২ এপ্রিল, ২০১১-- ২৮ বছর পর ভারতকে বিশ্বকাপের স্বাদ এনে দিয়েছিলেন মহেন্দ্র সিং ধোনি ব্রিগেড। সে দিন চূড়ান্ত উন্মাদনায় ভেসে গিয়েছিল গোটা দেশ। ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামের সামনে মেরিন ড্রাইভ জুড়ে শুধুই আলোর রোশনাই আর উৎসবের মেজাজ। ১০ বছর আগে আরব সাগরের তীরে ভারতীয় ক্রিকেটের নতুন এক অধ্যায়ের সূচনা হয়েছিল। ভারতকে বিশ্বকাপ এনে দেওয়ার মূল কারিগর যাঁরা ছিলেন, জানেন সেই ১৫ জন মহারথী এখন ঠিক কী করছেন? কেমন আছেন?
1/16ভারতের বিশ্বকাপ জয়ের মুহূূর্ত।
2/16মহেন্দ্র সিং ধোনি: ধোনি মোট পাঁচটি বিশ্বকাপ খেলেছে। দু'টি একদিনের ক্রিকেটে, তিনটি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। তার মধ্যে চারটেতেই অধিনায়কত্ব করেছেন তিনি। দু'টি বিশ্বকাপ জিতেছেন। তবে ২০১১-র ২ এপ্রিলের রাতে তিনি কী করেছিলেন একেবারেই মনে করতে পারেন না। যদিও বিশ্বকাপ জয়ের পরদিনই তাঁকে দেখা গিয়েছিল, মাথা কামানো অবস্থায়। জানা গিয়েছিল, মানত ছিল বলে চুল কেটে ফেলেছেন তিনি। সেই ধোনিই ২০২০ সালের ১৫ অগস্ট আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানান। তবে তিনি এখনও আইপিএল খেলছেন। চেন্নাই সুপার কিংসের অধিনায়ক তিনি। ফাঁকা সময়ে পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানোর পাশাপাশি নিজের একটি ফার্ম তৈরি করেছেন। যেখানে উৎপাদিত ফসল বিদেশে রপ্তানি করা হয়।
3/16সচিন তেন্ডুলকর: মাস্টারব্লাস্টার জীবনে বহু সাফল্য পেয়েছেন। কিন্তু ২০১১ সালের আগে বিশ্বকাপ না পাওয়ার যন্ত্রণাটা তাঁর তীব্র ছিল। শেষ পর্যন্ত ২০১১-র ২ এপ্রিল বিশ্বকাপ জয়ের স্বাদ পান সচিন। ফাইনালে শ্রীলঙ্কাকে হারানোর পর তাঁকে কাঁধে নিয়ে গোটা মাঠে ঘুরেছিল টিম ইন্ডিয়া। এর পরেই অবশ্য ক্রিকেটের সব ফর্ম্যাট থেকে একে একে অবসর নেন সচিন। ২০১২ তে একদিনের ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়েছিলেন তিনি, আর ২০১৩ সালে টেস্ট ক্রিকেট থেকে। সচিন এখন পুরোদমে কমান্ট্রি করে বেড়াচ্ছেন। মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের পরামর্শদাতা হিসেবেও তিনি যুক্ত রয়েছেন। সেই সঙ্গে কিংবদন্তিদের নিয়ে অনুষ্ঠিত বিভিন্ন টুর্নামেন্টেও অংশ নিয়ে থাকেন। কিছু দিন আগে করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন মাস্টারব্লাস্টার। শুক্রবার তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়েছে।
4/16বীরেন্দ্র সেহওয়াগ: বিশ্বকাপের পর থেকেই সেহওয়াগের ফর্ম নানা কারণে পড়তে শুরু করে। তার মধ্যে চোট সমস্যা একটা বড় কারণ ছিল। জাতীয় দলেও তিনি ঠিক করে সুযোগ পাচ্ছিলেন না। শেষ পর্যন্ত ২০১৫ সালে ক্রিকেটকে বিদায় জানান বিরু। সেহওয়াগকেও এখন ধারাভাষ্যকর হিসেবে দেখা যায়। টিভি ব্রডকাস্টারদের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন তিনি। এ ছাড়াও কিছু দিন আগে বিশ্ব পথ নিরাপত্তা সিরিজে অংশও নিয়েছিলেন তিনি।
