বিধানসভায় দাঁড়িয়ে মহাকুম্ভকে 'মৃত্যুকুম্ভ' বলে আখ্যা দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বার্তাসংস্থা এএনআই-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে যোগী আদিত্যনাথ সেই মন্তব্যের জবাব দিলেন। বললেন, 'মৃত্যুকুম্ভ না প্রয়াগরাজে মৃত্যুঞ্জয়কুম্ভ হয়েছে।' যোগী আদিত্যনাথ বলেন, 'জানুয়ারি ১২ থেকে ফেব্রয়ারি ২৬ পর্যন্ত রোজ বাংলা থেকে ৫০ হাজার থেকে ১ লাখ ভক্ত প্রয়াগরাজে আসছিলেন। পশ্চিমবঙ্গ সরকার নিজেদের রেল স্টেশনে এত সংখ্যক ভক্ত দেখে ভয় পেয়ে গিয়েছিল। পশ্চিমবঙ্গ সরকার হোক, কংগ্রেস হোক, আরজেডি কিংবা সমাজবাদী পার্টি... তারা কুম্ভ নিয়ে যা বলেছে, সেটা তাদের তোষণের রাজনীতির উদাহরণ।' (আরও পড়ুন: ভূপেশ বাঘেলের বাড়িতে CBI হানা, আরও বিপাকে পড়তে চলেছেন ছত্তিশগড়ের প্রাক্তন CM?)
আরও পড়ুন: 'গোপন ইন্টেল' পাওয়ার পর মার্কিন বাহিনীর কর্তার সাথে বৈঠক বাংলাদেশি সেনা প্রধানের
উল্লেখ্য, প্রয়াগরাজে ত্রিবেণী সঙ্গমে পূণ্যার্থীদের হুড়োহুড়ির জেরে মৃত্যু হয়েছিল বহু তীর্থযাত্রীর। এর মধ্যে বাংলারও বেশ কয়েকজন ছিলেন। রিপোর্ট অনুযায়ী, মৌনী অমাবস্যায় পূণ্যস্নান করতে গিয়ে প্রয়াগরাজে মৃত্যু হয় তাদের। এই নিয়ে রাজনৈতিক তরজা তুঙ্গে উঠেছিল। জানা গিয়েছিল, বিরল 'ত্রিবেণী যোগে' পূণ্যস্নানের জন্যে হুড়োহুড়ির মধ্যে পদপিষ্ট হন বহু। বিরোধীরা অব্যবস্থার অভিযোগ তোলে যোগীর সরকারের বিরুদ্ধে। সেই ইস্যু নিয়েই পরবর্তীতে পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভায় মমতা 'মৃত্যুকুম্ভ' বলে অভিহিত করেছিলেন প্রয়াগের এই ধর্মীয় মহাসমাগমকে। যদিও তাঁর দলের একাধিক নেতা কুম্ভে গিয়ে স্নান করে আসেন। রচনার মতো সেলিব্রিটি রাজনীতিবিদের মুখে কুম্ভের ব্যবস্থাপনার প্রশংসাও শোনা গিয়েছিল। (আরও পড়ুন: '…আমরা সততার পরিচয় বহন করি না', 'যুদ্ধাবস্থায়' থাকা বাংলাদেশ নিয়ে বললেন ইউনুস)
এদিকে প্রয়াগের কুম্ভ মেলাকে বিধানসভায় ‘মৃত্যুকুম্ভ’ বলে উল্লেখ করায় মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে অভিযোগ জানাতে রাজ্যপালের কাছে গিয়েছিলেন বিরোধী দলেতা শুভেন্দু অধিকারী সহ বিজেপি বিধায়করা। বিধানসভার কার্যবিবরণী থেকে মুখ্যমন্ত্রীর ওই মন্তব্য বাদ দেওয়ার দাবি জানিয়েছিলেন তাঁরা। এদিকে বিজেপির রাজ্য সভাপতি তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার এই ইস্যুতে চিঠি লিখেছিলেন রাজ্যপালকে।
কুম্ভ নিয়ে কী বলেছিলেন মমতা?
১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫। বিধানসভার বাজেট অধিবেশনে বক্তব্য পেশের সময় নাম না করে বিজেপি নেতৃত্বাধীন উত্তরপ্রদেশ সরকারকে তোপ দেগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বলেছিলেন, 'মহাকুম্ভ আমি নাই বা বললাম, ওটা মৃত্যুকুম্ভ হয়ে গিয়েছে! মৃত্যুকূপের মতো! আমি মহাকুম্ভকে সম্মান করি। আমি শ্রদ্ধা জানাই। পবিত্র গঙ্গা মাকে আমি সম্মান করি। কিন্তু, প্ল্যানিং না করে এত হাইপ তুলে, এত লোকের মৃত্যু! বললেন ৩০ জন। কথাটা কি সঠিক? কত জনকে ভাসিয়ে দিয়েছেন নদীতে? কত? হাজার হাজার! বড়লোক আর ভিআইপিদের জন্য লক্ষ টাকার ক্যাম্প। আর গরিব লোকেদের, সাধারণ লোকেদের জন্য লাইনে দাঁড়ান। ১৫ ঘণ্টা, ২০ ঘণ্টা দাঁড়িয়ে যদি একটা মাদুরেও বসে, ২০০০ টাকা! এইসব সিরিয়াস প্রোগ্রামে এত হাইপ তুলতে নেই। ফার্স্ট দেখতে হয় ক্যাপাসিটি আছে কিনা। প্ল্যানিংটা ভালো করে করতে হয়। মৃতদেহের উপর দিয়ে যাঁরা এই হাইপ তুলছেন, আর টাকা কামানোর জন্য ধর্মকে বিক্রি করছেন, তাঁদের আমি মন থেকে মেনে নিতে পারি না।'