অতুল সুভাষের চার বছরের ছেলেকে ঠাকুমার হেফাজতে দিতে রাজি হল না সুপ্রিম কোর্ট। মঙ্গলবার শীর্ষ আদালতের বিচারপতি বেলা এম ত্রিবেদী এবং বিচারপতি এন কোটিশ্বর সিংয়ের বেঞ্চ বলেছে, 'দুঃখের সঙ্গে বলছি যে শিশুটির কাছে মামলাকারী (অতুলের মা অর্থাৎ ঠাকুমা অঞ্জু দেবী) অপরিচিত। আপনি (অতুলের মা) যদি চান, তাহলে শিশুর কাছে যেতে পারেন। আপনি যদি শিশুকে নিজের হেফাজতে চান, তাহলে সেটার আলাদা প্রক্রিয়া আছে।'
যে মামলার প্রেক্ষিতে সুপ্রিম কোর্ট সেই মন্তব্য করেছে, তা দায়ের করেছেন অতুলের মা। গত ৯ ডিসেম্বর বেঙ্গালুরুর বাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয়েছিল অতুলের মৃতদেহ। মৃত্যুর আগে ৩৪ বছরের ইঞ্জিনিয়ার যে ভিডিয়ো রেকর্ড করেছিলেন, তাতে আত্মহত্যার জন্য স্ত্রী নিকিতা সিংহানিয়া এবং শ্বশুরবাড়ির লোকজনদের দায়ি করেছিলেন। তারপর নাতিকে নিজের রাখতে চেয়ে শীর্ষ আদালতে মামলা দায়ের করেন অতুলের মা। কিন্তু নাতি কোথায় আছে, তা নিকিতা জানাচ্ছেন না বলে অভিযোগ করেন।
অতুলের ছেলেকে বেঙ্গালুরুতে নিয়ে যেতে যান নিকিতা
তারইমধ্যে মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টে নিকিতার আইনজীবী দাবি করেন, হরিয়ানার ফরিদাবাদে একটি বোর্ডিং স্কুলে পড়ছে অতুলের সন্তান। তিনি বলেন, ‘আমরা শিশুটিকে বেঙ্গালুরুকে নিয়ে যাব। আমরা ওকে স্কুল থেকে নিয়ে চলে এসেছি। জামিনের শর্ত পূরণ করতে বেঙ্গালুরুতে থাকতে হবে মা'কে (নিকিতা)।’
অতুলের ছেলের সঙ্গে কথা ঠাকুমার, ছবি দেখানো হল
যদিও অতুলের মায়ের আইনজীবী দাবি করেন, ছয় বছরের কম বয়স্ক শিশুকে বোর্ডিং স্কুলে পাঠানো উচিত নয়। তিনি ছবি দেখিয়ে দাবি করেন যে অতুলের ছেলের বয়স যখন দুই ছিল, তখন তার সঙ্গে কথা বলছিলেন মামলাকারী অঞ্জু।
অতুলের ছেলেকে আদালতে পেশের নির্দেশ
সেই সওয়াল-জবাবের পরে সুপ্রিম কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশ দিয়েছে যে আগামী ২০ জানুয়ারি যখন মামলার পরবর্তী শুনানি হবে, সেদিন অতুলের ছেলেকে শীর্ষ আদালতে পেশ করতে হবে। সেইসঙ্গে বিচারপতি ত্রিবেদী এবং বিচারপতি সিংয়ের ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে যে 'মিডিয়া ট্রায়াল'-র ভিত্তিতে আদালতে শুনানি হবে না।
আর সুপ্রিম কোর্ট যেদিন সেইসব মন্তব্য করেছে, তার তিনদিন আগে নিকিতা, তাঁর মা নিশা এবং ভাই অনুরাগকে জামিন দিয়েছে বেঙ্গালুরুর আদালত। অতুলের দেহ উদ্ধারের পরে নিকিতা ও তাঁর পরিবারের সদস্যের বিরুদ্ধে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ১০৮ ধারা (আত্মহত্যার প্ররোচনা) এবং ৩ (৫) ধারায় (সাধারণ অভিপ্রায়) মামলা রুজু করা হয়ে।