5/16গৌতম গম্ভীর: গম্ভীরের গল্পটাও অনেকটা সেহওয়াগের মতো। বিশ্বকাপের পর থেকেই পারফরম্যান্সের জন্য ক্রমশ বাকিদের থেকে পিছিয়ে পড়তে শুরু করেন গম্ভীর। শেষ পর্যন্ত ২০১৬ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানান। আর ২০১৮ সালে ঘরোয়া ক্রিকেট থেকে অবসর নেন। তার আগে অবশ্য কলকাতা নাইট রাইডার্সকে দু'বার আইপিএল চ্যাম্পিয়ন করেছেন গম্ভীর। এখন অবশ্য তিনি পুরোদমে রাজনীতিবিদ। বিজেপি-র সাংসদ গম্ভীর। তবে ক্রিকেট নিয়ে যে কোনও আলোচনা বা বিতর্কে সব সময়েই তাঁকে পাওয়া যায়।
6/16বিরাট কোহলি: বিশ্বকাপের পর থেকেই বিরাটের জীবন খুব দ্রুত বদলাতে শুরু করে। তাঁর কেরিয়ার গ্রাফটা সেই সময় থেকেই উর্ধ্বমূখী। ২০১৫ সালে ধোনি টেস্ট ক্রিকেটের অধিনায়কত্ব থেকে সরে দাঁড়ালে, তাঁকে দায়িত্ব তুলে দেওয়া হয়। ২০১৭ সালে বাকি দুই ফর্ম্যাটের ক্রিকেটের দায়িত্বও পান তিনি। দায়িত্ব নিয়ে বিরাট কিন্তু সফল। তিনি আইপিএলের দল রয্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুরও অধিনায়ক। এরই মধ্যে বলিউড কুইন অনুষ্কা শর্মাকে বিয়ে করেছেন। সম্প্রতি তাঁদের একটি মেয়ে হয়েছে। নাম ভামিকা। ক্রিকেটের পাশাপাশি বিরাট এখন ঘোরতর সংসারীও বটে।
7/16যুবরাজ সিং: শুধুমাত্র অসুস্থতার কারণে ভারতের অন্যতম প্রতিভাবান ব্যাটসম্যান খুব দ্রুতই ক্রিকেটকে বিদায় জানাতে বাধ্য হন। যুবরাজ সিংয়ের জীবনে সব কিছুই ঠিকঠাক চলছিল। কিন্তু হঠাৎ করেই তাঁর ক্যান্সার ধরা পড়ে। এই রোগের সঙ্গে লড়াই করাটা সহজ ছিল না। সেই লড়াইয়ে অবশ্য জয় পান ভারতের লড়াকু এই ব্যাটসম্যান। কিন্তু অসুস্থতার জেরে ২০১৯ সালে সব ধরনের ক্রিকেট থেকে অবসর ঘোষণা করেন যুবি। ২০১৭ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিই যুবরাজের খেলা শেষ বড় টুর্নামেন্ট।
8/16সুরেশ রায়না: বিশ্বকাপের সময়ে সুরেশ রায়না জাতীয় দলের জার্সিতে নিয়মিত খেলার সুযোগ পেতেন না। কিন্তু বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে এবং সেমিফাইনালে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে তাঁর অসাধারণ ব্যাটিং ভারতকে জিততে সাহায্য করে। তার পর থেকেই একদিনের ক্রিকেট এবং টি-টোয়েন্টিতে রায়না জাতীয় দলের নিয়মিত সদস্য হয়ে ওঠেন। ২০১৭-১৮ থেকে পারফরম্যান্সের কারণে তিনি দল থেকে বাদ পড়তে শুরু করেন। এর পরই ধোনি যে দিন অবসর নেন, সে দিনই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানান রায়নাও। গত বছর পারিবারিক কারণে আইপিএলে অংশ না নিলেও এই বছর চেন্নাই সুপার কিংসে রয়েছেন তিনি।
9/16ইউসুফ পাঠান: ২০১১ বিশ্বকাপের পর ইউসুফ মাত্র ৬টি একদিনের ম্যাচ খেলেছেন। তবে আইপিএলে তিনি নিয়মিত প্রথম একাদশেই খেলতেন। কলকাতা নাইট রাইডার্স এবং সানরাইজার্স হায়দরাবাদের হয়ে তাঁর পারফরম্যান্স বেশ ভালই ছিল। গত মাসেই সব ধরনের ক্রিকেট থেকে অবসর ঘোষণা করেছেন পাঠান।
10/16হরভজন সিং: ২০১১ বিশ্বকাপে ভারতের লিড স্পিনার ছিলেন হরভজন সিং। বিশ্বকাপের পর অবশ্য খুব বেশি দিন খেলেননি ভাজ্জি। তার পর থেকে ৪ বছরে মাত্র ১০টি একদিনের ম্যাচ খেলেছেন হরভজন। ২০১৬-র শুরুতে অবশ্য তিনি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে সরে দাঁড়ান। এখনও অবশ্য আইপিএল খেলছেন। ৪০ বছর বয়সেও এ বার নাইট রাইডার্সের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য তিনি। বয়সকে তুড়ি মেরে নিজেকে প্রমাণ করতে মরিয়া ভাজ্জি।
