গায়ক জুবিন গর্গের মৃত্যুর তদন্তকারী দল শুক্রবার তাঁর নিরাপত্তা কর্মীকে গ্রেফতার করেছে বলে জানা গেছে। এর আগে জুবিনের তুতো ভাই সন্দীপন গর্গকে এই হাই প্রোফাইল মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছিল। এর একদিন পরই এই ঘটনা ঘটল। সন্দীপন কামরূপ জেলায় কর্মরত অসম পুলিশ সার্ভিসের (এপিএস) অফিসার ছিলেন। সংবাদ সংস্থা এএনআইয়ের খবরে বলা হয়েছে, প্রয়াত গায়কে দুই ব্যক্তিগত নিরাপত্তারক্ষী নন্দেশ্বর বোরা ও পরেশ বৈশ্যকে গ্রেফতার করেছে অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) বিশেষ তদন্তকারী দল। এই জুটি দীর্ঘদিন ধরে জুবিনের সাথে মোতায়েন ছিল।
এর আগে গত সপ্তাহে এই মামলায় দিল্লি থেকে গ্রেফতার করা হয় জুবিনের ম্যানেজার সিদ্ধার্থ শর্মা এবং সিঙ্গাপুর উৎসবের আয়োজক শ্যামকানু মহন্তকে। উল্লেখ্য, গত ১৯ সেপ্টেম্বর সিঙ্গাপুরে সাঁতার দুর্ঘটনার পরে মারা যান জুবিন। সেই সময় ঘটনাস্থলে ছিলেন তাঁর তুতো ভাই সন্দীপন। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, জুবিনের যখন শ্বাসকষ্ট হচ্ছিল এবং তিনি ডুবে যাচ্ছিলেন, তখন তাঁর ম্যানেজার কাউকে সাহায্য করতে দেননি। এদিকে জুবিনের ঘনিষ্ঠদের দাবি, জুবিন গর্গ একজন দক্ষ সাঁতারু ছিলেন। তাই তাঁর পক্ষে জলে ডুবে মারা যাওয়ার সম্ভাবনা বেশ কম ছিল।
এদিকে এই মামলায় ধৃত সন্দীপন গর্গকে ৭ দিনের পুলিশ হেফাজতে পাঠিয়েছে আদালত। জুবিন গর্গের মৃত্যুর তদন্তে এখনও পর্যন্ত সব মিলিয়ে ৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এর আগে এই মামলায় সঙ্গীতশিল্পী শেখরজ্যোতি গোস্বামী এবং গায়িকা অমৃতপ্রভা মহন্তকে গ্রেফতার করে অসম পুলিশ।
রিপোর্ট অনুযায়ী, জুবিনের ব্যান্ড সদস্য শেখরজ্যোতি গোস্বামী পুলিশি জেরায় অভিযোগ করেছেন, প্রয়াত শিল্পীর ম্যানেজার সিদ্ধার্থ শর্মা এবং অনুষ্ঠানের সংগঠক শ্যামকানু মহন্ত গায়ককে বিষ দিয়ে হত্যা করে থাকতে পারেন। এবং তাঁর মৃত্যুকে দুর্ঘটনাজনিত বলে ধামাচাপা দেওয়ার ষড়যন্ত্রও করে থাকতে পারেন। জেরায় শেখরজ্যোতি দাবি করেন, সিদ্ধার্থ শর্মার অনেক আচরণই সন্দেহজনক ছিল। শেখরজ্যোতি নাকি নিজেই সব ড্রিঙ্কসের আয়োজন করেছিলেন। অন্য কাউকে সেই কাজ তিনি করতে বারণ করেছিলেন। এদিকে জুবিনের মৃত্যুর দিনে বোটের নিয়ন্ত্রণ নিজের হাতে নিয়েছিলেন সিদ্ধার্থ। মাঝসমুদ্রে গিয়ে বোটটি টালমাটাল অবস্থা হয়েছিল।
এদিকে পুলিশকে শেখরজ্যোতি বলেছেন, যখন জলে নেমে জুবিন গর্গ নিশ্বাস নিতে পারছিলেন না, তখন নাকি সিদ্ধার্থ চেঁচিয়ে বলছিলেন, 'যেতে দাও, যেতে দাও'। এদিকে যখন জুবিন গর্গের নাক-মুখ দিয়ে যখন ফেনা জাতীয় জিনিস বেরোচ্ছিল, তখন সিদ্ধার্থ বারবার বলছিলেন, এটা অ্যাসিডের কারণে হয়ে থাকতে পারে। এদিকে শেখরজ্যোতি আরও জানান, বোটের কোনও ভিডিয়ো বাইরের লোককে দেখাতে বা পাঠাতে বারণ করেছিলেন সিদ্ধার্থ। এরই মাঝে সিঙ্গাপুর পুলিশ ফোর্স গায়কের ময়নাতদন্তের রিপোর্ট ভারতীয় হাইকমিশনের কাছে হস্তান্তর করেছে। পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, ময়নাতদন্তের রিপোর্টের একটি কপি এবং জুবিন গর্গের মৃত্যুর প্রাথমিক তথ্য ভারতীয় কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।