সাম্প্রতিক বেশ কিছু সময় ধরেই তুঙ্গে আলোচনা। শ্রম আইনে পরিবর্তন আনার প্রক্রিয়াধীন কেন্দ্র। এই সংস্কারের পেছনে রয়েছে একাধিক নায্য কারণ। সামাজিক ন্যায্যতা, সামাজিক নিরাপত্তা, এবং ব্যবসার জন্য সঠিক পরিবেশ - সংস্কারের মাধ্যমে সমস্ত দিকেই নজর রাখতে চাইছে কেন্দ্র।
নয়া সংস্কারের মাধ্যমে মজুরি, সামাজিক নিরাপত্তা, পেশাগত নিরাপত্তা, স্বাস্থ্য ও কাজের অবস্থা এবং শিল্প ক্ষেত্রকে কভার করা হবে। মোট চারটি শ্রম কোড প্রকাশিত হবে বলে জানা গিয়েছে।
নয়া শ্রম নীতিগুলি আন্তর্জাতিক শ্রম সংগঠনের (ILO) মাপকাঠির উপর দেওয়া পরামর্শের ভিত্তিতে রচিত।
সংসদ সম্প্রতি 'নয়া শ্রম আইন' পাশ করেছে। এটি কর্মীদের কাজের সময়, সবেতন ছুটির দিন এবং প্রতিটি সেক্টরের আরও বেশ কিছু বিষয়কে প্রভাবিত করবে। মোট ২৯টি আইনে সংস্কার করা হয়েছে।
৪টি নতুন শ্রম নীতি আগামী ১ জুলাই ২০২২ থেকে কার্যকর হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
সংগঠিত এবং অসংগঠিত উভয় ক্ষেত্রেই কাজ আরও সুষ্ঠভাবে পরিচালনা করতে এবং কর্ম-ব্যক্তিগত জীবনের ভারসাম্য বজায় রাখতে এই নীতি সাজানো হয়েছে। কাজের সময় এবং ছুটির ক্ষেত্রে নতুন শ্রম কোডগুলি আমাদের কর্মজীবনকে প্রভাবিত করতে পারে। কীভাবে?
কাজের সময়
বর্তমান শ্রম নীতিতে অফিস এবং সংস্থাগুলি দিনে ৭-৮ ঘণ্টার বেশি কর্মীদের কাজ করাতে পারে না। তবে, নয়া নীতিতে সেই সময়েরও বেশি কাজ করানোর অনুমতি পাবে সংস্থাগুলি। নিয়মিত কাজের সময় এখন দিনে ১২ ঘণ্টা পর্যন্ত হতে পারে।
যদি কোন সংস্থা এটি করে, সেক্ষেত্রে সপ্তাহে ৪ দিন কাজ করলেই হয়ে যাবে। বাকি ৩ দিন বাধ্যতামূলক উইকলি অফ মিলবে। সব মিলিয়ে, সপ্তাহের মোট কাজের সময় অপরিবর্তিতই থাকবে।
ছুটি
পূর্বে আইন অনুযায়ী ছুটি চাওয়ার জন্য বছরে ন্যূনতম ২৪০ কর্মদিবস কাজ করতে হত। এখন তা বছরে ১৮০ কর্মদিবসে কমিয়ে আনা হয়েছে। এর ফলে কর্মীরা এক বছরে ন্যূনতম ১৮০ দিন কাজে করলেই ছুটি চাইতে এবং নিতে পারবেন। তবে প্রতি ২০ কর্মদিবসে ১টি ছুটির নিয়ম বহাল রয়েছে।
ভারতীয় চাকরিজীবীদের কাছে সপ্তাহে ৪ দিন অফিস কল্পনাতীত।
স্পেন, জাপান, নিউজিল্যান্ড, আয়ারল্যান্ড, স্কটল্যান্ড এবং আইসল্যান্ডের মতো বেশ কয়েকটি দেশে ইতিমধ্যেই পরীক্ষামূলক ভিত্তিতে সপ্তাহে চার দিন কাজ বাস্তবায়ন করা হয়েছে।
ভারতে অসংগঠিত, বেসরকারি ক্ষেত্রে এই নিয়ম কতটা প্রয়োগ করা যেতে পারে, তা নিয়ে সন্দেহের অবকাশ আছে বৈকি।