11/16রবিচন্দ্রন অশ্বিন: ২০১১ বিশ্বকাপের আগেও দলের নিয়মিত সদস্য ছিলেন না অশ্বিন। কিন্তু বিশ্বকাপের পর থেকেই তাঁর ভাগ্যের চাকা ঘুরতে শুরু করে। হরভজনের পারফরম্যান্স খারাপ হতে শুরু করলে অশ্বিনই ভারতীয় দলের মূল স্পিনার হয়ে ওঠেন। ২০১৭ পর্যন্ত তিন ফর্ম্যাটের ক্রিকেটেই প্রধান স্পিনার ছিলেন তিনি। ২০১৭-র শেষ দিক থেকে একদিনের ক্রিকেট এবং টি-টোয়েন্টি দল থেকে বাদ পড়তে শুরু করেন। তবে টেস্ট ক্রিকেটে তাঁর জায়গা এখনও পাকা। যদিও লিমিটেড ওভারের ক্রিকেটেও তিনি যে এখনও সেরা, সেটা এ বার আইপিএলে প্রমাণ করতে মুখিয়ে রয়েছেন অশ্বিন। দিল্লি ক্যাপিটালসের হয়ে তাঁকে আইপিএলে খেলতে দেখা যাবে।
12/16জাহির খান: ২০১১ বিশ্বকাপের যুগ্ম ভাবে সর্বোচ্চ উইকেট নিয়েছিলেন জাহির খান। সেই সময়ে তিনি দুরন্ত ছন্দে ছিলেন। কিন্তু তার পর থেকে আর সে ভাবে খেলতে দেখা যায়নি জাহিরকে। বিশ্বকাপের পর মাত্র ৬টি একদিনের ম্যাচ খেলেছিলেন তিনি। ২০১৫ সালে ক্রিকেট থেকে অবসর নেন। এখন পুরোপুরি ধারাভাষ্য়ে মন দিয়েছেন জাহির। মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের ডিরেক্টর অফ ক্রিকেট অপারেশনের পদেও রয়েছেন তিনি।
13/16আশিস নেহারা: আঙুলের চোটের জন্য নেহারা শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে বিশ্বকাপের ফাইনাল মিস করেছিলেন। সেই আফসোস এখনও রয়ে গিয়েছে। তার আগে পর্যন্ত অবশ্য নিয়মিত বিশ্বকাপের সব ম্যাচেই খেলেছেন তিনি। ২০১৮ সালে নিজের ঘরের মাঠ দিল্লিতে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে শেষ টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলে তিনি অবসর ঘোষাণা করেন। তার পর আরসিবি-র সাপোর্ট স্টাফ হিসেবে যুক্ত হয়েছিলেন। এখন পুরোদম আন্তর্জাতিক এবং ঘরোয়া ক্রিকেটে ধারাভাষ্য দিয়ে থাকেন।
14/16পিযূষ চাওলা: ২০১১ বিশ্বকাপে আয়ারল্যান্ডের বিরুদ্ধে গ্রুপ স্টেজে শেষ বার একদিনের ক্রিকেটের কোনও ম্যাচ খেলেছিলেন। এর পর এই লেগস্পিনার জাতীয় দলের জার্সিতে কিছু টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছিলেন। কিন্তু ২০১২ সালের পর থেকে তাঁকে জাতীয় দলের জার্সিতে আর দেখা যায়নি। পিযূষ অবশ্য এখনও আইপিএল খেলে চলেছেন। এই বছর মুম্বই ইন্ডিয়ান্সে রয়েছেন তিনি।
15/16এস শ্রীসন্থ: বিশ্বকাপের পর থেকে জাতীয় দলের জার্সিতে আর কোনও ম্যাচ খেলেননি শ্রীসন্থ। এর পরেই স্পট ফিক্সিংয়ের ঘটনায় জড়িত থাকায় তাঁকে ক্রিকেট থেকে নির্বাসিত করা হয়। তবে সেই কলঙ্কিত অধ্যায় পার হয়ে এই বছরেই ঘরোয়া ক্রিকেটে ফিরেছেন শ্রীসন্থ। কেরলের হয়ে সৈয়দ মুস্তাক আলি ট্রফি এবং বিজয় হাজারে ট্রফিতে অংশ নিয়েছিলেন তিনি।
16/16মুনাফ প্যাটেল: ২০১১ বিশ্বকাপের পর মুনাফের ক্যারিয়ার কার্যত শেষ হয়ে যায়। এর পর মাত্র ৬টি ম্যাচ খেলেছিলেন তিনি। ২০১৬ সালে গুজরাট লায়ন্সের হাত ধরে আইপিএলে খেলার সুযোগ পেয়েছিলেন। কিন্তু ২০১৮ সালে তিনি সব ধরনের ক্রিকেট থেকেই অবসর নেন।
অন্য গ্যালারিগুলি
No Network
Server Issue
Internet Not Available
Wait for it…
Log in to our website to save your bookmarks. It'll just take a moment.