সোশাল মিডিয়ায় জনপ্রিয় হতে রিলের নেশায় প্রাণ খোয়ানোর ঘটনা ইদানীং প্রায়ই ঘটছে। সেক্ষেত্রে কিছুটা ব্যতিক্রমী মুকেশ কুমার! ২৩ বছরের এই যুবক নিজের জীবদ্দশাতেই 'মড়া' সাজলেন! তাও শুধুমাত্র রিলের শুটিং করার জন্য। এমন উদ্ভট কাণ্ডের জন্য তাঁকে গ্রেফতার করে সোজা শ্রীঘরে চালান করে দিয়েছে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ।
ঘটনাটি ঘটেছে উত্তরপ্রদেশের কাসগঞ্জ জেলায়। দিনের ব্যস্ত সময়ে পথচলতি মানুষজন হঠাৎই দেখতে পায়, রাস্তার উপর এক যুবকের 'মৃতদেহ' শোয়ানো রয়েছে।
একটি লাল চাদরের উপর শায়িত যুবকের ওই 'মৃতদেহে' ঢাকা দেওয়া রয়েছে ধবধবে সাদা চাদর। তাতে কয়েকটি ফুলের পাপড়ি ছড়ানো রয়েছে। সেইসঙ্গে, যুবকের গলায় পরানো রয়েছে একটি গাঁদা ফুলের মালা।
এহেন দৃশ্য দেখে স্বাভাবিকভাবেই পথচলতি মানুষজন এগিয়ে আসেন। আর ঠিক তখনই তাঁদের চমকে দিয়ে 'মড়া' জ্যান্ত হয়ে যায়। স্বস্থানেই উঠে বসেন ওই যুবক। তাঁদের সঙ্গে মশকরা করা হয়েছে বুঝে দর্শকদের মধ্যে হাসির রোল উঠলেও পুলিশ প্রশাসন মোটেও এতে বিশেষ মজা পায়নি।
ঘটনা সম্পর্কে অবহিত হওয়ার পরই মুকেশ কুমারকে গ্রেফতার করে স্থানীয় থানার পুলিশ। তাঁর বিরুদ্ধে আমজনতার জীবনে সমস্যা তৈরির অভিযোগ আনা হয়। ঘটনাটি উদাহরণ হিসাবে তুলে ধরে আমজনতাকে সচেতন করার জন্য সোশাল মিডিয়ায় প্রচারও চালানো হয় পুলিশের পক্ষ থেকে।
জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শ্রী রাজেশ ভারতী এই প্রসঙ্গে জানিয়েছেন, ঘটনাটি ঘটেছে উত্তরপ্রদেশের কাসগঞ্জ জেলার রাজ কোল্ড স্টোরেজ এলাকায়। আমজনতার উদ্দেশে একটি ভিডিয়ো বার্তাও দেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার।
সেই ভিডিয়ো বার্তায় শ্রী রাজেশ ভারতীকে বলতে শোনা যায়, 'রাস্তায় শুয়ে এই ভিডিয়োটি তৈরি করেছেন ওই যুবক। তাতে বাকি লোকজন চমকে গিয়েছেন। আমরা বিষয়টি যথেষ্ট গুরুত্ব সহকারে দেখছি। অভিযুক্ত যুবকের পরিচয় জানা গিয়েছে। তাঁর নাম মুকেশ কুমার। এই বিষয়ে আইনত যা যা করণীয় রয়েছে, আগামী দিনে আমরা সেই মতোই পদক্ষেপ করব।'
অন্যদিকে, এই ভিডিয়ো ভাইরাল হলেও নেটিজেনদের অধিকাংশই মুকেশের কাণ্ড দেখে বিরক্ত। তাঁদের মতে, নিজের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করার জন্য মুকেশ যা করেছেন, তা কখনই সমর্থনযোগ্য নয়। তাঁর এই আচরণ অত্যন্ত অপরিণত ও অসংবেদনশীল। সোশাল মিডিয়ায় জনপ্রিয় হওয়ার লোভ মানুষকে দিয়ে যে কত কিছু করিয়ে নিচ্ছে, সেই প্রসঙ্গ তুলেও অনেকে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।