৷ তাঁরা স্বামীর হাতে এবং বাড়িতে হত্যার শিকার হন বেশি৷

(বিশেষ দ্রষ্টব্য : প্রতিবেদনটি ডয়চে ভেলে থেকে নেওয়া হয়েছে। সেই প্রতিবেদনই তুলে ধরা হয়েছে। হিন্দুস্তান টাইমস বাংলার কোনও প্রতিনিধি এই প্রতিবেদন লেখেননি।)

ঘরে বাইরে খবর

Latest News

Heart Care: এই ফলটি হার্টের নাকি খুব ভালো! আপনি কি এটি খান? আজ শেষ হচ্ছে রাজ্য সরকারি অর্থবর্ষ, চাপে পড়ে গিয়েছে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ দফতর বিজেপি প্রার্থী রেখা পাত্রের স্বাস্থ্যসাথী কার্ড আছে, বড় তথ্য ফাঁস করল তৃণমূল কঙ্গনাকে ‘যৌনকর্মী’ বলার শাস্তি? সুপ্রিয়াকে লোকসভা ভোটের টিকিট দিল না কংগ্রেস! লোকসভা ভোটে বহরমপুরে বাজিমাত করতে পারে BJP, হারতে পারেন দিলীপ, মহুয়া: সমীক্ষা আসন্ন নতুন বাংলা বছর ১৪৩০, নাকি ১৪৩১? পয়লা বৈশাখ কবে? রইল নববর্ষের খুঁটিনাটি কাকলির প্রচারে ‘থিম সং’, বানালো তৃণমূল ছাত্র পরিষদ আগে শুধু লেগে মারতাম তারপর...-কীভাবে বোলারদের ত্রাস হয়ে উঠেছেন, জানালেন হেড কিলো কিলো সোনা গায়ে পরতেন ‘বাপ্পিদা’, সেই সমস্ত গয়না এখন কার কাছে আছে জানেন খুঁজে বার করতে হয় ডিম! ইস্টার পালনের নানা অজানা নিয়ম ও তাৎপর্য অনেকেই জানেন না

Copyright © 2024 HT Digital Streams Limited. All RightsReserved.