তামিল-হিন্দি বিতর্কের মধ্যে ন'বছরের পুরনো টুইটে গলায় কাঁটা হয়ে বিঁধল জোম্যাটোর প্রতিষ্ঠাতার। যে টুইট বর্ণবিদ্বেষীমূলক বলেও আক্রমণ শানালেন নেটিজেনদের একাংশ। সেইসঙ্গে কড়া ভাষায় প্রশ্ন করলেন, যিনি মঙ্গলবার সহনশীলতার জ্ঞান দিচ্ছিলেন, তাঁর নিজেরই তো সমস্যা আছে।
ভাষা বিতর্কের জর্জরিত থাকার মধ্যেই বুধবার জোম্যাটোর প্রতিষ্ঠাতা দীপিন্দর গোয়েলের একটি পুরনো টুইট ভাইরাল হয়ে যায়। তাতে তিনি লিখেছিলেন, ‘আপনারা কী জানেন, মুখে মুখে মার্কেটিংয়ের জন্য এম এবং এমকে (একটি ফুড রিটেল চেন) দক্ষিণ ভারতীয় লোকজনদের কাজে রাখে? ওঁরা সবসময় বলেন, ইয়াম এবং ইয়াম।’
২০১২ সালের ১৪ জুলাইয়ের টুইটটি দেখেই রীতিমতো ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন নেটিজেনরা। তামিল নেটিজেনদের দাবি, দক্ষিণ ভারতীয়দের কথা বলার ধরণ নিয়ে উপহাস করেছেন জোম্যাটোর প্রতিষ্ঠাতা। এক তামিল পোর্টালের সাংবাদিক বলেন, ‘আপনিই গতকাল আমাদের সহনশীলতার জ্ঞান দিচ্ছিলেন না? ঠিক তো? এবার নিজের কথাগুলোই গিলে ফেলুন। আশা করছি, অন্যের খামতি সইতে পারবেন এবং অন্যদের ভাষা ও আঞ্চলিক ভাবাবেগের প্রতি শ্রদ্ধা বজায় রাখবেন।’ সেই টুইটকে ঘিরে রীতিমতো দক্ষিণ ভারতীয় বনাম উত্তর ভারতীয় লড়াই বেঁধে যায়। এক নেটিজেন বলেন, ‘এমন একটা গোষ্ঠী থেকে এসেছেন, যে গোষ্ঠীর লোকজন thousands-কে thoujands বলেন।’
কিন্তু আচমকা কেন রোষের মুখে পড়লেন দীপিন্দর?
সেই ঘটনার সূত্রপাত দিনকয়েক আগে। সোমবার টুইটারে এক ব্যক্তি অপর একজনের সঙ্গে কথোপকথনের কয়েকটি ছবি (সত্যতা পৃথকভাবে যাচাই করেনি হিন্দুস্তান টাইমস বাংলা) পোস্ট করে লেখেন, 'জোম্যাটোয় খাবার অর্ডার দিয়েছিলাম। একটি পদ বাদ পড়ে গিয়েছিল। কাস্টমার কেয়ারের তরফে বলা হয়, সেই টাকা ফেরত দেওয়া যাবে না। কারণ আমি হিন্দি জানি না। সেইসঙ্গে আমায় জ্ঞান দেওয়া হয় যে ভারতীয় হওয়ায় আমার হিন্দি জানা উচিত। ওই ব্যক্তি (জোম্যাটোর কাস্টমার কেয়ার) তামিল না জানায় আমায় মিথ্যেবাদী বলেন। জোম্যাটো এভাবে একজন ক্রেতার সঙ্গে কথা বলে না।' সেই টুইটের সঙ্গে জোম্যাটো এবং জোম্যাটোর কাস্টমার কেয়ারকে ট্যাগ করেন।
সেই টুইটের পরই জোম্যাটোর তরফে টুইটারে ক্ষমা চাওয়া হয়। অভিযোগকারী সাফ জানান, হিন্দি নিয়ে যে মন্তব্য করা হয়েছে, তার জন্য জনসমক্ষে ক্ষমা চাইতে হবে জোম্যাটোকে। সেইমতো জোম্যাটোর তরফে জানানো হয়, অভিযুক্ত কাস্টমার কেয়ার এজেন্টের ব্যবহারে ক্ষমাপ্রার্থী ফুড ডেলিভারি সংস্থা। দেশের বৈচিত্রময় সংস্কৃতির প্রতি অবহেলার জন্য ওই কাস্টমার কেয়ার এজেন্টকে কাজ থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে। ওই এজেন্ট যে মন্তব্য করেছেন, তা সংস্থার মত নয়। সেইসঙ্গে আর্জি জানানো হয়, ‘দয়া করে জোম্যাটোকে বাতিল করবেন না (#Reject_Zomato)’।
কিন্তু সেখানে সেই বিতর্কে ইতি পড়েনি। বরং নতুন করে বিতর্ক উসকে দেন জোম্যাটোর প্রতিষ্ঠাতা। তিনি বলেন, ‘অজ্ঞাতভাবে কোনও ফুড ডেলিভারি সংস্থার সাপোর্ট সেন্টারে কারও ভুল একটি জাতীয় বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এখন আমাদের দেশে যা সহনশীলতা এবং ঠান্ডা মস্তিষ্ক আছে, তা অনেক বেশি হওয়া দরকার।’ তাতেই চটে যান নেটিজেনরা।