২০০২ সালে গুজরাট দাঙ্গায় নিহত হয়েছিলেন প্রাক্তন কংগ্রেস সাংসদ এহসান জাফরি। সেই সময় আইনি লড়াই লড়ে শিরোনামে এসেছিলেন সেই কংগ্রেস নেতার বিধবা স্ত্রী জাকিয়া জাফরি। আজ শনিবার সকালে তিনি প্রয়াত হলেন। মৃত্যুর সময় তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৬ বছর। আমেদাবাদে মেয়ের বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
আরও পড়ুন: আমি তখন ৩ দিনের বিধায়ক... গোধরাকাণ্ডের সময় 'আবেগ ধরে রাখার' স্মৃতিচারণায় মোদী
পারিবারিক সূত্রে জানা গিয়েছে, আমদাবাদে মেয়ের বাড়ি রয়েছে জাকিয়ার। সেখানেই বেড়াতে গিয়েছিলেন। সকালের খাবার খাওয়ার পর সকলে মিলে বাড়িতে গল্প করছিলেন। সেই সময় আচমকা অস্বস্তি বোধ করেন জাকিয়া জাফরি। এরপর পারিবারিক চিকিৎসককে বাড়িতে ডাকা হয়। তবে তাঁকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি। সেখানে চিকিৎসক সকাল সাড়ে এগারোটা নাগাদ তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন বলে জানান জাকিয়ার ছেলে তানভীর জাফরি।
উল্লেখ্য, জাকিয়া জাফরি শুধুমাত্র কংগ্রেস নেতার স্ত্রী হিসেবে বা গুজরাট দাঙ্গায় আইনি লড়াই করে পরিচিত হননি। এসবের বাইরে তিনি একজন মানবাধিকার কর্মী হিসেবেও পরিচিত ছিলেন। তাঁর মৃত্যুতে পরিবারের পাশাপাশি বিভিন্ন মহলে শোকের ছায়া নেমেছে। মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে সমাজকর্মী তিস্তা সেতলভাদ এক্স হ্যান্ডেলে লিখেছেন, ‘জাকিয়া দিদি মানবাধিকার সম্প্রদায়ের একজন সহানুভূতিশীল নেত্রী ছিলেন। সকলেরই তাঁর কথা মনে পড়বে। এই অসময়ে তাঁর পরিবারের পাশে আছি। ’
উল্লেখ্য, গোধরায় সবরমতি এক্সপ্রেস ট্রেনের কামরা পোড়ানোর একদিন পর গুজরাটে হিংসা শুরু হয়। এরপর দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়ে। ২০০২ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি আমদাবাদের একটি মুসলিম পাড়া গুলবার্গ সোসাইটিতে ৬৯ জন নিহত জন। তার মধ্যে জাফরির স্বামী এহসান জাফরিও ছিলেন। জাকিয়া জাফরি গোধরা ট্রেন পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনার পরে দাঙ্গায় বৃহৎ ষড়যন্ত্রের জন্য শীর্ষ রাজনৈতিক নেতাদের দায়বদ্ধ করার জন্য সুপ্রিম কোর্টে আইনি লড়াই চালিয়ে যাওয়ার সময় শিরোনামে আসেন। জাকিয়া জাফরি ২০০২ সালের গুজরাট দাঙ্গায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং অন্য ৬৩ জনকে ক্লিন চিট দেওয়ার বিষয়ে একটি বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের অভিযোগের তদন্তের দাবিতে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেছিলেন। তখন গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন মোদী। ২০২২ সালে শীর্ষ আদালত জাফরির আবেদনকে খারিজ করে।