ভারতে 'পাত্র চাই'তে সবচেয়ে বড় শর্ত কী? চাকরি। আর সেই চাকরি বলতে সরকারি চাকরিই বোঝেন পাত্রীর বাবারা। আইটি-র যুগেও বেসরকারি চাকরি করা পাত্র হলে যেন মন খুঁতখুঁত করে অনেকেরই। সবারই দাবি, পাত্রের চাকরি যেমনই হোক না কেন, সরকারি হওয়া চাই। কারণ সরকারিতেই তো স্থায়ীত্ব!
তবে, সময়ের সঙ্গে সেই ভাবনা বদলাচ্ছে। আর তাতে এবার অনুঘটকের কাজ করেছে শিক্ষক নিয়োগ কেলেঙ্কারি। পরিস্থিতি এমনই যে, সরকারি স্কুল শিক্ষক পাত্র দেখলেই প্রেশার বেড়ে যেতে পারে হবু শ্বশুরদের।
আজব বিজ্ঞাপন
পাত্র চাই। তবে 'স্কুল শিক্ষক ব্যাতিত,' স্পষ্ট উল্লেখিত। রবিবারের খবরের কাগজের পাত্র চাই বিভাগে এমনই এক বিজ্ঞাপন প্রকাশিত হয়েছে। আর তার ছবি ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। পাত্রী নিজেও সরকারি চাকরি
সাম্প্রতিক শিক্ষক নিয়োগ কেলেঙ্কারির প্রেক্ষিতেই যে এই প্রতিক্রিয়া, তা বলাই বাহুল্য। দূর্নীতির প্রমাণ মিলতেই চাকরি 'নট' হয়ে গিয়েছে ২৬৯ জন স্কুল শিক্ষকের। কর্পুরের মতো উবে গিয়েছে সাতরাজার ধন মানিক সরকারি চাকরি। আর তাতেই চাপে হবু শ্বশুরদের একাংশ।
সরকারি স্কুল শিক্ষক মানেই ওয়ার্ক-লাইফ-ব্যালেন্স, অঢেল ছুটি, মোটা বেতন, স্থায়ী চাকরি। তাছাড়া সমাজে একটা সম্মানের ব্যাপারও আছে। ফলে সম্মন্ধ বিয়ের মার্কেটে 'গ্রেড এ'তে পড়েন তাঁরা। তবে, আপাতত ছবিটা যে বদলে গিয়েছে, তা বলাই যায়।
শুধু পাত্র হিসাবেই যে ব্যাপারটা এমন, তা কিন্তু নয়। নির্দিষ্ট কয়েকজনের দুর্নীতির জেরে সন্দেহের শিকার হচ্ছেন গোটা শিক্ষককুল। সম্প্রতি আলিপুরদুয়ারে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক শিক্ষক ব্যাঙ্কে ঋণের আবেদন করেন। আর সেই প্রক্রিয়ায় টেট পাশের নথি চেয়ে বসে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ! এতগুলো টাকার ব্যাপার, বলা তো যায় না...
এ বিষয়ে প্রাক্তন শিক্ষক মহম্মদ সাহিদুল ইসলাম বলেন, 'এ যেন উলাট-পুরাণ। এক সময়ে মেয়ের জন্য শিক্ষক পাত্র চাইত পরিবার। তার জন্য অনেকেই মোটা অঙ্কের পণও দিতে পিছপা হতেন না।' তবে এখন শিক্ষক পাত্র দেখলে বরং ঘাবড়ে যাচ্ছেন পাত্রীর পরিবার।
বিষয়টি মোটেও ভালো চোখে দেখছেন না তৃণমূলের প্রাথমিক শিক্ষক সংগঠনের জেলা সম্পাদক গৌরাঙ্গ চৌহান। তাঁর কথায়, 'এই ধরনের বিজ্ঞাপন দিয়ে মেয়ের পরিবার শিক্ষক সমাজকে অপমান করেছেন।'