এবার প্রায় ৪৭ বছরের পুরোনো একটি দাঙ্গার রিপোর্ট চাইল উত্তরপ্রদেশের যোগী আদিত্যনাথের সরকার! আজ থেকে সাড়ে চার দশকেরও বেশি সময় আগে যে দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়েছিল সেরাজ্যের সম্ভল এলাকায়।
সূত্রের দাবি, সেই দাঙ্গা বেশ কয়েক দিন ধরে চলেছিল। যার জেরে বহু মানুষকেই প্রাণ খোয়াতে হয়েছিল। আহত হয়েছিলেন আরও অনেকে। সব মিলিয়ে মোট ১৬৯টি মামলা রুজু করা হয়েছিল। ঘটনার জেরে পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহ হয়ে উঠেছিল যে টানা প্রায় দু'মাস ওই এলাকায় কার্ফু বলবৎ করে রাখা হয়েছিল।
তথ্য বলছে, ১৯৭৮ সালে সম্ভলে যে দাঙ্গা হয়েছিল, সেই দাঙ্গায় প্রাণ হারাতে হয়েছিল ২৪ জনকে। কিন্তু, গত মাসে যোগী আদিত্যনাথ হঠাৎই দাবি করেন, আটাত্তরের সেই সম্ভল দাঙ্গায় অন্তত ১৮৪ জনকে একসঙ্গে জ্যান্ত পুড়িয়ে মারা হয়েছিল। এবং আরও বহু মানুষকে দাঙ্গার কারণে চিরকালের মতো ভিটে মাটি হারাতে হয়েছিল। সেই সংখ্য়া সরকারি তথ্যের তুলনায় অনেকটাই বেশি বলেও দাবি করেন যোগী।
এদিকে, এই ঘটনায় নতুন করে রিপোর্ট পেশের খবর প্রকাশ্য়ে আসতেই জল্পনা শুরু হয়, এবার হয়তো পুরোনো সব দাঙ্গার ঘটনাগুলিই 'রিওপেন' করা হবে। যদিও সম্ভলের পুলিশ সুপারের কৃষ্ণ কুমার বিষ্ণোয়ি জানান, এটি একেবারেই ভুয়ো খবর।
তিনি স্পষ্ট করে জানান, রাজ্য সরকার কেবলমাত্র ১৯৭৮ সালের দাঙ্গা নিয়েই নতুন করে রিপোর্ট চেয়েছে। যা সম্ভব শহরে ছড়িয়ে পড়েছিল। সেই সময় এই শহর মোরাদাবাদ জেলার অন্তর্ভুক্ত ছিল। দাঙ্গা চলেছিল প্রায় এক সপ্তাহ ধরে।
পুলিশ সুপার আরও জানিয়েছেন, পরবর্তীতে উত্তরপ্রদেশ বিধান পরিষদের সদস্য শ্রী চন্দ্র শর্মা একটি চিঠি পাঠিয়েছেন। সেই চিঠিতে আটাত্তরের দাঙ্গার নতুন করে তদন্ত করার দাবি তোলা হয়েছে।
পুলিশের আরও এক আধিকারিক জানিয়েছেন, এই বিষয়টি নিয়ে সম্ভল পুলিশের কাছে দু'টি চিঠি এসেছে। যার একটি পাঠানো হয়েছে রাজ্য়ের স্বরাষ্ট্র দফতরের সহ-সচিবের কার্যালয়ের তরফ থেকে। এবং অন্য চিঠিটি পাঠানো হয়েছে পুলিশ সুপার (মানবাধিকার)-এর পক্ষ থেকে।
এরপরই পুলিশ সুপার ও জেলাশাসকের মধ্য়ে এ নিয়ে চিঠি চালাচালি হয়। এবং তারপর স্থির করা হয়, একটি সম্পূর্ণ রিপোর্ট তৈরি করে রাজ্য সরকারের কাছে পাঠানো হবে। পুলিশের দাবি, আটাত্তরের দাঙ্গা নিয়ে আরও গভীরে তদন্ত করার জন্যই এই রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে। এবং তা আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে জমা করা হবে।