রান্নাঘর, স্নান এবং লন্ড্রি থেকে প্রবাহিত জল পুনরায় পরিশুদ্ধ করে ব্যবহার করাই লক্ষ্য। কেন্দ্রীয় জলশক্তি মন্ত্রী গজেন্দ্র শেখাওয়াত এদিন বিশ্বজল দিবসে ধূসর জলের পুর্নব্যবহার নিয়ে বড় ঘোষণা করেন। এই প্রক্রিয়ার ফলে দেশে জলের চাহিদায় সামঞ্জস্য আসবে বলে মনে করা হচ্ছে।
এদিন কেন্দ্রীয় জলশক্তি মন্ত্রী একটি দেশব্যাপী প্রকল্পের উদ্বোধন করে। তিনি বলেন, যে ভারতে ২০২৪ সালের মধ্যে প্রতিটি গ্রামীণ পরিবারকে কলের জলের সাথে সংযুক্ত করার স্বপ্ন বাস্তবায়নের পথে রয়েছে। সেনেগল রওনা হওয়ার আগে কেন্দ্রীয় জলসম্পদ মন্ত্রী 'সুজালাম ২.০' প্রকল্পটি উদ্বোধন করেন ভিডিয়ো কনফারেন্সিং এর হাত ধরে। বিস্ময়করভাবে শুধুমাত্র গ্রামীণ ভারতেই প্রতিদিন একটি ৩১,০০০ মিলিয়ন টন ধূসর জল নিষ্কাশন করা হয়, যা সরকারী তথ্য অনুসারে নষ্ট হয়ে যায়, যদি সারা দেশে সমানভাবে সঞ্চয় করা হয় তবে খরা মোকাবেলায় যথেষ্ট। কেন্দ্রীয় জলশক্তি মন্ত্রক বলছে,ভারতের ১৯০ মিলিয়ন গ্রামীণ পরিবারের মধ্যে, ১৯ মিলিয়ন পরিবারের কলের মাধ্যমে জলের সংযোগ রয়েছে এপর্যন্ত, জলশক্তি মন্ত্রী বলেছেন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে দেশটি এই মাইলফলকগুলি অতিক্রম করতে পেরেছে কারণ জলের চাহিদা দ্রুতগতিতে বাড়ছে। সেই সুরই কার্যত শোনা গিয়েছে, কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর কণ্ঠে। গজেন্দ্র শেখাওয়াত বলছেন,'জলের চাহিদা ক্রমাগত বাড়ছে এবং আমাদের সংরক্ষণ করতে হবে।'
তবে এখনও পর্যন্ত জলের চাহিদা মেটানোর ক্ষেত্রে বিভিন্ন দিক থেকে বড়সড় চ্যালেঞ্জ সামনে এসে যাচ্ছে। আর সেই চ্যালেঞ্জের মোকাবিলায় একটি বড় দিক হল এই ধূসর জলের ব্যবহার। কেন্দ্রীয় জলসম্পদ মন্ত্রী বলেছেন, 'জল সত্যিই ভারতের দুর্লভ সম্পদ হয়ে উঠেছে।' উল্লেখ্য, কখনও কখনও, দেশের জল সংকটের প্রভাব অর্থনীতিতে ছড়িয়ে পড়তে পারে। ১৩ মার্চ, ২০১৫-এ, পশ্চিমবঙ্গের ফারাক্কার কাছে গঙ্গার জল এতটাই কম ছিল যে পূর্ব ভারতের বৃহত্তম বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি সাময়িকভাবে বন্ধ করে দিতে হয়েছিল। এটি বিদ্যুৎ বিভ্রাটের দিকে পরিচালিত করে যা একইভাবে শিল্প এবং পরিবারের সরবরাহ বন্ধ করে দেয়। মহারাষ্ট্রে, এই জাতীয় সংকটের সময় রেল ওয়াগনগুলিতে জল পরিবহন করা হয়। তবে ভারতে জলসংকটের নেপথ্যে সবচেয়ে বড় ইস্যু হল খারাপ বর্ষা। পরিসংখ্যান বলছে, ভারতের উপলব্ধ জলের প্রায় ৯০ শতাংশ কৃষিকাজে যায়। ওয়াটারএইড অনুসারে এই সংখ্যাটি চীনে ৬৪ শতাংশ এবং ব্রাজিলে ষাট শতাংশ। কৃষি বিশেষজ্ঞ অলোক নাথ বলছেন, 'কৃষিকাজে জলের চাহিদা অসামঞ্জস্যপূর্ণভাবে ব্য়াপক। এর অন্যতম কারণ বিনামূল্যে বিদ্যুৎ এবং ধানের মতো ফসলের জন্য প্রচুর ইনসেনটিভ।' উল্লেখ্য, বিভিন্ন ধরনের চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করার পরও ভারত জলের বৃহত্তম ভার্চুয়াল রপ্তানীকারক দেশ। কারণ জল নির্ভর বহু সামগ্রী ভারত থেকেই বিভিন্ন দেশে রপ্তানী হয়।