প্রয়াত হলেন ফরাসি সন্ন্যাসিনী লুসিল রান্ডন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ১১৮। তাঁকে বিশ্বের সবথেকে বয়স্ক মানুষ হিসাবে গণ্য করা হত। ১১৮ বছর বয়সে জীবনের জার্নিতে ইতি পড়ল তাঁর। মঙ্গলবার সংবাদ সংস্থা এএফপি সূত্রে এমনটাই খবর। তখনও প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয়নি। ১৯০৪ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি জন্ম হয়েছিল তাঁর।
সংস্থার মুখপাত্র ডেভিড তাভেলা জানিয়েছে ঘুমের মধ্যেই চলে গিয়েছেন তিনি। নার্সিংহোমেই প্রয়াত হয়েছেন। এটা অত্যন্ত দুঃখের। কিন্তু তিনি সবসময় ইচ্ছা প্রকাশ করতেন যে তিনি তাঁর প্রিয় ভাইয়ের সঙ্গে পরলোকে দেখা করতে চান। এটা তাঁর কাছে একটি মুক্তি।
এর আগে ১১৯ বছর বয়সে জাপানের কানে তানাকার মৃত্যু হয়েছিল। ইউরোপিয়ানদের মধ্যে সবথেকে বয়স্ক মানুষ হিসাবে এতদিন বেঁচে ছিলেন ওই নান। চলে গেলেন তিনিও। ঠিক যে বছর নিউ ইয়র্কে প্রথম সাবওয়ে তৈরি হয়েছিল সেবছরই জন্মেছিলেন তিনি। শতবর্ষের কথা রাখা ছিল তাঁর কাছে।
খ্রীষ্টান প্রটেস্টান্ট পরিবারে জন্মেছিলেন তিনি। মাথার উপর তিন দাদা। আর তাদের একমাত্র বোন।এলসের দক্ষিণ শহরতলিতে থাকতেন তাঁরা। দাদা অন্ত প্রাণ ছিলেন বোন। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের শেষে ফিরে এসেছিলেন তাঁর দুই দাদা। এই মধুর স্মৃতি তিনি সারাজীবন আগলে রাখতেন। ১১৬ তম জন্মদিনে সংবাদ সংস্থার এএফপির কাছে তিনি এমনটাই বলেছিলেন। তিনি সেই সময় বলেছিলেন, জানেন এটা খুব দুর্লভ ছিল। পরিবারের দুজনের মারা যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তারা দুজনেই জীবিত অবস্থায় ফিরে এসেছিলেন।
একটা সময় তিনি প্যারিসে গভর্নেস হিসাবে কাজ করতেন। তিনি নিজেই বলতেন সেই সময়টা ছিল জীবনের খুব খুশির সময়। মাত্র ২৬ বছর বয়সে তিনি ক্য়াথলিক ধর্মে দীক্ষা নেন। ৪১ বছর বয়সে তিনি সন্ন্যাসিনী হওয়ার জন্য Daughters of Charityতে যোগ দেন।
এরপর তিনি একটি হাসপাতালে সেবামূলক কাজ শুরু করেন। ৩১ বছর তিনি সেখানে কাজ করতেন। এরপর তিনি তৌলং বলে একটি জায়গায় চলে যান। ভূমধ্যসাগরের উপকূল এলাকায় রয়েছে সেই জায়গা।
অনেক চিঠি আসত তাঁর কাছে। সব চিঠির উত্তর দিতেন তিনি। সকলের কাছে অত্যন্ত প্রিয় ছিলেন তিনি। ২০২১ সালে তিনি কোভিডে আক্রান্ত হয়েছিলেন। তবে সেই সময়ও মৃত্যু কেড়ে নিতে পারেনি তাঁকে। তবে এবার ঘুমের মধ্যেই চলে গেলেন তিনি।
তিনি গত বছর বলেছিলেন, অনেকে বলেন কাজ করে করে মরে গেলাম। কিন্তু আমি বলি কাজই আমাকে বাঁচিয়ে রেখেছে। ১০৮ বছর পর্যন্ত আমি কাজ করেছি। হয়তো এই কাজই ছিল তাঁর জীবনিশক্তির রহস্য। এমনটাই বলেন অনেকে।