২০২২ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ থেকে ভারত ছিটকে যাওয়ার পর থেকে নানা কাঁটাছেঁড়া চলছে। চলছে তীব্র সমালোচনা। তার মধ্যে আবার ভারতের পাঁচটি বড় ভুল নিয়ে চর্চা এখন তুঙ্গে। জেনে নিন সেগুলি কী!
1/5টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ভারতের এক নম্বর রিস্ট স্পিনার যুজবেন্দ্র চাহালের জায়গা হয়নি দলে- যুজি ১৯ ম্যাচে ২১ উইকেট নিয়ে ফেলেছেন। এবং তবুও তাঁকে দলে রাখা হয়নি। রবিচন্দ্রন অশ্বিনকেই খেলিয়ে গিয়েছে ভারতীয় টিম ম্যানেজমেন্ট। গত বছর ভারত যখন চাহালকে তাদের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দল থেকে বাদ দিয়েছিল, তখন অনেকেই মনে করেছিলেন, ভারতীয় টিম ম্যানেজমেন্ট এই বছর এর থেকে শিক্ষা নেবে, কিন্তু ব্যাপারটা তেমন ছিল না। এমন একটি টুর্নামেন্টে যেখানে পাকিস্তানের শাদাব খান এবং ইংল্যান্ডের আদিল রশিদ বারবার তাদের রিস্ট-স্পিন দিয়ে ব্যাটারদের সমস্যায় ফেলেছিলেন, সেখানে চাহালকে একটি ম্যাচেও খেলানো হয়নি। তবে এটা ঠিক যে, যুজির চেয়ে অশ্বিনের ব্যাটিং নির্ভরতা বেশি। তিনি পাকিস্তানের বিরুদ্ধে স্নায়ু ঠাণ্ডা রেখে শেষ বলে যে ভাবে ম্যাচ জিতিয়েছিলেন, সেটা হতো যুজি পারতেন নায বাংলাদেশের বিরুদ্ধে একটি ছক্কা এবং একটি চার হাঁকিয়েছিলেন। সে ক্ষেত্রে স্পিনার অশ্বিন যদি অলরাউন্ডার হিসেবে প্লেয়িং ইলেভেনে থাকেন, তা হলে ব্যাটিং অর্ডারে পরিবর্তন আনা উচিত।
2/5পাওয়ার প্লে-তে ব্যর্থ ভারত- ভারতের নতুন ব্যাটিং কৌশল কোথায় হারিয়ে গেল? গত বছরের বিশ্বকাপে পাকিস্তান এবং নিউজিল্যান্ডের কাছে ভারতের পরাজয়ের পর, একটি শব্দ টিম ইন্ডিয়ার ব্যাটিং শৈলীর সঙ্গে যেন সমার্থক হয়ে উঠেছিল, সেটা হল 'ভীরু'। নিশ্চিত ভাবেই, রোহিত শর্মা দলের দায়িত্ব নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এটি পরিবর্তিত হয়েছিল। এবং যে কোনও পরিস্থিতিতে আক্রমণাত্মক খেলার কৌশল নিয়েছিল টিম ইন্ডিয়া। তবে বিশ্বকাপে বহুল আলোচিত নতুন ব্যাটিং কৌশল এবং রোহিতের ফর্ম উধাও হয়ে যায়। পাওয়ারপ্লেতে ভারত যথেষ্ট লড়াই করেছে। কেএল রাহুলও সে ভাবে ছন্দে ছিলেন না। ওপেনিং জুটি ব্যর্থ হলে তার প্রভাব দলে পড়বেই। জিম্বাবোয়ের বিরুদ্ধে ভারতীয় ওপেনিং জুটি সর্বোচ্চ রানের পার্টনারশিপ করেছিল- ৪৬/১। বিশ্বকাপে ভারতের নিজেদের প্রথম ম্যাচে প্রথম ৬ ওভারে স্কোর ছিল ৩১/৩ (পাকিস্তানের বিরুদ্ধে)। নেদারল্যান্ডসের বিরুদ্ধে ৩২/১, দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ৩৩/২ এবং বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ৩৭/১- প্রথম উইকেটে ভারতের স্কোর ছিল। আর সেমিফাইনালে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ওপেনিং জুটিতে ভারতের স্কোর ছিল ৩৮/১। মোদ্দা কথা ওপেনিং জুটি ব্যর্থ হওয়ার দায় এড়াতে পারবে না ভারত। সেই সঙ্গে পাওয়ার প্লে-তে ভারতের খারাপ ফলও কিন্তু দায়ী থাকবে।
