আকাশজুড়ে পঙ্গপাল। সোমবার সকালে ঘুম থেকে উঠে এমন দৃশ্যের সাক্ষী থাকলেন জয়পুরের বাসিন্দারা। রাজস্থানের অর্ধেকের বেশি জেলায় সেই পঙ্গপালের প্রভাব পড়েছে।
কৃষি দফতরের আধিকারিকরা জানিয়েছেন, নাগপুরের দীদওয়ানা থেকে কিষানগড় রেনওয়াল এবং জোবনার দিয়ে জয়পুর শহরে ঢোকে পঙ্গপালের দল। কৃষি দফতরের সহ-অধিকর্তা বি আপ কাড়ওয়া বলেন, ‘রবিবার রাতে সারনা ছোর এবং সঙ্গনের তহসিলে পঙ্গপালের দলটি ছিল। ৫ কিলোমিটার লম্বা এবং ১.৫ কিলোমিটার চওড়া পঙ্গপালটির প্রায় ৩০ শতাংশকে নিয়ন্ত্রণে আনা গিয়েছে। ‘
বাকি পতঙ্গগুলি সোমবার সকালে জয়পুরে আসে। কিন্তু রাজস্থানের রাজধানীতে পঙ্গপালের আগমনে কিছুটা অবাক বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের মতে, সাধারণত পাকিস্তানের সীমান্তবর্তী পশ্চিম রাজস্থানের জেলাগুলিতে পঙ্গপালের হানা পরিলক্ষিত হয়। কৃষি কমিশনার ওম প্রকাশ বলেন, ‘পঙ্গপালের দলটি জয়পুর শহর ছাড়িয়ে দৌসার দিকে চলে গিয়েছে।'
প্রসঙ্গত, ২৬ বছর পর গত বছর মে’তে পঙ্গপালের হানার মুখে পড়েছিল রাজস্থান। যা চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলেছিল। তার জেরে ১২ টি জেলার কমপক্ষে ৬৭০,০০০ হেক্টর শস্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল বলে জানিয়েছিল কৃষি দফতর। ক্ষতির অঙ্কটা প্রায় ১,০০০ কোটি টাকা ছিল। কেন্দ্র জানিয়েছে, চলতি বছর মে-জুনে আরও একবার পঙ্গপাল হানার সতর্কতা জারি করেছে কেন্দ্র। গত ১১ মে সীমান্তবর্তী গঙ্গানগর জেলায় একটি হানার খবরও মিলেছে।
রাজস্থান ছাড়াও ক্ষতিগ্রস্ত পঞ্জাব, হরিয়ানা ও মধ্যপ্রদেশ।রাষ্ট্রপুঞ্জ বলেছে যে ভারতের ফসলের ওপর এবার বড় প্রভাব পড়তে পারে এই পঙ্গপালের।
পঙ্গপালরা দিনে ১৫০ কিলোমিটার চলবে ও এক কিলোমিটার বর্গফুটে যত পঙ্গপাল আঁটবে, তারা ৩৫,০০০ মানুষের দৈনিক খাদ্য নষ্ট করে দেবে। পঙ্গপাল হল মানুষের জানা সবচেয়ে পুরনো পরিযায়ী কীট। তিন মাসের মধ্যে ২০ গুণ সংখ্যায় বাড়ে পঙ্গপাল।
এই অঞ্চলে অত্যাধিক বর্ষা ও ভারতীয় মহাসাগরে ঘনঘন সাইক্লোনের জেরেই এত পঙ্গপাল হচ্ছে বলে মনে করা হচ্ছে। ২৬ বছরে দেশে এত পঙ্গপাল আসেনি। মূলত ইরান থেকেই এই পঙ্গপালগুলি এসেছে। ভারতীয় মহাসাগরের জলের তাপমাত্রার রকমফের একটি বড় কারণ। এছাড়াও বৃষ্টির ফলে মরু এলাকায় গাছপালা জন্মানোয় মরু পঙ্গপালগুলি সংখ্যায় বহুগুণ বেড়েছে।
আপাতত সরকার ড্রোন দিয়ে পঙ্গপাল চিহ্নিত করছে। একই সঙ্গে ব্রিটেন থেকে সরঞ্জাম আনা হচ্ছে, বিশেষ ফায়ার টেন্ডার ও স্প্রেয়ার ব্যবহার করা হবে বিশেষ অঞ্চলে।