শেষবার তার দেখা মিলেছিল ১৯৬০-এর দশকে। পূর্ব কলকাতার জলাভূমিতে দূর থেকে পেলিকানকে উড়ে যেতে দেখা গিয়েছিল। তারপর থেকে সেভাবে বাংলায় দেখা মেলেনি স্পট-বিল্ড পেলিকানের। ২০২১-এ, বহু বছর পর ফের দেখা মিলল তার। শুধু দেখাই নয়, পক্ষীবিশারদের ক্যামেরাবন্দীও হলেন তিনি।
সৌজন্যে পক্ষীপ্রেমী সবুজ ধাড়া এবং চিরঞ্জিত গোলুই। খানাকুলের অদূরে এক গ্রামের জলাশয়ে অভ্যাসমতো পাখির ছবি তুলছিলেন তাঁরা। এমন সময়েই তাঁদের চোখে পড়ে জলাশয়ের পাড়ে গাছে বসে থাকা বড়সড় পাখিটি। সাধারণত যাঁরা পাখির ছবি তোলেন, তাঁরা কোনও পাখির নড়াচড়া, ডাক, এমনকি দূর থেকে শিল্যুট দেখেও তাকে চিনে ফেলেন। কিন্তু এই পাখিটা নিয়েই সন্দেহ হয় তাঁদের। তবে সৌভাগ্যবশত পাখিটি ক্যামেরাবন্দী করেন তাঁরা।
এরপরেই অন্যান্য পক্ষীপ্রেমী বন্ধুদের কাছে ছবিটি দেখিয়ে খোঁজ চালাতে শুরু করেন। কী পাখি এটি? অপর পক্ষী বিশারদ সঙ্গী শোভন মাইতিকে নিয়ে খোঁজ চলতে থাকে। এরপরেই উঠে আসে অবাক করা তথ্য। এর নাম স্পট-বিলড পেলিকান। শেষ বার ১৯৬৪ সালে এর দেখা পেয়েছিলেন জুলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার সমীক্ষকরা। তবে দূর থেকে একটা মাত্র পাখিকেই উড়তে দেখেছিলেন তাঁরা। সেটিই এই পাখি কিনা, সে বিষয়ে তাঁরা নিশ্চিত ছিলেন না। কিন্তু এখন ছবি থাকায় সম্পূর্ণ নিশ্চিত হওয়া গেল। নন-ব্রিডিং পালকের সঙ্গে দেখা মিলেছে তার।
ভারতে মূলত তিনটি প্রজাতির পেলিকান দেখা যায়। গ্রেট হোয়াইট (রোজি), ডালমেশিয়ান এবং স্পট-বিল্ড। এই স্পট বিলড পশ্চিবঙ্গে বিরল। এগুলি মূলত শ্রীলঙ্কা দক্ষিণ ভারতের বিভিন্ন রাজ্য, ওড়িশার চিলিকা এবং অসমের কাজিরাঙায় দেখা যায়।
এর আগে এশিয়াটিক সোসাইটির পুরনো তথ্য অনুযায়ী ১৮৪২ সালে কলকাতার এক বাজারে বিক্রি হতে এসেছিল একটি স্পট-বিলড পেলিকান। সেই সময়ে সেটি সংগ্রহ করেছিলেন ব্রিটিশ পক্ষীবিদ এডওয়ার্ড ব্লাইথস।