টোকিও অলিম্পিক্সে পদকজয়ীদের নিয়ে যখন সারা দেশে কার্যত উত্সবের আমেজ, তখন নিতান্ত অন্ধকারে নরেশ তুমডা। অথচ একটা সময় শত প্রতিবন্ধকতা সঙ্গে নিয়েই দেশকে গৌরব এনে দিয়েছিলেন নরেশ। চোখের আলো ক্ষীণ হলেও মাঠের পারফর্ম্যান্স দিয়ে উজ্জ্বল করেছিলেন দেশের মুখ।
২০১৮ দৃষ্টিহীনদের বিশ্বকাপে ভারতীয় ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন নরেশ। দুবাইয়ের ফাইনাল ম্যাচে পাকিস্তানকে হারিয়ে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয় ভারত। বিশ্বকাপজয়ী ভারতীয় দলের সেই সদস্যই এখন রুজিরুটির টানে দিনমজুরের কাজ করছেন গুজরাতের নবসারিতে।
পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী হওয়ায় বৃদ্ধ বাবা-মা'র দেখাশোনা করার দায়িত্ব তাঁকেই পালন করতে হয়। তবে করোনা মহামারির সময়ে উপার্জনের রাস্তা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় জীবনযাপন কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। প্রথমবারের লকডাউনে সব্জি বিক্রি করে কোনও রকমে দিন চালাতেন নরেশ। তবে তাতে খুব বেশি আয় না হওয়ায় এখন দিনমজুরের কাজে ঢুকেছেন তিনি।
নরেশ নিজেই জানিয়েছেন, দিনমজুরের কাজ করে প্রতিদিন তাঁর ২৫০ টাকা রোজগার হয়, যা দিয়ে কোনও রকমে সংসার চলে। অবাক করা বিষয় হল, দেশকে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন করার পরে শীর্ষস্থানীয় রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের কাছ থেকে অভিনন্দন বার্তা পেয়েছিলেন। উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে পেয়েছিলেন বহু আশ্বাস। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সবই মিলিয়ে গিয়েছে বাতাসে। এমনকি গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রীর কাছে তিনবার চাকরির আবেদন করেও কোনও উত্তর পাননি।
আপাতত জীবন সংগ্রাম জারি রেখেছেন মাথার ঘাম পায়ে ফেলে। তবে আশায় রয়েছেন এখনও। সরকারের কাছে তাঁর অনুরোধ, ‘যে কোনও একটা কাজ দিন। যাতে পারিবারের দেখাশোনা করতে পারি।’