অভিযোগের পাল্টা অভিযোগ। জোম্যাটো ডেলিভারি এক্সিকিউটিভের বিরুদ্ধে ঘুসি মারার অভিযোগে মামলা করেছিলেন মহিলা। এবার সেই মহিলার বিরুদ্ধেই পাল্টা অভিযোগ দায়ের করলেন জোম্যাটোর এক্সিকিউটিভ।
কন্টেন্ট ক্রিয়েটর হিতেশা চন্দ্রানীর বিরুদ্ধে সোমবার ব্যাঙ্গালুরু ইলেকট্রনিক সিটি থানায় অভিযোগ দায়ের করলেন ডেলিভারি এক্সিকিউটিভ কামরাজ। মহিলার বিরুদ্ধে ৩৫৫ নম্বর (অপরাধজনক বলপ্রয়োগ) ও ৫০৬ (অপরাধী বানানোর ভীতি প্রদর্শন) নম্বর ধারায় অভিযোগ নথিভুক্ত করেছেন কামরাজ।
ঘটনাটি গত ১০ মার্চের। ইনস্টাগ্রামে ফ্যাশান ও বিউটি সংক্রান্ত ভিডিয়ো পোস্ট করেন চন্দ্রাণী হিতেশা। সেখানে তাঁর প্রায় ৫১,০০০ ফলোয়ার। জোম্যাটোর ডেলিভারি এক্সিকিউটিভের বিরুদ্ধে ঘুসি মেরে তাঁর নাক ফাটিয়ে দেওয়ার অভিযোগ করেন তিনি। সেদিন ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে মোবাইলে তাঁর রক্তাক্ত মুখের ভিডিয়ো করেন। জানান তাঁর সঙ্গে কী ঘটেছে। চন্দ্রানী জানান, 'দুপুর ৩.৩০ নাগাদ অর্ডার করেছিলাম। আসে ৪.৩০-এ। দেরি হওয়া নিয়ে প্রশ্ন করলেই অভব্য আচরণ করতে থাকেন ডেলিভারি বয়।'
'আমি ওঁকে জানাই যে হয় খাবার ফ্রি-তে দেওয়া হোক, নয়তো ফেরত নিয়ে যাওয়া হোক। এরপরেই উনি হঠাত্ই আমায় ঘুসি মারেন,' ঘটনার ব্যাখ্যা করেন মহিলা। জোমাটোর নিরাপত্তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি।
অল্প সময়েই ভাইরাল হয়ে যায় তাঁর সেই ভিডিয়ো। এখনও পর্যন্ত ২ কোটিরও বেশি ভিউ হয়েছে ভিডিয়োটিতে।
কমেন্টে মহিলার কাছে ক্ষমা চায় সংস্থা। তাঁর চিকিত্সার খরচ বহন করারও প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। সেই সঙ্গে অভিযুক্ত ডেলিভারি বয়ের বিরুদ্ধে যথোপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানায় সংস্থা।
তবে, এরপরেই ঘটনায় আসে নাটকীয় মোড়। হিন্দুস্তান টাইমস-কে দেওয়া বিবৃতিতে কামরাজ বলেন, 'উনি নিজেই অর্ডার ক্যানসেল করে দেন। এরপর আমাকে খাবারটা ফিরিয়ে নিয়ে যেতে বলা হয়। আমি মহিলার কাছে পার্সেল ফেরত চাই। উল্টে উনি আমাকে অভব্য গালিগালাজ শুরু করেন।'
শুধু তাই নয়, এরপর ওই মহিলা তাঁকে চটি ছুঁড়ে মারেন বলেও অভিযোগ কামরাজের। মহিলাকে ঘুসি মারার অভিযোগ নস্যাত্ করে কামরাজ বলেন, 'আমাকে উনি মারতে শুরু করেন। আমি খালি হাত দিয়ে আটকাচ্ছিলাম। আমি ওনার হাত সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করি। সেই সময়ে তাঁর নিজের হাতের আংটিই গিয়ে লাগে তাঁর নাকে। এভাবেই নাক ফেটে রক্ত বের হতে শুরু করে।'
Zomato-র তরফে ওই মহিলা ও ডেলিভারি এক্সিকিউটিভ, দুজনকেই সমানভাবে সাহায্য করা হবে বলে জানানো হয়েছে। মহিলার সুশ্রষার খরচ বহন করছে সংস্থা। অন্যদিকে কামরাজের আইনি লড়াই সংক্রান্ত ক্ষেত্রেও সহায়তা করা হবে বলে জানানো হয়েছে।
যদিও সংস্থার নীতি মেনেই আপাতত সাসপেন্ড করা হয়েছে কামরাজকে। তবে, তাঁর বেতন বন্ধ করা হয়নি।
সংস্থা জানায় যতক্ষণ না সত্য সামনে আসছে, ততক্ষণ দুই পক্ষেরই পাশে থাকব আমরা। সেই সঙ্গে সংস্থা জানায়, 'কামরাজ আমাদের সঙ্গে প্রায় ২ বছর কাজ করছেন। কাস্টমার রেটিং ৪.৭৫/৫ (যেটি কিনা খুবই ভাল) । এখনও পর্যন্ত প্রায় ৫,০০০ ডেলিভারি করেছেন তিনি।'
আপাতত অভিযোগকারিণী মহিলা ও কামরাজের সমর্থনে সোশ্যাল মিডিয়া দ্বিধাবিভক্ত। একদিকে যেমন হিতেশাকে অনেকে সমর্থন করছেন, পাশাপাশি কামরাজকেও পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন অনেকে। এমনকি অভিনেত্রী পরিণীতি চোপড়াও টুইট করে কামরাজের প্রতি সমর্থন দেখান।
আপনার কী মনে হচ্ছে? ঘটনার কোন দিকে গড়াবে? জানান কমেন্টে।