মহামারীর সময়ে উৎসব পালনের তাগিদ কি থাকে মানুষের মনে? অনেকে প্রশ্ন তুললেও বাঙালিমাত্রেই মনে রেখেছেন, মঙ্গলবার পয়লা বৈশাখে বাংলা নববর্ষের সূচনা হবে।
1/9প্রতিকূল পরিস্থিতির মাঝেও মনে উঁকি দিয়ে যায় পার্বন উদযাপনের সুপ্ত ইচ্ছা। তাই ঘরবন্দি থেকেও কী ভাবে উৎসবের আনন্দ আপনজনদের সঙ্গে ভাগ করে নেওয়া যায়, তাই নিয়ে শুরু হয়েছে নানান পরিকল্পনা।
2/9নববর্ষের শুভেচ্ছা জানাতে এই সাইবার যুগে প্রধান ভরসা মোবাইল ফোনে বার্তা পাঠানো। সোমবার থেকেই রকমারি শুভেচ্ছাবার্তা ভেসে আসতে শুরু করেছে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে। দুঃসময় ম্লান করতে পারেনি আত্মীয়-বন্ধুদের সঙ্গে নববর্ষের উদ্দীপনা ভাগ করে নেওয়ার উৎসাহ।
3/9পয়লা বৈশাখে বাঙালি ব্যবসায়ীদের সাবেক প্রথা হালখাতা উৎসব। প্রতি বছর বিভিন্ন মন্দির চত্বরে লাল শালুতে মোড়া হালখাতা, লক্ষ্মী-গণেশের মূর্তি নিয়ে ভিড় করতে দেখা যায় ব্যবসায়ীদের। করোনার প্রকোপে ব্যবসায় এই মুহূর্তে দারুণ ভাটার টান। এ ছাড়া লকডাউনে ঘরের বাইরে বেরোনোর উপরে বসেছে নিষেধাজ্ঞা। তাই অনলাইনে যজমানদের হালখাতার পুজো সারতে সাহায্য করার পরিকল্পনা করেছেন কলকাতা-সহ বাংলার বেশ কয়েক জন পূজারী। ঘরে বসেই হালখাতা খুলছেন ব্যাপারীরাও।
4/9হালখাতা উৎসব উপলক্ষে শহরের দোকানগুলিতে এ দিন ভিড় দেখা যায় আমন্ত্রিত গ্রাহকদের। বিশেষ করে ভিড় উপচে পড়ে গয়নার দোকানগুলিতে। অনেকে কেনাকাটাও করেন বিশেষ দিনটিতে। এবার সে পরম্পরা মানা কঠিন। ইচ্ছা থাকলেও অনলাইনে পর্যন্ত গয়নাগাঁটি কেনা এখন অসম্ভব। চরম সংকটকালে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য ও ওষুধ ছাড়া কিছুই ডেলিভারি পাওয়া প্রায় অসম্ভব। তাই সুদিনের স্মৃতি রোমন্থনই সম্বল।
5/9নতুন পোশাক ছাড়া কি নববর্ষ উদযাপন করা যায়? সাবেকিয়ানার খোলস ছেড়ে সাইবার যুগে পা রেখেও পয়লা বৈশাখে আনকোরা নতুন পোশাকে সেজে ওঠেন পরিবারের সদস্যরা। এবার সে উপায় না থাকলেও আলমারিতে তুলে রাখা বিশেষ পোশাক পরে আয়নায় নিজেকে জরিপ করে নেওয়ায় তো বাধা নেই! আর সুসজ্জিত হয়ে সেল্ফি তুলে তা অনলাইন আড্ডায় পোস্ট করতে কে না ভালোবাসেন! এ ভাবেও তো উৎসব পালন করা যায়!
6/9নববর্ষে সপরিবারে রেস্তোরাঁয় বসে হরেক প্রিয় পদ চাখতে ভালোবাসেন না, এমন বাঙালি বিরল। মোগলাই, চিনে, কন্টিনেন্টাল, লেবানিজ তো বছরভর অনেক হল, এ দিন বরং বনেদি বাঙালি ভোজই পছন্দ করেন খাঁটি বঙ্গসন্তানরা। করোনার চোখ রাঙানিতে সে পর্ব বন্ধ থাকলেও নিজের হেঁশেলেই না হয় এবার পোলাও, কালিয়া, পাতুরি, দোলমা, মালাইকারি, ছানার পায়েস আর মিহিদানা রান্নায় হাত পাকানো যাক।
7/9হতেই পারে যে সে সব রাঁধতে চান, তার সঠিক উপকরণ মজুত নেই। তাতে কি, ভাঁড়ারে যা যা আছে তাই দিয়েই না হয় চেষ্টা চলুক। দেখবেন, প্রথা ভেঙে নিত্যনতুন রেসিপি আবিষ্কার করছেন নিজেই!
8/9খাওয়াদাওয়ার পাট চুকলে প্রিয়জনদের সঙ্গে আড্ডা দিতে লগ ইন করুন জুম অ্যাপ অথবা স্কাইপের নতুন সোশ্যালাইজিং প্ল্যাটফর্মে। এই সুযোগে খোঁজ নিতে পারবেন দেশ-বিদেশে ছড়িয়ে থাকা অসংখ্য আত্মী ও বন্ধুদের সঙ্গে। বাড়ির সবাইকে নিয়ে বসে পড়ুন ডেস্কটপ, ল্যাপটপ, ট্যাবলেট বা হাতের মোবাইল সম্বল করে। দেখবেন ঝড়ের মতো আড্ডায়-গানে কেটে যাবে সময়।
9/9অনলাইন আড্ডা যদি একঘেয়ে হয়ে ওঠে, তা হলেও পরোয়া নেই। হটস্টার, নেটফ্লিক্স-এর মতো অজস্র অ্যাপ-এর সাহায্যে সময় কাটান প্রিয় সিনেমা, নাটক বা বিচিত্রানুষ্ঠানের আবহে। দেখবেন ঘরে বসে কী আনন্দেই না কাটবে নববর্ষের আগমন দিবস- তা সে করোনা যতই দাঁতমুখ খিঁচোক না কেন!