েবেহাল দেশের হাল ফেরাতে শেষমেশ বিশ্ব ব্য়াঙ্কের সঙ্গে ১০ বছরের একটি সমঝোতায় আসতে রাজি হল পাকিস্তান। সংবাদ সংস্থা রয়টার্স সূত্রে জানা গিয়েছে, পাকিস্তানের ধুঁকতে থাকা অর্থনীতি চাঙ্গা করতে মোট ২০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার (২,০০০ কোটি মার্কিন ডলার) ঋণ দেবে বিশ্ব ব্যাঙ্ক।
গত বেশ কয়েক বছর ধরেই পাকিস্তানের অর্থনীতির অবস্থায় শোচনীয়। পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহ যে পাকিস্তানের অর্থনীতি যাতে সম্পূর্ণ ধ্বংস না হয়, তা নিশ্চিত করতে আন্তর্জাতিক আর্থিক তহবিল (আইএমএফ) বর্তমানে পাকিস্তানকে তাদের একটি ৭,০০০ কোটি মার্কিন ডলার মূল্যের 'বেল আউট প্রোগ্রাম'-এর অধীনে এনেছে।
তথ্যাভিজ্ঞ মহল বলছে, আসলে বিশ্ব ব্যাঙ্ক চাইছে পাকিস্তানে বিনিয়োগ আসুক। উল্লেখ্য, ২০২২ সালে একদিকে চরম রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং অন্যদিকে ভয়াবহ বন্যা পাকিস্তানের অর্থনীতিকেও কার্যত ডুবিয়ে ছেড়েছে। বস্তুত, এই দুই ঘটনাই পাকিস্তানের অর্থনীতিতে বাড়তি বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
কিন্তু, বিশ্ব ব্যাঙ্ক আর্থিক সহযোগিতা করতে এগিয়ে আসার পর এবার হয়তো পাকিস্তানে বিনিয়োগ করতে আগ্রহ প্রকাশ করবে আন্তর্জাতিক মহল। বিশ্ব ব্যাঙ্ক চাইছে পাকিস্তানের বেসরকারি ক্ষেত্রগুলি চাঙ্গা হোক। সেটা করতে পারলে ২০২৬ সালের পর থেকে পরিস্থিতি শোধরাতে শুরু করতে পারে।
বিষয়টি নিয়ে তিনি যে যথেষ্ট আশাবাদী, কার্যত সেই বার্তাই দিয়েছেন পাকিস্তানে নিযুক্ত বিশ্ব ব্যাঙ্কের আন্তর্জাতিক আর্থিক সহযোগিতা কান্ট্রি ম্যানেজার জীশান শেখ। তিনি বলেন, 'আমরা আসলে যে বিষয়টিকে মূলত গুরুত্ব দিতে চাইছি, তা হল - বেসরকারি ক্ষেত্রে যত বেশি করে সম্ভব বিনিয়োগ ঘটানো। সেটা করতে পারলেই পাকিস্তানে স্থিতিশীল উন্নয়ন হবে এবং নতুন করে কর্মসংস্থান হবে।'
এক্ষেত্রে বিশেষ কয়েকটি ক্ষেত্রে বিনিয়োগ টানার বিষয়ে জোর দিচ্ছেন জীশান। এগুলি হল - ‘শক্তি এবং জল সম্পদ, কৃষি ক্ষেত্র, আর্থিক ক্ষেত্রের সহজলভ্যতা, উৎপাদন শিল্প এবং ডিজিট্যাল পরিকাঠামো।’
এই ঘটনায় স্বাভাবিকভাবেই উচ্ছ্বসিত পাক প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ। তাঁর আশা, এর ফলে পাকিস্তানের মাটিতে নতুন করে সুযোগ ও সম্ভাবনা সৃষ্টি হবে। তিনি এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে সোশাল মিডিয়ায় পোস্টও করেছেন শেহবাজ। তাঁর মতে, পাকিস্তানে এমন ব্যবস্থা এই প্রথম।
উল্লেখ্য, দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান গ্রেফতার হওয়ার পর থেকেই পাকিস্তানে রাজনৈতিক অস্থিরতা তুঙ্গে উঠেছে। ইমরানের অনুগামীরা এখনও এতটুকুও জমি ছাড়তে নারাজ। তাঁরা মাঝমধ্য়েই বিরাট বিরাট সব প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করছেন। যার জেরে হিংসা পর্যন্ত ছড়াচ্ছে।
তথ্যাভিজ্ঞ মহল বলছে, পাকিস্তানে প্রায় ধ্বংস হয়ে যাওয়া অর্থনীতি এবং চরম রাজনৈতিক অস্থিরতাই বিনিয়োগকারীদের আকর্ষণ করতে ব্যর্থ হচ্ছে। বিশ্ব ব্যাঙ্ক চাইছে, এবার অন্তত এই পরিস্থিতিতে ধীরে ধীরে হলেও বদল আসুক।