3/5দীনেশ কার্তিক বনাম ঋষভ পন্ত- টি-টোয়েন্টিতে বিশ্বকাপে ৩৭ বছরের দীনেশ কার্তিককে সুযোগ দেওয়াটা বেশ ঝুঁকিপূর্ণ সিদ্ধান্ত ছিল। কার্তিক কিন্তু নিজেকে প্রমাণ করতে ব্যর্থ হয়েছেন। ২০০৭ সালে ভারত যখন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জিতেছিল, তখন এটি একটি তরুণ ব্রিগেড ছিল। ৩০-এর বেশিবয়সের ক্রিকেটারদের সুযোগ দেওয়া হয়নি। যাই হোক পন্ত বনাম কার্তিককে নিয়ে দড়ি টানাটানিও ভারতের বিপক্ষে গিয়েছে।
4/5কেএল রাহুলের ব্যর্থতা- কেএল রাহুল এই বছর এশিয়া কাপে তাঁর প্রথম টি-টোয়েন্টি খেলেছিলেন অগস্টে। আট মাস পর। ১৯ নভেম্বর, ২০২১ থেকে ২৮ অগস্ট, ২০২২-এর মধ্যে রাহুল ভারতের হয়ে একটিও টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেননি। যে কারণে এশিয়া কাপে তিনি চূড়ান্ত ব্যর্থ হন। চোট ফিরে আসার পর থেকে রাহুল চারটি হাফ সেঞ্চুরি করেছেন ঠিকই। তবে তাঁর স্ট্রাইকরেট অত্যন্ত খারাপ। বিশ্বকাপে তিনি আরও দু'টি অর্ধশতরান করেন – বাংলাদেশ এবং জিম্বাবোয়ের বিপক্ষে। কিন্তু প্রতি বারই বড় ম্যাচের ক্ষেত্রে আসল সময়ে রাহুল ব্যর্থ হয়ে ভারতকে ডুবিয়েছেন। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ৪, দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ৯ এবং ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ৫ রানের স্কোর করেন। রাহুলের উপর যে ভরসা রাখা হয়েছিল, তার সুবিচার তিনি করতে পারেনি। রাহুল একেবারেই তাঁর পুরনো বিধ্বংসী মেজাজে নেই। অন্তত টি-টোয়েন্টিতে।
5/5যোগ্য পেসারের অভাব- ভুবনেশ্বর কুমার এবং আর্শদীপ ভারতের হয়ে খারাপ খেলেননি। কিন্তু অস্ট্রেলিয়ার পিচে ভারতের এমন একজন প্রকৃত পেসারের অভাব ছিল. যিনি নিয়মিত ১৪৫-এর উপর গতিতে বল করতে পারেনষ জসপ্রীত বুমরাহ যে মুহুর্তে চোট পেয়েছিলেন, সতর্কতার ঘণ্টা বেজে উঠেছিল। এবং মহম্মদ শামিকে দলে নেওয়া হয়, যিনি গত বছরের নভেম্বরের পর থেকে একটিও টি-টোয়েন্টি খেলেননি। স্বাভাবিক ভাবে শামিও মানিয়ে নেওয়ার সময় সে ভাবে পাননি। উমরান মালিক নিউজিল্যান্ড সফরে সুযোগ পেয়েছেন। এখন তাঁকে প্রস্তুত করা দরকার। প্রতিটি সিরিজের জন্য দলের সঙ্গে রাখতে হবে। পাকিস্তানের হ্যারিস রউফের মতো ভারতের ২২ বছরর স্পিড সেনসেশনকে ভারতীয় ক্রিকেটের ভবিষ্যত পেস বিকল্প হিসেবে তৈরি করার যাবতীয় ব্যবস্থা নেওয়া উচিত বলে মনে করছেন অনেকেই।