কালিয়াচক হত্যাকাণ্ড যেমন এপার বাংলাকে নাড়িয়ে দিয়েছে, তেমনই একইরকম নৃশংস ঘটনা ওপার বাংলাকেও টলিয়ে দিয়েছে! প্রথম স্বামীর কাছ থেকে অপরাধমূলক কাজে হাত পাকিয়ে তা যুবতী প্রয়োগ করল পরিবারের উপর। আর শেষ হয়ে গেল গোটা পরিবার। ঘুমের ওষুধ খাইয়ে মা–বাবা–বোনকে খুন করল সেই যুবতী! যা কেউ বিশ্বাস করতে পারছেন না বহু মানুষ। ঘটনাটি ঘটেছে খোদ রাজধানী ঢাকার কদমতলিতে। এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে বাড়ির বড় মেয়ে মেহজাবিন ইসলাম মুনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। এই যুবতীর হাত থেকে প্রাণে বেঁচে গিয়েছেন দ্বিতীয় স্বামী এবং সন্তান। পুলিশ উপযুক্ত সময়ে ঘটনাস্থলে না পৌঁছলে দ্বিতীয় স্বামী শফিকুল ইসলাম এবং আগের পক্ষের মেয়ে তৃপ্তিয়াও তার নৃশংসতার শিকার হতো।
পুলিশ সূত্রে খবর, শুক্রবার বাবা–মা ও বোনকে হত্যা করে মেহজাবিন মুন। তারপর শনিবার ফোন করে মুন জানায়, পুলিশ দ্রুত না এলে দ্বিতীয় স্বামী ও সন্তানকে সে মেরে ফেলবে। তখনই পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে অন্য তিনজনের দেহ উদ্ধার করে। লালমিয়া সরকার রোডের ছ’তলা বাড়ির দোতলা থেকে উদ্ধার হওয়া দেহগুলি হল— মেহজাবিনের মা মৌসুমী ইসলাম, বাবা মাসুদ রানা এবং বোন জান্নাতুলের। আর আশঙ্কাজনক অবস্থায় মুনের দ্বিতীয় স্বামী ও সতীনের মেয়েকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। মেহজাবিনকে গ্রেফতার করে কদমতলি থানা পুলিশ।
হাড়হিম করা হত্যাকাণ্ডের কিনারা করতে গিয়ে পুলিশ কর্তারা জানতে পারেন, শুক্রবার রাতে পরিবারের সবাইকে ঘুমের ওষুধ খাবারের সঙ্গে খাওয়ায় মুন। সবাই অচৈতন্য হয়ে পড়লে মা–বাবা এবং বোনকে গলায় দড়ি দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে সে। দ্বিতীয় স্বামী ও শিশু সন্তানকে ঘুমের ওষুধ খাওয়ানো হয়েছিল। কিন্তু অল্পের জন্য বেঁচে গিয়েছেন তাঁরা।
জানা গিয়েছে, মেহজাবিন তার পরিবারের সবাইকে শেষ করে দিতে চেয়েছিল। প্রাক্তন স্বামীকেও খুন করেছিল। সেই মামলায় মেহজাবিন–সহ তার নিহত বাবা–মা ও বোনের জেল হয়েছিল। পাঁচ বছর পর সবাই জামিনে ছাড়া পায়। দু’দিন আগে স্বামী সন্তানকে নিয়ে মায়ের বাড়িতে বেড়াতে আসে সে। এসেই তার ছোট বোনের জান্নাতুলের সঙ্গে তার স্বামীর বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক রয়েছে বলে বাবা–মাকে অভিযোগ করে। তা নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়। আর তারপরেই ঘটে গেল তিন–তিনটি হত্যাকাণ্ড।